কক্সবাজারে ফিশ ফ্রাইয়ের নামে পর্যটকদের কী খাওয়ানো হচ্ছে?
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ পর্যটন নগরী কক্সবাজার। শহর কিংবা গ্রামীণ জীবনের কর্মব্যস্ত জীবনকে সমুদ্রের পাড়ে নিয়ে প্রশান্তি দিতেই কক্সবাজারে ছোটেন পর্যটরা। আর কক্সবাজারের প্রতিটি সন্ধ্যা যেন সুগন্ধা পয়েন্টে ‘ফিশ ফ্রাই’ খাওয়ার একেকটি উৎসব। আর পর্যটকদের এ চাহিদাকে পূঁজি করেই এখানকার রাস্তার দু’পাশে রীতিমতো মাছের জমজমাট হাট বসে। টুনা, স্যামন, রুপচাঁদা, কোরাল, রেড স্ন্যাপার, কাঁকড়া, চিংড়ি, অক্টোপাস থেকে শুরু করে সামুদ্রিক সব মাছের সমারোহ দেখে ভোজনরসিক পর্যটকরা এগুলোর স্বাদ না নিয়ে পাশ কাটিয়ে যেতেই পারবেন না। তবে দীর্ঘদিনের প্রশ্ন কক্সবাজারে গিয়ে ‘ফিশ ফ্রাই’য়ের নামে কী খাচ্ছেন পর্যটকরা?
অভিযোগ রয়েছে, দোকানে সাজিয়ে রাখা টাটকা মাছ পর্যটকরা ফ্রাইয়ের জন্য অর্ডার করলেও সুকৌশলে পঁচা-বাসি মাছ গছিয়ে দেন বিক্রেতারা। এছাড়া এসব দোকানের পরিবেশও চরম অস্বাস্থ্যকর। সুগন্ধা পয়েন্টে মলমূত্র পড়ে এমন পুকুরেই ধোয়া হয় সেসব মাছ। এছাড়া বছরের পর বছর ক্ষতিকর পোড়া তেলেই ভাজা হয় সেগুলো।
এমন নানা অভিযোগের পর মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে অভিযানে নামে প্রশাসন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ফিশ ফ্রাইয়ের সব দোকান। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে দোকানগুলোর মাছও। তবে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়েছে দোকানিরা।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুদ রানা বলেন, কোনো দোকানেই মূল্য তালিকা নেই। স্বাস্থ্যবিধি যেটা মেনে চলার কথা কিংবা প্রদর্শন করার কথা সেটিও নেই। এখন আমাদের কঠোর হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। প্রতিটি দোকানই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ব্যবসায়ীদের এমন প্রতারণার বিষয়ে কিছুই জানেন না পর্যটকরা। প্রতারণা বন্ধে তাই নিয়মিত অভিযানের দাবি তাদের। এ বিষয়ে এক পর্যটক বলেন, এখানকার খাবার যে খারাপ সেটি তো আমরা দেখে বুঝতে পারছি না। পরিবেশ খারাপ সেটিও তো পর্যটকরা জানে না। কাজেই তাদের উচিত ছিল আমাদেরকে মানসম্মত খাবার দেয়া।
আরেক পর্যটক বলেন, যারা ঘুরতে আসে তারা এতকিছু জানে না। দোকানিরা কোন ধরনের মাছ খাওয়াচ্ছে, কী তেল দিচ্ছে সেটি পর্যটকদের জানার কথাও না। বাইরে সাজানো টাকটা মাছ দেখে অর্ডার করি। পরে তারা পরিবর্তন করে প্রতারণা করলে ধরার কোনো সুযোগও নেই। প্রশাসনের উচিত হবে নিয়মিত অভিযান চালানো।
এমন অস্বাস্থ্যকর ‘ফিশ ফ্রাই’ খেলে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে জানিয়ে কক্সবাজারের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, এসব খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। বেশি খেলে ক্যান্সারও হতে পারে। সেজন্য এগুলো বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে।