জাকির তালুকদারকে ‘ধন্যবাদ’ দিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক
কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) মুহম্মদ নূরুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত নাম কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার। সম্প্রতি বাংলা একাডেমি পুরস্কার ফেরত দিয়ে আলোচনায় এসেছেন এই কথাসাহিত্যিক। ২০১৪ সালে তিনি কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছিলেন।
তবে গত রবিবার তিনি ওই পুরস্কারের অর্থ ও সম্মাননা স্মারক কুরিয়ারের মাধ্যমে বাংলা একাডেমিতে ফেরত পাঠিয়েছেন। এ জন্য জাকির তালুকদারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) মুহম্মদ নূরুল হুদা। অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ধন্যবাদ জানান তিনি।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, আমার বন্ধু জাকির তালুকদারকে ধন্যবাদ জানাই। তার উৎসাহ স্বাগত জানাই। বাংলা একাডেমি সম্পর্কে তার কাছে যেটা অসঙ্গতি মনে হয়েছে, তিনি সেটা উল্লেখ করে ১০ বছর পর পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেই চেক আমি পেয়েছি। পুরস্কার দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি আমাদের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী পরিষদ চূড়ান্ত করে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে তারা।
তিনি আরও বলেন, ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ছিল। ২০০০ সাল থেকে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর ব্যাহত হয় এ প্রক্রিয়া। একটি ঠিকানা থেকে অনেক বেশি লোককে যুক্ত করা হয়। তখন নামে-বেনামে অনেককে যুক্ত করা হয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার কাজ করছি। এজন্য নির্বাচন পদ্ধতি চালু করবো। বিধিমালা তৈরি করবো।
বইয়ের মান নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, জাকির তালুকদার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মান নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলবো না। আগের থেকে বাংলাসাহিত্য চর্চা অনেক গুণ বেড়েছে। কবিদের সংখ্যা যেমন বেড়ে গেছে, লেখকদের সংখ্যাও বেড়েছে। সংখ্যা বেড়ে গেছে, তবে মান নিয়ে সংকট আছে। কিছু নতুন কথাসাহিত্যিক আমরা দেখতে পাচ্ছি। বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কারের সীমাবদ্ধতা আছে। তা সত্ত্বেও কিছু ভালো ভালো পুরস্কার থাকায় আমরা সহজেই তাদের শনাক্ত করতে পারছি। কাজেই মান নিয়ে কথা বলার কারণ নেই। বেশি লেখক বেরিয়ে এলে এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। কাজেই এটা নিয়ে আমি শঙ্কিত নই। জাকির তালুকদার যা করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আমি সম্মান করি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো আমরা। সেজন্য মহাপরিচালক হিসেবে আগেই এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারছি না।
এর আগে, পুরস্কার ফেরত দেওয়ার কারণ হিসেবে জাকির তালুকদার বলেন, সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক, আমলাতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া বাংলা একাডেমির পরিচালনা পদ্ধতি সচেতন মানুষের আস্থা হারিয়েছে। কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন হয় না প্রায় আড়াই দশক যাবৎ। এ অবস্থায় পুরস্কারটি বহন করা আমার কাছে তাৎপর্যহীন মনে হচ্ছে। আমি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে, কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে পুরস্কার ফেরত দিচ্ছি।