ওমর বানিয়েছে সংবেদনশীল জামা ও দস্তানা
ওমর ওয়ায়েলের জন্য প্রেরণা ছিল এই কাজে-বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রাযুক্তিক ছবির প্রবাদ পুরুষ স্টিভেন স্পিলবার্গের ২০১৮ সালের সিনেমা ‘রেডি প্লেয়ার (ওয়ান)’। তার অভিনব ভাবনাটির জন্ম সেখান থেকে। ছবিটি দেখে, দেখে এরপর সে নিজের ভার্চুয়াল একটি সামাজিক বিশ্ব গড়েছে। আশ্চর্য এই কীর্তির নায়কের বয়স মোটে ১৩। সে কিশোরবেলায় পা দিয়েছে।
একটি ছেলে ও। জন্ম এবং বেড়ে উঠেছে মিশরে। সবসময়ই ওমর ওয়াহেলের প্রযুক্তি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সির প্রতি তুমুল আগ্রহ। ফলে সে স্পিলবার্গসহ অন্যদের ছবিগুলো দেখে বসে, বসে আর ভাবে। নতুন কিছু বানাতে পথ চলে।
এই দারুণ ছেলেটি মোটে ৯ বছর বয়সে তার জীবনের প্রথম কীর্তি গড়েছে। একটি ‘রোবট’ বানিয়েছে আরবের একটি উন্নত দেশের বহু পুরোনো সমৃদ্ধশালী ও বিশ্বসেরা একটি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনের আঁতুড়ঘরে থেকে। তাদের পিরামিড, স্ফিংসের কথা কে না জানেন? কে পড়েননি? দেখেননি কোনোদিন ছবি ও সিনেমায় বা খবরের কাগজে?
তবে স্পিলবার্গের এই ছবি, বরাবরের মতো যেখানে নতুন পৃথিবী, সিনেমাটি একটি কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত, যেখানে বেশিরভাগ মানবতা থাকে ভার্চুয়াল সিমুলেশন বা কম্পিউটারে তৈরি অবাস্তবতার নকলে। এই অন্য পৃথিবীই তাকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করেছে ভার্চুয়াল স্যোশাল ওয়ার্ল্ডসে ছুটে গিয়ে আগুন জ্বালাতে। সেটি হলো ‘মেটাভার্স’। ভিডিও এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এখানে বাস্তবের একটি জগৎ তৈরি হয়।
এই কাজের একজন নায়ক হলো, ওমর ওয়ায়েল। মায়ের পুরোনো কাপড়গুলো নিয়ে কাজে নেমে গেল সে। এরপর কাজ করতে, করতে সেখানে নানা ধরণের তার ও অন্যান্য কিছু দিয়ে বানিয়েছে সে একটি সংবেদনশীল ‘জামা’ বা ‘কোট’। তার তৈরি একটি সংবেদনশীল ‘দস্তানা’ও আছে।
সে একটি সফটওয়ারের ওপর এখন কাজ করছে। আশা করছে ওমর ওয়াহেল, এর মাধ্যমে তার মতো মানুষদের মেটাভার্সে ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে।
কীভাবে এই ভাবনাগুলোর শুরু হলো? দারুণ এই বিজ্ঞানী বলেছে, ‘আমরা মাথায় আইডিয়াগুলো ছিল। তবে যখন মেটাভার্স আরো সহজ হয়ে এলো, সহজে সেখানে আমরা যেতে পারতে শুরু করলাম আমাদের দেশে, তখন থেকে আমি আবিষ্কারের পথে নেমে গেলাম।’
এজন্য অবশ্য বিশ্বের টেকনলজি খাতের এই দিকগুলোতে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধন্যবাদ জানাতে হয়। তারা গত কয়েক বছরে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন।
প্রযুক্তির পোকা ওমর ওয়ায়েল জানিয়েছে, ‘প্রযুক্তিতে আমাদের অবিষ্কারগুলো ও কাজ প্রাকৃতি পরিবশকে বাঁচতে সাহায্য করে এবং ট্রাফিক জ্যাম কমায়, যেহেতু বাইরে যাই না।’
‘যে গবেষকরা কেমিক্যাল গবেষণা করছেন, তাদের ব্যয়বহুল উপাদানগুলো কিনতে হচ্ছে না। তারা একটি ভার্চুয়াল ল্যাবের মাধ্যমে তাদের কেমিক্যালগুলো এখান থেকে ওখানে নিয়ে যেতে পারছেন। সেখানে তারা সত্যিকারের মতো দেখতে কাজও করতে পারছেন।’
কয়েকটি মিশরের ও বিদেশের অন্তর্জাতিক পুরস্কার জয় করেছে নিজের ‘দি আদার ওয়ার্ল্ড’ প্রকল্পের জন্য ওমর ওয়াহেল। এর মাধ্যমে আরো টাকা পাবে ও নিজের এই প্রকল্পকে স্বপ্নের রূপ দিতে পারবে বলে আশাবাদী এই মিশরের কিশোর।
ওএস।