দীর্ঘদিন পর এসি চালানোর আগে যা খেয়াল রাখবেন
ছবি সংগৃহিত
ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে এসে তাপমাত্রার পারদ বাড়তে শুরু করেছে। ভোরের দিকে হালকা ঠান্ডা অনুভূত হলেও ঘরের পাখা কিন্তু চলছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো কোনো বাড়িতে আবার এসিও চলতে শুরু হয়েছে।
পুরো শীতকাল এসি বন্ধ ছিল। তাই বেশকিছু বিষয় মাথায় রেখেই যন্ত্রটি চালাতে হবে। এর আগে অবশ্যই রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন থাকে। অনেক সময় এসির মেশিনে বা ফিল্টারে ধুলা-ময়লা থাকলে যন্ত্রটি ঠান্ডা হতে চায় না। ধুলোর আস্তরণ পড়ে যন্ত্রের কম্প্রেসারটিও বিগড়ে যেতে পারে। যন্ত্রের ক্ষতি তো হয়ই, এমনকি বিস্ফোরণের আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
চলুন জেনে নিই দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এসি চালানোর আগে কী করতে হবে-
ইউনিট বন্ধ করা
এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটে কিছু করা শুরু করার আগে সর্বদা সার্ভিস প্যানেলে কনডেন্সারের পাওয়ার বন্ধ করা উচিত। ইউনিটের কাছাকাছি ২৪০ ভোল্টের ওয়েদারপ্রুফ ডিসকানেক্টিং বক্স থাকে, যেখানে সাধারণত একটি লিভার, সুইচ বা ফিউজ থাকে। ইউনিটে এটি না থাকলে, সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করে পাওয়ার বন্ধ করা যেতে পারে।
এসির গ্যাস লিক
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে আগুন লাগা বা বিস্ফোরণ ঘটার অন্যতম কারণ হল এসির গ্যাস লিক হওয়া। তাই বেশকিছু দিন বন্ধ থাকার পর, আবার এসি চালাতে গেলে আগে গ্যাস লিক হচ্ছে কি না, তা দেখে নেয়া উচিত।
ফিল্টার পরিষ্কার করে নিন
নিয়মিত পরিষ্কার করা বা ধুলাযুক্ত ফিল্টার রিসেট করে তবেই তা ব্যবহার করা উচিত। আদর্শ ভাবে এয়ার কন্ডিশনার সিস্টেমকে ঠিক রাখতে কমপক্ষে প্রতি ছয় মাস পর পর এটি পরিষ্কার করা দরকার। এয়ার ফিল্টার অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যেমন-
১. এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটের বয়স
২. বাড়ির আশপাশের বাতাসের গুণমান
৩. বাড়িতে থাকা কোনও পোষ্য
৪. অ্যালার্জি
৫. মরশুম
কনডেন্সার কয়েল পরিষ্কার করুন
কনডেন্সার কয়েলগুলো বাড়ির ভেতর থেকে বাইরের তাপ স্থানান্তর করে বাড়িকে ঠান্ডা রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কয়েলে ময়লা জমে গেলে এটি ঘর ঠান্ডা রাখবে না। কনডেন্সার কয়েলকে ঢেকে রাখা কোনো ময়লা, ধুলা পরিষ্কার করতে ব্রাশ বা ভ্যাকুয়াম ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত। এতে কয়েলের ক্ষতি হতে পারে।
ইউনিট থেকে ময়লা পরিষ্কার করা
যদি এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটটি বন্ধ হয়ে থাকে এবং কয়েক মাস ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকে, তবে এতে ধুলা জমা হতে পারে। এই ধুলা এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটে বায়ু সরবরাহ হ্রাস করতে পারে। এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটটি বন্ধ থাকার সময় এর উপর একটি কভার রাখা উচিত।
কুল্যান্ট লাইন পরীক্ষা করা
অনেক ক্ষেত্রে এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট ঘর ঠান্ডা করার শক্তি হারিয়ে ফেলে, এটি কুল্যান্ট লাইন বা তাদের চারপাশের বাধার কারণে হতে পারে। এই লাইনগুলো ভিতরের কয়েলটিকে কনডেন্সার ইউনিটের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং এতে কুল্যান্ট থাকে। যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। কুল্যান্ট লিক এয়ার কন্ডিশনার ইউনিটের ক্ষতি করতে পারে এবং এতে বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই বেড়ে যায়।
ইউনিট পরীক্ষা করা
একবার এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট পরিষ্কার করা শেষ হলে, এটি সঠিক ভাবে কাজ করছে কি না, তা নিশ্চিত করতে এয়ার কন্ডিশনার ইউনিট পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুকিয়ে গেলে পাওয়ারটি আবার চালু করে দেখে নিতে হবে, তারপর ব্যবহার করা যেতে পারে।