রোগ আছে, ওষুধ নেই
এই হলো ‘নেই, নেই’র জগৎ। আগে ছিল ওষুধ তবে চিকিৎসকের দেখা মেলা ভার ছিল। বলছি, আমাদের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’র মেডিক্যাল সেন্টারের কথা। এখন এখানে ডাক্তার নিয়মিত বসেন।
তবে গেল ছয় মাস ধরে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না। আছে জ্বর, কাশিসহ নানা ধরণের রোগ, ব্যাধি। খাবারের মানের অভাব ও পেটের নানা পীড়া।
এর মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রীকে রাতের বেলা জোর করে তুলে নিয়ে সন্ত্রাসীদের গণধর্ষণ ও পরদিন ভোরেই আন্দোলনে নামার পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ. এম. মাহবুবসহ গণ্যমান্যদের ওপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল। এখনো ধিকিধিকি করে জ্বলছে সেই ব্যাথার ক্ষোভ। আমরা আর সইতে পারছি না।
তার মধ্যে ওষুধ নেই এর বিশ্বে যোগ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাম্বুলেন্সের অনুপস্থিতি। ছাত্র, ছাত্রীদের সঙ্গে এই প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে ও নিজের অভিজ্ঞতায় আমি ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমের প্রতিনিধি সফিকুল আহসান ইমন জেনেছি, আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র বা ছাত্রী অসুস্থ হলে পরিবহন বিভাগের জরুরি নম্বরে ফোন করলেও সমাধান পাওয়া যায় না।
সময় মতো অ্যাম্বুলেন্স হলের সামনে আসে না বলে অভিযোগ আছে। অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেলেও দৈবাৎ, তাতে ড্রাইভার থাকেন না। ফলে গাড়ি চলে না।
কদিন আগে ফলে সঙ্গে, সঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আমাদের শেখ হাসিনা এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউট বা শেখ হাসিনা কৃষি অনুষদের রূপন ইসলাম শুভ, ‘আমাদের একজন নেপালের ছাত্রীর কিডনিতে পাথর জমেছে। হটাৎ সেদিন রাত প্রায় ১১টায় পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। অনেক কষ্টে নিয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলাম। চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত খুলনায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। তখন খুব সমস্যা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পাইনি।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমরা টানা দুটি ঘন্টা কয়েকজনে মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ বিভাগের জরুরি মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পেয়েছি। দায়িত্বরত স্যার ছাড়াও আরো কয়েকজন বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও অ্যাম্বুলেন্সটি আনতে পারিনি। আমাদের অ্যাম্বুলেন্সের দুই চালকের একজন বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। অন্যজন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোথাও যেতে রাজি হননি। ফলে দুর্ভোগ ও কষ্টের সীমা ছিল না। এই দুঃখ কীভাবে ভুলি?’
অ্যাম্বুলেন্সের জরুরি সেবা দিতে না পারা, চালকের অসহযোগিতা ও অস্বীকৃতি এবং প্রয়োজনে চলাচলের অভাব নিয়ে পরিবহন শাখার প্রশাসক তাপস বালার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি উত্তর দিয়েছেন, ‘আমাদের অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালকের সংকট আছে। ছাত্র, ছাত্রীরা তো জানে না, আমাদের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অ্যাম্বুলেন্সের নিদিষ্ট চালক নেই। ফলে অন্যদের দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালাতে হয়। তারা জরুরি সেবা পরিবহন করতে পারে না। রাজি থাকে না। বিষয়টি আমি দেখব।’
ওষুধের অভাব নিয়ে আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ ক্রয় কমিটির সভাপতি ডা. অভিষেক বিশ্বাসকে আমি নিজে কয়েকবার মোবাইলে ফোন করেছি। তবে তাকে পাইনি।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার অধ্যাপক মুরাদ হোসেন স্যারকে বললে তিনি উত্তর করেছেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওষুধ ক্রয় কমিটি’ গড়ে তোলা হয়েছে। তারা এই বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।”
ওএস।