কবি হেলাল হাফিজকে সিএমএইচে ভর্তি
দ্রোহ ও প্রেমের কবি হেলাল হাফিজকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বুধবার (১৩ জুলাই) কবিকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।
কবি হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। কিডনি, ডায়াবেটিস ও নিউরোলজিক্যাল নানা সমস্যা রয়েছে তার। বিভিন্ন সময় তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কবিকে সিএমএইচে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
কবি হেলাল হাফিজ ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজের বিখ্যাত কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। তার এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা পাঁচ দশক ধরে সব বয়সী পাঠকের মুখে মুখে। তার বিখ্যাত এ কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা আলোড়ন তুলেছিল।
‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। তারপর এখন পর্যন্ত এ কাব্যগ্রন্থের ৩৩টিরও বেশি সংস্করণ হয়েছে। ২০১২ সালে আসে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কবিতা একাত্তর’।
তার অন্যতম জনপ্রিয় কবিতা ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’। এ কবিতার দুটি পঙ্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। কবিতাটি তাকে বিখ্যাত করে তুলে।
সাংবাদিক ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন কবি হেলাল হাফিজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবস্থায় ১৯৭২ সালে সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক পূর্বদেশে। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে দৈনিক দেশ পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। এরপর দৈনিক যুগান্তরের ফিচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
গুণী এ কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবন কেটেছে নেত্রকোনা শহরেই। ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে একই বছর কবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। কবিতায় অসামান্য অবদানের স্মারক হিসেবে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন কবি হেলাল হাফিজ।
এ ছাড়া তিনি যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৬), আবুল মনসুর আহমদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭), নেত্রকোনা সাহিত্য পরিষদের কবি খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন।
আগামী ডিসেম্বরে যুগপৎ ঢাকা ও কলকাতা থেকে প্রকাশ হচ্ছে ৩৪টি কবিতা নিয়ে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’।
এনএইচবি/এসএন