স্মার্টফোনে ২৬০ ওয়াট চার্জার! সম্ভব?
স্মার্টফোন বাজার এখন বড়ই অস্থির। কেউই যেন কোনো ট্রেন্ড চালু করে স্থির থাকতে পারছেনা। এক কোম্পানি এক ধরনের ট্রেন্ড চালু করলে অপর কোম্পানি সেটাকে টেক্কা দিতে আরেক ধরনের ট্রেন্ড চালু করছে। একের পর এক নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন বেসামাল করে তুলছে স্মার্টফোন বাজারকে। আর কোম্পানিগুলোর ট্রেন্ড ট্রেন্ড খেলার প্রতিযোগিতায় নিজেদের সামলে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। এই ট্রেন্ডের খেলা যেন এক নিয়ন্ত্রণহীন অধ্যায়। ক্যামেরা ট্রেন্ড, ব্যাটারি ট্রেন্ড, রিফ্রেশ রেট ট্রেন্ড, গেমিং ট্রেন্ড, ফোল্ডিং ট্রেন্ড সবন শেষ করে এবার শুরু হয়েছে ফাস্ট চার্জিং ট্রেন্ড।
গেল ৯ ফেব্রুয়ারি চীনের বাজারে বিশ্বের প্রথম ২৪০ ওয়াট দ্রুত চার্জিং সমর্থিত স্মার্টফোন রিয়েলমি জিটি নিও ফাইভ আর জিটি থ্রি দুটো ফোন উন্মোচন করে রিয়েলমি। এ দেখে যেন আর তর সইছিলনা ইনফিনিক্স এর। তাই রিয়েলমিকে টেক্কা দিতে এবার ২৬০ ওয়াট দ্রুত চার্জিং সমর্থিত স্মার্টফোন বাজারে আনতে যাচ্ছে চীনের অপর স্মার্টফোন নির্মাতা ইনফিনিক্স। ইতোমধ্যে তাদের চার্জারের ছবিটিও ফাঁস হয়েছে টেক পাড়ায়।
ইনফিনিক্স নতুন এ চার্জারের নাম দিয়েছে থান্ডার চার্জার। এর আগে গেল বছরের অক্টোবরে জিরো আল্ট্রা নামে একটি স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ে ইনফিনিক্স, যা ১৮০ ওয়াটের দ্রুত চার্জার সমর্থিত ছিল।
ইনফিনিক্স সূত্রে জানা গেছে নতুন এই চার্জারটির সার্ট ডিজাইনে অ্যাডভান্সড হাই পারফরমেন্স বাস বা এএইচবি (AHB) প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে, যা চার্জের সময় ডিভাইসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। শুধু তাই নয় ১০০ ওয়াট ওয়্যারলেস চার্জিং নিয়েও পরীক্ষা চালাচ্ছে ইনফিনিক্স। আগামী ৯ মার্চ এই স্মার্টফোনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
প্রযুক্তি পর্যালোচকরা বলছেন হয় ইনফিনিক্স ২৬০ ওয়াট দ্রুত চার্জিং সাপোর্টেড নতুন কোনো স্মার্টফোন আনবে নতুবা আগের জিরো আল্ট্রাকেই রিব্র্যান্ডেড করে বাজারে ছাড়বে। ফাঁস হওয়া সেই ছবিটিতে দেখা গেছে চার্জার দুটো ইনফিনিক্স জিরো আল্ট্রার পাশে রাখা হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে এত দ্রুত চার্জিং কি আসলেও প্রয়োজন? নাকি কেবলই প্রযুক্তির উদ্ভাবন আর পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। প্রযুক্তি পর্যালোচকরা বলছেন ন্যানো টেকলজিতে এতো বেশি বিদ্যুতের পরিবহন কি আদৌও উচিত। অনেক পর্যালোচকের মতে উচ্চমাত্রার বিদ্যুতের পরিবহন আয়ন ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্বের উপর প্রভাব ফেলবে।
আবার চার্জে দেওয়া অবস্থায় স্মার্টফোন বিস্ফোরণ হওয়া একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, এবং নিত্যনতুন স্মার্টফোনগুলোতে এ ধরনের ঘটনার ছবি প্রায় ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে। এতো বিদ্যুতের পরিবহন সেই বিস্ফোরণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলবে কিনা এমন প্রশ্নও তুলেছেন অনেক পর্যালোচকরা।
এসব প্রশ্নের যথাযথ কোনো উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন কোম্পানিগুলো গবেষণা করেই কোনো প্রযুক্তি বাজারে ছাড়ে। দুই একটি ছোটখাটো দুর্ঘটনা থাকতে পারে কিন্তু ব্যবসার ক্ষতি হবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত কোনো কোম্পানিই নিবে না। তাই সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কোনো পণ্য বাজারে ছাড়া হয় না।
এখন দেখার পালা নতুন এই ট্রেন্ডে আর কোন কোন কোম্পানি যুক্ত হয়।
/এএস