আসছে ‘মাইক্রোসফট স্টার্ট-আপ ফাউন্ডার্স হাব’
এশিয়া অঞ্চলের সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলোকে তাদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করার ধারািবাহিকতায় ‘মাইক্রোসফট’ বাংলাদেশে নিয়ে এলো ‘স্টার্ট-আপ ফাউন্ডার্স হাব’। একটি নতুন প্লাটফর্ম। যার সাহায্যে স্টার্ট-আপ বা সূচনাকারী তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসায় ধারণাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবেন এবং তাদের কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত করার সুযোগ লাভ করবেন।
তাদের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন থাকে। স্বপ্নগুলো পূরণের জন্য মাইক্রোসফট স্টার্ট-আপ ফাউন্ডার্স হাব প্লাটফর্মের মাধ্যমে মোট ৩ লাখ মার্কিন ডলারের অর্থ সহায়তা প্রদান করবে মাইক্রোসফট।
স্টার্ট-আপগুলো নিরাপদ ক্লাউড প্লাটফর্ম মাইক্রোসফট আযুর, মাইক্রোসফট ৩৬৫, গিটহাব এন্টারপ্রাইজ, ভিজ্যুয়াল স্টুডিও এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করতে পারবে।
প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি মাইক্রোসফটের স্টার্ট-আপ ফাউন্ডার্স হাব মেন্টরশিপের মাধ্যমে স্টার্টআপগুলোকে তাদের লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
উদ্যোক্তারা প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন এবং তাদের স্টার্ট-আপগুলোকে কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা লাভ করতে পাবেন।
ইন্ডাস্ট্রির লিডারদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্যও করা হবে।
স্টার্টআপের বিকাশ ও গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য মাইক্রোসফট লার্নসহ স্টার্টআপ প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করার সুযোগ দেবে মাইক্রোসফট স্টার্ট-আপ ফাউন্ডার্স হাব।
বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের উদ্ভাবন
প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য উদ্ভাবনের কেন্দ্র ও ক্রমবর্ধমান ব্যবসা খাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে বাংলাদেশ । এ দেশে ২০১৩ সালের পর থেকে ৭শ ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করা হয়েছে। ‘ফিনটেক’, ‘লজিসটিকস’, ‘মোবিলিটি’, ‘ই-কমার্স’ ও রিটেইল-ভিত্তিক স্টার্টআপ তৈরি করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগগুলো ভূমিকা রাখছে।
স্টার্ট-আপে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিপ্রেমী উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টার জন্য বাংলাদেশে একটি স্টার্টআপ ইকো-সিস্টেমও গড়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। তারা জানিয়েছেন, স্টার্টআপগুলোকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাবেন।
মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ইউসুফ ফারুক বলেছেন, ‘উদ্যোক্তাদের চাহিদা পূরণ ও তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করতে ডিজাইন করা হয়েছে ‘মাইক্রোসফট ফর স্টার্টআপস ফাউন্ডারস হাব’। বাংলাদেশী স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত সময়োপযোগী। উপযুক্ত পরিবেশ, দ্রুত ডিজিটালাইজেশন ও নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করার প্রবণতার কারণে দেশী স্টার্ট-আপগুলো সমাজের সকল স্তরে পরিবর্তন নিয়ে আসার সম্ভাবনা রাখছে। আমরা স্থানীয় স্টার্ট-আপগুলোর সঙ্গে একত্রে কাজ করার মাধ্যমে উদ্ভাবন চালিয়ে যেতে ও সেগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে প্রস্তুত।”
বাংলাদেশের স্টার্ট-আপ ইকো-সিস্টেমের ক্ষমতায়ন
এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, এক্সেলারেটর বা ইনকিউবেটরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার প্রয়োজন নেই বা বিনিয়োগের প্রমাণ দিতে হবে না বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট। প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্ট-আপগুলো শুধুমাত্র তাদের আইডিয়া ও আকাঙ্খার ভিত্তিতেই প্রগ্রামে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে। কেননা, পৃথিবীর প্রতিটি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। এই ধারাবাহিকতায়ই স্টার্ট-আপ উদ্যোক্তাদের বেড়ে উঠার সুযোগ নিয়ে এসেছেন তারা।
বাংলাদেশের স্টার্টআপ খাতে কর্মরত ১৫ লাখ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও জ্ঞান সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মাইক্রোসফট। স্থানীয় সমাজেও বিনিয়োগ সামঞ্জস্যপূর্ণ। মাইক্রোসফটের স্টার্ট-আপ ফাউন্ডারস হাব প্রকৌশল বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি মাইক্রোসফট রিয়্যাক্টরসে অন্তর্ভুক্ত স্টার্ট-আপগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ তৈরি করবে। বাংলাদেশী স্টার্ট-আপগুলোর জন্য একটি বড় সুযোগও হবে। কারণ উদ্যোক্তারা প্রগ্রামের মাধ্যমে মাইক্রোসফটের অংশীদার ইকো-সিস্টেমের অংশ হবেন। তাদের যাত্রা শুরু করার সুযোগও লাভ করবেন।
প্রযুক্তিগত সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে মাইক্রোসফট বাংলাদেশের স্টার্ট-আপগুলোর বৃদ্ধিকে ত্বরাণ্বিত করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার অংশ হিসেবে মাইক্রোসফট এশিয়া কাজ করবে। তাদের স্টার্ট-আপ প্ল্যাটফর্ম ‘শি লাভস টেক’ও বাংলাদেশের নারী-নেতৃত্বাধীন স্টার্টআপগুলোর উন্নতির জন্য অনেক বছর ধরে অংশীদারিত্ব করবে বলেছেন তারা।
ছবি : মাইক্রোসফট স্টার্ট-আপস ফাউন্ডার্স হাব লঞ্চে মূল বক্তব্য রাখছেন সুখ হন চিয়াহ। তিনি জেনারেল ম্যানেজার-মাইক্রোসফট সাউথ-ইস্ট এশিয়া নিউ মার্কেটস। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা।
ওএফএস।