দুই বছর পর লালন উৎসব
করোনাকালীন সংকট কাটিয়ে দুই বছর পর আবারও শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী লালন উৎসব। কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়িতে ১৫ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে এই লালন স্মরণোৎসব।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন। এ উৎসব চলবে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) পর্যন্ত।
সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তিন দিনের লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে কুষ্টিয়ার লালন একাডেমি।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ স্লোগানে বুধবার (১৬ মার্চ) দ্বিতীয় দিনের উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। ১৭ মার্চ উৎসব সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুব উল আলম হানিফ। এসব অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা শেষে দেশ লালন একাডেমির শিল্পীসহ গুণী লালনসংগীত শিল্পীরা গান পরিবেশন করবেন।
ইতোমধ্যেই উৎসবের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। বাউল সম্রাট লালন শাহ তার জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়িতে প্রতি বছর চৈত্রের দোলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন তার অনুসারীরা। কিন্তু করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ ছিল আয়োজন। এবার সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি তিন দিনের এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কুষ্টিয়া একটি সাংস্কৃতিক জনপদ। এই জনপদের একজন প্রবাদ পুরুষ ফকির লালন শাহ। লালনের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মূল্যবোধ মিশ্রিত বাণী সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে লালন একাডেমি, কুষ্টিয়া নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, স্মরণোৎসবে আসা লাখো লালনভক্ত অনুরাগীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি সবাই আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন।’
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) খাইরুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিন দিনব্যাপী এ লালন স্মরণোৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), সাদা পোশাকে জেলা গোয়েন্দা (ডিসি) পুলিশ এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন।’
এএম/আরএ/