১৬১তম জন্মবার্ষিকীতে বাংলা একাডেমির আলোচনা
রবীন্দ্রনাথ সম্পূর্ণতই প্রান্তজনের কবি
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি সোমবার (৯ মে) সকালে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে একক বক্তৃতা, রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রান্তজনের রবীন্দ্রনাথ শীর্ষক একক বক্তৃতা প্রদান করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাধন ঘোষ। রবীন্দ্র পুরস্কার-প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করেন অধ্যাপক সিদ্দিকা মাহমুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডালিয়া আহমেদ। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম এবং অণিমা রায়।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র-গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক সিদ্দিকা মাহমুদাকে বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত রবীন্দ্র পুরস্কার ২০২২ প্রদান করা হয়।
স্বাগত ভাষণে কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর জন্মের ১৬১ বছর পর আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর মহাজীবন এবং সৃষ্টিসমুদ্র আমাদের আত্মপরিচয়ের সন্ধান দেয়, বিশ্ববোধে প্রাণিত করে।
অধ্যাপক সাধন ঘোষ বলেন, রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যসৃষ্টিজুড়ে রয়েছে প্রান্তজনের উজ্জ্বল উপস্থিতি। তাঁর কবিতা, ছোটগল্পে, উপন্যাস, নাটক, গান এবং তাঁর কর্মময় জীবন প্রান্তজনের উপস্থিতি এবং তাদের হিতৈষণায় ভাস্বর। ১৮৯১ সালে জমিদারি দেখাশোনার জন্য পূর্ববঙ্গের শিলাইদহে বসবাস শুরু করার পরই গ্রাম-বাংলার প্রান্তিক সমাজের সাথে রবীন্দ্রনাথের অন্তরঙ্গ পরিচয় ঘটলো। সে পরিচয়ের অকৃত্রিম ছবি আঁকলেন তিনি তাঁর ছোটগল্পে। ছোটগল্পে যেমন, তেমনি শেষ পর্যায়ের কবিতায় রবীন্দ্রনাথ সম্পূর্ণতই প্রান্তজনের কবি, ব্রাত্য জীবনের চিত্রকর।
সভাপতির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, রবীন্দ্রনাথ একই সঙ্গে বাঙালি এবং বিশ্বমানব। তিনি তাঁর জীবন ও সৃষ্টিতে মূলত পূর্ববঙ্গের প্রান্তজনের হৃদয়ের ছবি এবং সংগ্রামের আলেখ্য অঙ্কন করেছেন নিপুণ শিল্পীর হাতে। রবীন্দ্র-মহাভুবন মূলত প্রান্তজনেরই ভুবন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সায়েরা হাবীব।
এপি/