‘আপন আলোয় দেখা ভুবন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
দৃষ্টিহীন লেখক মনসুর আহমেদ চৌধুরীর লেখা ‘আপন আলোয় দেখা ভুবন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে লেখকের জন্মদিনকে কেন্দ্র করে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বইটির প্রকাশনা সংস্থা সময় প্রকাশন।
দৃষ্টিশক্তিহীন, উজ্জ্বল শিক্ষাজীবন এবং সামাজিক জীবনে বহুমাত্রিক সাফল্য অর্জনকারী লেখক মনসুর আহমেদ চৌধুরী। তার এই দীর্ঘ পথচলা খুব সহজ ছিল না। বহু বাধাবিপত্তি পেরিয়েই পেয়েছেন সফলতার চাবি। তার জীবনের সালতামামি নিজের লেখা ‘আপন আলোয় দেখা ভুবন’ বইটি।
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গ্রন্থটির উপর আলোচনা এবং লেখকের জীবন আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করেন খন্দকার জহুরুল আলম, বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী নাগরিকের আর্থ-সামাজিক আন্দোলনে লেখকের সহযোদ্ধা, সহপাঠী অধ্যাপক জারিনা রহমান খান, লেখকের সতীর্থ সাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শমশের মবিন চৌধুরী বীর বিক্রম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন সময় প্রকাশনের প্রকাশক ও স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক কামাল হোসেনের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এ সময় লেখক মনসুর আহমেদ চৌধুরীকে জন্মদিনে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মনসুর আহমেদ চৌধুরী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী একজন মানুষ, যিনি নিজের মনের আলোয় দেখেছেন এই পৃথিবী, পথ দেখিয়েছেন সবাইকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শেষ করে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে। প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আদায়ের দাবির মশাল হাতে ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তার এই পথচলা ছিল খুব কঠিন।
জীবনের প্রতিটি স্তরে পাড়ি দিয়েছেন পাহাড়সম বাধা, তবু থেমে থাকেননি। আপন শক্তিতে জয় করেছেন অনেক কিছু। তার এই মনের আলোয় দেখা সারা জীবনের সব স্মৃতিকথা লিপিবদ্ধ করেছেন নিজের লেখা আত্মজীবনী ‘আপন আলোয় দেখা ভুবন’ গ্রন্থে। আজ মনসুর আহমেদ চৌধুরীর ৭৩তম জন্মদিনে তার লেখা প্রকাশিত এই গ্রন্থটি আমাদের আপ্লুত করেছে। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা, অভিবাদন। এই বইটি যে কোনো মানুষের জীবনে পথচলার অনুপ্রেরণা, সংগ্রাম, সাহস এবং কঠিন পথ পাড়ি দেওয়ার প্রত্যয় হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে।
অনুষ্ঠানে লেখক মনসুর আহমেদ চৌধুরী বইটিতে তার বাল্যকাল, শৈশব, ছাত্রজীবন ও দীর্ঘ সময়ের কর্ম জীবন নিয়ে আলোচনা করেছেন।
বইটিতে লেখক মূলত প্রতিবন্ধী মানুষকে সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে বাধা মোকাবিলা করার বার্তা দিয়েছেন। লেখকের ধারণা বাঁধা মুক্ত অধিকারভিত্তিক এবং একীভূত সমাজে প্রত্যেকটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি প্রথমে মানুষ এবং পরে তার প্রতিবন্ধিতার ধরন বিচার করা উচিত বলে তার প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন।
আরএ/