ছুটিতে দেখে আসুন পলাশী যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর প্রাঙ্গণ। ছবি ঢাকাপ্রকাশ
পলাশী যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান, সতের শতকে অটোমান নৌবাহিনীর ১২৪ কামান বিশিষ্ট যুদ্ধজাহাজের মডেল, নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত সাবমেরিন, যুদ্ধ জাহাজ বা বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী বাহিনীর ট্যাঙ্ক। হালের এবং কালের এমন নানা যুদ্ধ-সরঞ্জাম দেখতে ঘুরে আসতে পারেন বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর।
রাজধানীর বিজয় সরণীতে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে এক অঙ্গনেই প্রদর্শিত হচ্ছে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর নানা যুদ্ধ-সরঞ্জাম। প্রদর্শনী থেকে যেমন জানা যাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, আবার জানা যাবে বিশ্বশান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সৈনিকদের অবদান। আবার জানা যাবে যুদ্ধ-সরঞ্জামের ক্রম পরিবর্তনের ধারাও।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরে প্রদর্শিত বিভিন্ন যুদ্ধ-সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, পলাশীর যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান, ১৭ শতকে মুঘল নৌবাহিনীর ব্যবহৃত বৃহৎ সামরিক জলযানের আদলে তৈরি নৌযান, ঐতিহাসিক পলাশী যুদ্ধের মডেল ও অষ্টাদশ শতাব্দীর কামান, যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি ও সেনা সদস্যদের কার্যক্রমের মডেল।
এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য এফএম-৯০ এসএএম, মিসাইল সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরনের সমর সরঞ্জাম, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত মিগ-২১ যুদ্ধবিমান, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত পিটি-৬ বিমানের ইঞ্জিন, এফটি-৬ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন, এয়ারট্যুরার প্রশিক্ষণ বিমান।
প্রদর্শনীতে রয়েছে মালিতে সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী বাহিনীর ট্যাঙ্ক। যে হামলায় তিনজন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছিলেন।
এছাড়া রয়েছে নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত স্কুইড মাউন্টিং মর্টার মার্ক-৪, রকেট ডেপথ চার্জ, ইটি ৪০ টর্পেডো, টাইপ ৫৩-৬৬ টর্পেডো ও টিউবসহ বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম, সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত মোটর ক্যারিজ ৪০ মিমি সেলফ প্রপেল্ড টুইন এম১৯এ১ বিমানবিধ্বংসী ট্যাঙ্ক।
বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর প্রাঙ্গণ। ছবি ঢাকাপ্রকাশ
প্রদর্শনীতে আরও আছে সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত ১০০ এমএম ট্যাঙ্ক গানসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম, বিভিন্ন ধরনের মিসাইল ও ক্ষেপণাস্ত্র। নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত সাবমেরিন, যুদ্ধ জাহাজ ও বিভিন্ন নৌযান, সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত আর্মার্ড পার্সোনেল ক্যারিয়ার প্রভৃতি।
জাদুঘর সূত্রে জানা গেছে, পয়লা মে থেকে ৬ মে পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের ছুটির পর ৭ মে থেকে যথারীতি খোলা থাকবে জাদুঘর। জনপ্রতি ৫০ টাকার টিকিটে ঘুরে দেখা যাবে এটি। এছাড়া একই অঙ্গনে অবস্থিত তোষাখানা জাদুঘরও প্রদর্শন করা যাবে একই টিকিটে। সাপ্তাহিক ছুটি বুধবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন এটি খোলা থাকে।
প্রসঙ্গত গত ৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বিজয় সরণি বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর প্রান্তে যুক্ত হয়ে জাদুঘর উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটা মাইলফলক হয়ে থাকবে। তাছাড়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সেই সাথে সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে অর্থাৎ সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী সম্পর্কে আমাদের শিশু এবং তরুণ প্রজন্ম তারা যেমন উদ্বুদ্ধ হবে, সম্যক জ্ঞান পাবে, আবার যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন বা দেশের জন্য বিভিন্ন সময় সশস্ত্র বাহিনীতে অংশগ্রহণ করেছেন, দেশে-বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করেছেন, তাদের জন্যও একটা প্রেরণা আসবে এবং তাদের একটা আত্মতৃপ্তি হবে।
এমএ/এপি/