আটটি বিভাগীয় শহরে ‘৫জি’ ট্রায়াল শুরু করেছে গ্রামীণফোন
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ২৬ জুলাই ঢাকা ও চট্টগ্রামে সফলভাবে ৫জি ট্রায়াল পরিচালনা করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার গ্রামীণফোন। এ ধারাবাহিকতায়, মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তিটি মাধ্যমে সামাজিক ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতিতে দেশের টেক সার্ভিস লিডার বাংলাদেশের আটটি বিভাগীয় শহরে গ্রাহকদের মধ্যে এখন ৫জি ট্রায়াল শুরু করেছে।
এ উদ্দেশ্যে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রামীণ ফোনের প্রধান কার্যালয় ‘জিপি হাউজ’-এ একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন তারা।
আমন্ত্রিত অতিথি ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা গ্রামীণফোনের ‘ইনোভেশন ল্যাব’-এ গিয়েছেন। তারা সকলে ৫জি সেবাটি কীভাবে প্রদান করা হয় জানতে পেরেছেন। ‘এআর ভিডিও’, ‘ভিআর গেমিং’, ‘রোবটিক আর্মস’, ‘এআর সেলফি’, ‘ক্লাউড গেমিং’সহ গ্রামীণের প্রযুক্তিগত নানা অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন।
জিপি হাউজের বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। আরও ছিলেন বিটিআরসি’র ইই্যান্ডও বিভাগের কমিশনার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের কমিশনার সৈয়দ দিলজার হোসেন, স্পেকক্ট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান জুয়েল, পিএসসি। আরো ছিলেন বিটিআরসির শীর্ষ কমকতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসিম পারভেজ এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি ও আশীষ কুমার কুন্ডু।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, চিফ মার্কেটিং অফিসার সাজ্জাদ হাসিব, চিফ ডিজিটাল অফিসার সোলায়মান আলম, চিফ টেকনোলজি অফিসার জয়প্রকাশ, চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার হ্যান্স মার্টিন হেনরিকসন অংশগ্রহণ করেছেন।
গ্রামীণফোনের অংশীদার প্রতিষ্ঠানে উইপ্রো, হুয়াওয়ে, জেডটিই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসছেন।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান অনুষ্ঠানে ৫জি’র কি-নোট উপস্থাপন করেন।
বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছেন, “বাংলাদেশজুড়ে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রমাণিত হয়, দেশ ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা জানি, সেবাগুলো প্রদানে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেখানে সবাই কাজ করছি। নতুন প্রযুক্তিটিকে স্বাগত জানাতে হবে। আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত সুবিধাগুলো নিতে হলে সকল প্রযুক্তি মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা উন্মোচনে আমাদের ৫জি’র মতো উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োজন। এই অভিজ্ঞতা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণে আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ফলে মানুষ যোগাযোগ ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে পারবেন।”
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান তার প্রবন্ধে বলেন, “প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজের ক্ষমতায়ন ও সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে আমাদের মোবাইল প্রতিষ্ঠানটি। আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধাগুলোকে কাজে লাগিয়ে সরকারের চলমান ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিত করতে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ দায়িত্ব সবার। ২জি, ৩জি, ৪জি থেকে এখন ৫জি কানেক্টিভিটির যুগে আমরা। উচ্চগতির কানেক্টিভিটি ও উন্নত ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্যুশন নিয়ে দেশের রূপান্তরে গ্রামীণফোন কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।”
তিনি আরো বলেন, “নরওয়ের টেলিনরের অংশীদার হিসেবে গ্রামীণফোনের এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কারিগরি সক্ষমতাও রয়েছে; বৈশ্বিক পরিসরে এক্ষেত্রে টেলিনরের বিভিন্ন উদাহরণও রয়েছে; যা আমরা স্থানীয় বাজারের উপযোগী করে প্রয়োগ করতে পারব। বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করে খাত-বান্ধব পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাই, যাতে ৫জি প্রযুক্তির সুবিধা সবাই গ্রহণ করতে পারেন। পথচলায় আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান ও আস্থা রাখার জন্য সরকার, বিটিআরসি ও ইকো-সিস্টেম অংশীদারদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। ৫জি’র শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ, সমাজ, সর্বোপরি দেশের জন্য উন্নত ভবিষ্যত তৈরির এখনই সময় বলে মনে করি।”
তারা জানিয়েছেন, ২৬ জুলাই গ্রামীণফোন প্রথমবারের মতো ঢাকা ও চট্টগ্রামে ইউজ কেসসহ ৫জি ট্রায়াল পরিচালনা করেছে। এই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি আট বিভাগীয় শহরে তার গ্রাহকদের ৫জি সেবার অভিজ্ঞতা গ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। জানিয়েছেন, ২৯ সেম্টেম্বর থেকে ধাপে, ধাপে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ফাইভজি কানেক্টিভিটির অভিজ্ঞতা গ্রহণের সুযোগ তৈরি করবে গ্রামীণফোন। বিশেষাঞ্চলগুলো হলো-গুলশান জিপিসি, বিটিআরসি সার্ভিস আইবি (ঢাকা), বুয়েট বিল্ডিং, মিরাবাজার (সিলেট), কলাতলী (কক্সবাজার), খুলনা, গ্রামীণফোন আঞ্চলিক অফিস, ময়মনসিংহ; রাজশাহী আলুপট্টি মোড়, রংপুর নিউ মার্কেট (সিটি করপোরেশন, পায়রা চত্বর), চট্টগ্রাম পাহাড়তলী ও গ্রামীণফোন আঞ্চলিক অফিস, কুমিল্লা।
ওএফএস।