২০তম দিনের অনুষ্ঠানমালা
জন্মশতবার্ষিকীতে নীলিমা ইব্রাহিমকে স্মরণ
অমর একুশে বইমেলার ২০তম দিন রবিবার (৬ মার্চ) বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘জন্মশতবার্ষিকী শ্রদ্ধাঞ্জলি : নীলিমা ইব্রাহিম’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিশাত জাহান রানা। আলোচনা করেন আজিজুর রহমান আজিজ এবং আহমেদ মাওলা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মনিরুজ্জামান।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘একাত্তর পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধের তথ্যভিত্তিক যে ন্যারেটিভসমূহ তৈরি হয়েছে, তারমধ্যে সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী রচনাগুলির অন্যতম আমি বীরাঙ্গনা বলছি। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যভিত্তিক এই অসামান্য গ্রন্থটি রচনার ভেতর দিয়েই নীলিমা ইব্রাহিম ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম খোদাই করেছেন নিশ্চিতভাবেই। তবে এই গ্রন্থ রচনার বহু পূর্ব থেকেই নীলিমা ইব্রাহিম তাঁর জীবনকে উৎসর্গ করেছেন বৃহত্তর মানুষের জীবনের মুক্তির সংগ্রামে। আজ থেকে একশত বছর আগে জন্মগ্রহণকারী এই অসামান্য নারী একটি সুস্থ, সমৃদ্ধ, সংবেদনশীল এবং মানবিক সমাজ বিনির্মাণে একটার পর একটা মাইলফলক অর্জন করেছেন তাঁর দীর্ঘ পথচলায়।’
আলোচকরা বলেন, বাঙালি নারী-সমাজের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন নীলিমা ইব্রাহিম। নারীমুক্তি ও মানবপ্রগতির ব্যাপারে তিনি সারাজীবন সক্রিয় থেকেছেন। বিচিত্রমুখী প্রতিভা ও প্রবল উদ্যমের অধিকারী নীলিমা ইব্রাহিম শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতি সকলক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, সমাজকর্মী এবং সাহিত্যিক। বাংলা একাডেমির প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র নারী মহাপরিচালক হিসেবেও তিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসের সম্মানের স্থান করে নিয়েছেন।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অধ্যাপক নীলিমা ইব্রাহিম ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং জ্ঞানপিপাসু। তাঁর মাতৃবৎসলতার কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। সামাজিক সচেতনতা ও ও নারীমুক্তির সার্থক প্রকাশ ঘটেছিল তাঁর মধ্যে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বর্বরতার শিকার বীরাঙ্গনাদের তথ্যভিত্তিক গ্রন্থ আমি বীরাঙ্গনা বলছি তাঁকে ইতিহাসে অমর করে রাখবে।’
লেখক বলছি
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন সালমা বাণী এবং সাইমন জাকারিয়া।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মূল মঞ্চে আজকের অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি জাহিদ মুস্তাফা এবং নাসরীন নঈম। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী শাকিলা মতিন মৃদুলা এবং মো. মাহমুদুল হাকিম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সংগীত ভবন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, মুর্শিদ আনোয়ার, আঞ্জুমান আরা শিমুল, ফারহানা শিরিন, চম্পা বণিক, অনন্যা আচার্য্য, মো. রেজওয়ানুল হক, মেহেরুন আশরাফ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), দীপঙ্কর রায় (অক্টোপ্যাড), শাহরাজ চৌধুরী (গীটার) এবং ইফতেখার হোসেন সোহেল (কী-বোর্ড)।
সোমবারের অনুষ্ঠান
সোমাবার (৭ মার্চ) অমর একুশে বইমেলার ২১তম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ স্মরণে অনুষ্ঠিত হবে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ : বহুমাত্রিক পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মো. নজরুল ইসলাম খান এবং মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এপি/