‘রিজিওনাল সিডস ফর দ্যা ফিউচার’ প্রোগ্রাম শুরু করলো হুয়াওয়ে
ডিজিটাল ক্ষেত্রগুলোতে তরুণদের উৎসাহিত করে উন্নত ভবিষ্যৎ গঠনের লক্ষ্যে ‘আসিয়ান ফাউন্ডেশন’ ও ‘ট্যুরিজম অথরিটি অব থাইল্যান্ড (টিএটি)’র সাথে মিলিতভাবে গতকাল ১৯ আগস্ট থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ‘এশিয়া প্যাসিফিক সিডস ফর দ্যা ফিউচার ২০২২’ উদ্বোধন করেছে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘হুয়াওয়ে’। এটিই তাদের সবচেয়ে বড় আইটিভিত্তিক উন্নয়ন সেবা কার্যক্রম।
প্রগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রী জুরিন লাকসানাউইজিত, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আসিয়ানের মহাসচিব দাতো লিম জক হই, আসিয়ান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ইয়াং মি এং, হুয়াওয়ের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন।
তাদের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও এশিয়ার দক্ষিণপূবের ১০টি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা সংস্থাটির আরো প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
বিভিন্ন পক্ষের অংশীদারিত্বে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি শক্তিশালী ‘ডিজিটাল ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেম’ তৈরির ব্যাপারে অনুষ্ঠানে গুরুত্ব আরোপ করেন বক্তারা।
১৯ থেকে আগস্ট ২৭ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই প্রোগ্রামে বাংলাদেশের ৮ জনসহ আশিয়ান ছাড়াও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ১৬টি দেশের ১২০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী থাইল্যান্ডে ‘ডিজিটাল বুট ক্যাম্প’-এ অংশগ্রহণ করছেন।
বুট ক্যাম্পের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা প্রযুক্তিগত বিষয়ে জ্ঞান এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।
পাশাপাশি, তারা ‘টেক ফর গুড’ প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।
এ বছর ১২০ জন অংশগ্রহণকারী, ৫৬ জন নারী।
২০০৮ সালে প্রোগ্রামটি শুরু হওয়ার পরে, এ বছরই সবচেয়ে বেশি নারী অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করছেন।
ডিজিটাল ট্যালেন্ট কীভাবে লৈঙ্গিক বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা রাখতে পারে সেই বিষয়ে অন্যতম অতিথি হিসেবে আলোকপাত করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, “আমাদের নারী শিক্ষার্থীদের স্টেম-ভিত্তিক (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, গণিত) শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি তাদের বিকাশে সমান সুযোগ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রয়োজনীয়তা বেড়েই চলেছে। এক্ষেত্রে ‘সিডস ফর দ্যা ফিউচার’ নিবেদিতভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ থেকে পাঁচজন মেধাবী নারী এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করছেন। এজন্য আমরা আনন্দিত। আমার বিশ্বাস, তাদের সাফল্য বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে অবদান রাখতে এবং আরও নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে।”
মেধাবী তরুণদের বিকাশে হুয়াওয়ের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বলেন, “সিডস’ প্রত্যাশা, আগ্রহ ও ভবিষ্যতকে তুলে ধরে। অনেকদিন ধরে চলতে থাকা এ করপোরেট ফ্ল্যাগশিপ সিএসআর প্রোগ্রামটি প্রায় ১৪০টি দেশ ও অঞ্চলে পরিচালিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ৫শ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো হচ্ছে। ‘সিডস’ থেকে এ প্রোগ্রাম ‘গ্লোবাল ফরেস্ট’ -এ পরিণত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতের মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন। দক্ষ তরুণরাই ডিজিটাল রূপান্তর ও টেকসই প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি। আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি, এই তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাদের স্বপ্ন পূরণের মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থপতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবে।”
এরপর ‘সিডস’ প্রোগ্রামটি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন-আসিয়ান ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ড. ইয়াং মি এং, টিএটি’র ডিজিটাইজেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ডেপুটি গভর্নর নিথি সিপ্রে, হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন এবং হুয়াওয়ে থাইল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী আবেল ডেং।
আজ থেকে সাইট ভিজিটসহ তাদের সাংস্কৃতিক ও ডিজিটাল যাত্রা শুরু হবে।
সাইট ভিজিটের মধ্যে রয়েছে: ব্যাংককে জাতিসংঘের রিজিওনাল হাব, মেটাভার্স এক্সপো এবং ব্যাংককের গ্র্যান্ড প্যালেসে আয়োজন।
পাশাপাশি, খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণকারীদের ফাইভজি, এআই ও ক্লাউড কম্পিউটিং’র মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগুলোর প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন।
ডিজিটাল ক্যাম্প চলাকালীন অংশগ্রহণকারীরা দলে বিভক্ত হয়ে ‘টেকফরগুড’ নিয়ে ধারণা উপস্থপন করবেন, যেখানে তারা উন্নত বিশ্ব বিনির্মাণে তাদের ভাবনা তুলে ধরবেন।
বিজয়ী দল সিঙ্গাপুরে ২৯ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য অ্যাকসেলেরেটর ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করবে। এ ক্যাম্পে তারা শীর্ষ পর্যায়ের উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের সাথে দেখা করতে পারবেন, তাদের উদ্যোগ বিস্তৃত করার সুযোগ পাবেন এবং সে উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাজারে প্রবেশ করতে পারবেন।
হুয়াওয়ের ফ্ল্যাগশিপ ‘করপোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি প্রোগ্রাম সিডস ফর দ্যা ফিউচার’-এ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। আইসিটি ট্যালেন্ট তৈরিতে অনুপ্রাণিত করতে এবং এ বিষয়ে তরুণদের সমাজে বিদ্যামান নানা চ্যালেঞ্জের ডিজিটাল সমাধান নিয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করতে ২০০৮ সালে থাইল্যান্ডে এ প্রোগ্রাম চালু করা হয়। প্রোগ্রামটির মাধ্যমে ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত ১৩৭টি দেশ ও অঞ্চলে ৫শ’র বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো গিয়েছে।
ওএফএস।