বেঙ্গলে সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর উদযাপন উপলক্ষে সংগীত, চলচ্চিত্র, নৃত্য, কারুশিল্প, চিত্রকলা ও সাহিত্যে বাঙালি সংস্কৃতির এবং সমকালীন জীবনধারার নানা দিক নিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজন করেছে সাংস্কৃতিক উৎসব। বাংলাদেশের সংস্কৃতিচর্চা এবং সাধনাকে গতিময় ও বহুমাত্রিক করার লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে আয়োজিত উৎসবের নাম ‘সৃজনে ও শেকড়ে’। পাঁচ দিনের উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর)।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় পাঁচ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন ‘বাংলার সংস্কৃতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেকড়ে প্রেথিত ছিল। তিনি সবসময় সংস্কৃতির নানা ধারার চর্চাকে উৎসাহিত করতেন। এখন খুব কম প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি আমাদের দেশীয় মূল্যবোধ ও ভাবনার ধারা বজায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমি বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাতে চাই এত সুন্দর একটি আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরার জন্য। আমি আশা করি এ ধরণের উদ্যোগ আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে জানার ও বোঝার প্রতি অনুপ্রাণিত করবে’।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অফ এসএমই, সৈয়দ আব্দুল মোমেন। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনস্বরূপ ১ মিনিটের নিরবতা পালনের পর আয়োজন শুরু করা হয়। এরপর ষড়জ পঞ্চমের পরিবেশনায় দেশের গান দিয়ে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন শুরু হয়। তারপর সামিনা হোসেন প্রেমার নির্দেশনায় দলীয় নৃত্য পরিবেশিত হয়। উৎসবে খেয়াল পরিবেশন করেন বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া ও সুস্মিতা দেবনাথ শুচি। এ ছাড়াও ছিল শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে আবৃত্তি, বুলবুল ইসলামের কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান এবং সর্বশেষ চন্দনা মজুমদারের কণ্ঠে লোকগান।
আপরদিকে একই দিনে বিকেল ৩টায় ভবনের দ্বিতীয় তলায় কামরুল হাসান প্রদর্শনশালায় চট্টগ্রামের ২১ জন শিল্পীর অংশগ্রহণে তিন সপ্তাহব্যাপী দলীয় শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ‘স্বোপার্জিত পৃথিবী’ উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান। পরিবেশ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামের একদল দৃশ্যশিল্পী এ-বছর সেপ্টেম্বর মাসে একটি আর্ট ক্যাম্প আয়োজন করে। ক্যাম্প চলাকালীন উন্মুক্ত ছায়াঘেরা সিআরবি চত্বরে সপ্তাহব্যাপী শিল্পীদের ছবি আঁকা ও পারফরম্যান্স শত শত নগরবাসী মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন এবং পরিবেশ সচেতনতার বিষয়ে তাঁদের একাত্মতা প্রকাশ করেন। সেই ভাবনাই এই প্রদর্শনীতে অনুরণিত হয়েছে সারাবিশ্বের পরিবেশ বিপর্যয়ের মর্মবেদনায়।
অপরদিকে ভবনের চতুর্থ তলায় বিকেল ৪ টায় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী চালচিত্র উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী মো. আবুল কালাম আজাদ।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) নিচতলায় বিকেল ৪টা থেকে থাকছে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা পর্ব ‘আলাপে-বিস্তারে’। আনোয়ারা সৈয়দ হক রচিত ‘খাদ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন ড. আমিনুর রহমান সুলতান, ফোকলোর বিভাগ ও নবনীতা চৌধুরী। নিচতলায় কারুমেলা ও বইমেলা, দ্বিতীয়তলায় দলীয় প্রদর্শনী এবং তৃতীয়তলায় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী চলবে।
উৎসব শেষ হবে আগামী শনিবার (১৮ ডিসেম্বর)।