পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়ি
শেরপুর জেলার এক প্রাচীন নিদর্শন পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়ি। বাড়িটি তৎকালীন জমিদার সতেন্দ্র মোহন চৌধুরী ও জ্ঞাতেন্দ্র মোহন চৌধুরীর জমিদার বাড়ি নামে স্থানীয়দের কাছে অধিক পরিচিত।
জমিদার বাড়িটির বর্তমান অবস্থা স্থানীয় অন্য জমিদার বাড়ির তুলনায় বেশ ভালো। কেননা এখনও অনেকটা অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। কালের পরিক্রমায় বাড়িটির সৌন্দর্য ম্লান হয়েছে, কিন্তু বাড়িটির অসাধারণ কারুকার্যখচিত দৃষ্টিনন্দন স্তম্ভগুলো আজও শোভা পাচ্ছে। এই স্তম্ভগুলো একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কারুকার্যখচিত। চতুস্কোনবিশিষ্ট এই স্তম্ভগুলোতে বর্গাকৃতির ফর্ম-এর ব্যবহারও লক্ষণীয়। বাড়িটির দেয়াল এবং স্তম্ভগুলোতে চুন এবং সুড়কির ব্যবহার রয়েছে।
বাড়িটির প্রবেশ পথে বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। একটি মন্দির এবং শান বাঁধানো ঘাটসহ একটি পুকুর দেখতে পাওয়া যায় এই জমিদার বাড়িতে।
বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল গোপৌনাথ মন্দির নির্মাণের অনেক আগে। গ্রীক স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত এই বাড়িটি আজও সেই জমিদার আমলের সাক্ষ্য বহন করে।
এখানকার জমিদাররা নাচ-গানের প্রতি প্রবল আসক্ত ছিল। যা জমিদার বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত রং মহলের দিকে তাকালে স্পষ্ট বোঝা যায়। রংমহলটিতে অসাধারণ কারুকার্যখচিত বিভিন্ন নকশার নান্দনিকতা ফুটে উঠে।
যেভাবে যাবেন:
বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়ি যাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম শেরপুর সদরে আসতে হবে। রাজধানীর মহাখালী, গাবতলী, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রাউন ডিলাক্স, জাবির পরিবহন, এসি সুপার বাস সার্ভিস, তুরাগ, ড্রিমল্যান্ড, আনন্দসহ বেশ কিছু পরিবহনের এসি-নন এসির একাধিক বাস ঢাকা থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জনপ্রতি নিয়মিত ভাড়া সর্বনিম্ন ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা পর্যন্ত। শেরপুর সদরে আসার পর সেখান থেকে যে কোন স্থানীয় পরিবহনে চড়ে যেতে পারবেন জমিদার বাড়িতে। শেরপুর সদর থেকে পৌনে তিন আনি জমিদার বাড়ির দুরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার।
কোথায় থাকবেন:
শেরপুর শহরে থাকার জন্য উল্লেখযোগ্য আবাসিক হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে হোটেল আরাফাত, কাকলী গেস্ট হাউজ, বর্ণালী গেস্ট হাউজ, মোল্লা গেস্ট হাউজ এবং হাসেম গেস্ট হাউজ।
কোথায় খাবেন:
খাওয়া-দাওয়ার জন্য শেরপুর সদরে ভালো মানের রেস্টুরেন্ট ও দোকান রয়েছে।
নিকটস্থ ভ্রমণ স্থান: শেরপুরে দেখার মতো বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেমন- রাজার পাহাড়, পানি-হাটা, তাড়ানি পাহাড়, মধুটিলা ইকো পার্ক, মাইসাবেহা জামে মসজিদ, চুকু লুপি চিলড্রেন পার্ক এবং গজনী অবকাশ কেন্দ্র উল্লেখযোগ্য।
/এএন
ছবি: ফয়সাল তন্ময়