পড়ালেখায় সেরা, গবেষণায় অদ্বিতীয় ‘চুয়েটের চার’
যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি’ এবং বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ের’র ২০২১-’২২ সালের বিশ্বসেরা ২ শতাংশ গবেষক তালিকায় রয়েছেন চুয়েটের (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) চার কৃতি শিক্ষক-গবেষক।
২০২০ ও ২০২১ সালের ‘চুয়েট সেরা গবেষণা প্রকাশনা পুরস্কার’
ড. মো. আশরাফ আলী চুয়েটে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ড. আলী পদার্থবিজ্ঞানের কনডেন্সড ম্যাটার শাখায় এমএসসি, এমফিল ও পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। ‘দি ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্সেস (ঞডঅঝ)’র অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ‘অ্যাডভান্সড কম্পিউটেশনাল ম্যাটেরিয়ালস রিসার্চ ল্যাবরেটরি (অঈগজখ)’র প্রধান গবেষক তিনি। কয়েক বছর ধরে প্রধানত কম্পিউটেশনাল ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স (থিওরেটিক্যাল) এবং বিভিন্ন ধরনের ম্যাটেরিয়ালস প্রস্তুতকরণ ও পরীক্ষণ (এক্সপেরিমেন্টাল) গবেষণায় সম্পৃক্ত আছেন। ২০২০ ও ২০২১ সালের ‘চুয়েট সেরা গবেষণা প্রকাশনা পুরস্কার’ লাভ করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং চুয়েট গবেষণা ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে যুক্ত।
চুয়েটের ২০১৯ সালের সেরা গবেষক
তিনি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল ভূঁঞা। চুয়েটেরই আরেক কৃতি ছাত্র। সেখান থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়েরও কৃতি অধ্যাপক। ২০০৩ সালের ব্যাচ, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সেরা ফলাফলে বিএসসি ও ২০০৮ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে একই বিভাগে এমএসসি। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার সেন্ট্রাল কুইন্সল্যান্ড ইউনিভাসিটির প্রকৌশল ও প্রযুক্তি স্কুলের ডিজেল ইঞ্জিনের বিকল্প জ্বালানি হিসেবে বায়ো-ডিজেল বিশেষত নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পিএইচডি। তাঁর গবেষণা আগ্রহের মধ্যে তাপ স্থানান্তর, তাপীয়-তরল, নবায়নযোগ্য শক্তি, বিকল্প জ্বালানি ও শক্তি রূপান্তর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক জার্নাল ও সম্মেলনগুলোতে যৌথ পর্যালোচক হিসেবে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল ভূঁঞার। গবেষণায় অসামান্য অবদান রাখায় ‘চুয়েট ২০১৯ সাল সেরা গবেষণা প্রকাশনা’ পুরষ্কার প্রদান করেছে তাকে।
গণিতের কৃতি অধ্যাপক অধ্যাপক ড. গোলাম হাফেজ
অধ্যাপক ড. মো. গোলাম হাফেজ চুয়েটের গণিত বিভাগে অধ্যাপক। ম্যাথেমেটিক্যাল ফিজিক্সের গবেষক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি। ‘চুয়েট ২০১৯ সাল সেরা গবেষণা প্রকাশনা পুরস্কার’ লাভ করেছেন।
ড. ইকবালের কাজ ডাটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিটিক্স
ড. এম. ইকবাল হাসান সরকার। লোকে চেনে ড. ইকবাল এইচ. সরকার। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র সিএসই (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনিও বাকিদের মধ্যে এই দারুণ ক্যাম্পাসের অত্যন্ত কৃতি ছাত্র। প্রথম শ্রেণীতিই সেরা ফলাফল করে বিএসসি. ও এমএসসি। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, মেলবোর্নের পিএইচডি। অধ্যাপক ড. এম. ইকবাল এইচ. সরকারের গবেষণা ক্ষেত্র-ডাটা সায়েন্স, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিটিক্স। তার সম্পন্ন উচ্চমানের গবেষণা কর্মগুলো এলসেভিয়ার, স্প্রিঞ্জার, নেচার, এসিএম, আইইইই, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস’র জার্নাল ও বিভিন্ন কনফারেন্সে প্রকাশিত এবং উপস্থাপিত হয়েছে। সম্প্রতি ড. এম. ইকবাল হাসান সরকারের লেখা একটি বই ‘কনটেক্সট-আওয়ার মেশিন লার্নিং অ্যান্ড মোবাইল ডাটা অ্যানালিটিক্স’-স্প্রিঞ্জার, নেচার, সুইজারল্যান্ড থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে ইন্ডাস্ট্রি ও অ্যাক্যাডেমিয়া উভয়ক্ষেত্রেই গবেষণা এবং স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন প্রকাশকরা।
তাদের একটিই ভাষ্য
অর্জন প্রসঙ্গে তাঁরা মনে করেন, ‘নিশ্চয়ই বিশ্বের শীর্ষ গবেষকদের তালিকায় স্থান পাওয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চুয়েটের জন্য অনেক সম্মান ও গৌরবের। সামনের দিনে চুয়েটের ছাত্র-ছাত্রীরা গবেষণায় আরও উৎসাহী হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
লেখা ও ছবি : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ বিভাগ।
ওএফএস।