টেলিযোগাযোগ খাতের আলোচিত ঘটনা ফাইভ-জি’র উদ্বোধন
২০২১ সালের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভ-জি'র উদ্বোধন। ১২ ডিসেম্বর ছয়টি স্পটে হুয়াওয়ে বাংলাদেশ লিমিটেডের সহযোগিতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এই সেবা চালু করেছে।
রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি-৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ ভবন এলাকা, সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা এবং টুঙ্গিপাড়া—এই ছয় স্পট ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক কাভারেজে এসেছে। প্রাথমিকভাবে এই ছয়টি স্থানে শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ব মোবাইল অপারেটর টেলিটক এর ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে।
টেলিটক ২০২১ সালে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করলেও নতুন বছরে তারা ব্যাপকভাবে ফাইভ-জি সেবা দিতে কাজ করছে। নতুন বছরে ২০০ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টেলিটকের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। এছাড়া টেলিটক ও বিটিসিএল দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনোমিক জোনগুলোতেও নতুন বছরে এই সেবা দেবে।
২০২১ সালে বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেল ফাইভ-জি চালু করতে পারেনি। যদিও ২০১৮ সালের জুলাই মাসেই ঢাকায় ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালের মার্চে তারা বেতার তরঙ্গ নিলাম করবে। তারপর বেসরকারি মোবাইল অপারেটরগুলো ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করতে পারবে।
টেলিটকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করলেও এই মুহূর্তে ফাইভ-জি সিম চালু করেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফোর-জি সিম দিয়েই উল্লিখিত ছয় স্থানে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক পাবে গ্রাহকরা। সেক্ষেত্রে গ্রাহকের স্মার্টফোনটি ফাইভ-জি সমর্থনযোগ্য হতে হবে।
ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালুর ফলে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত মানের ভয়েস কল ও ফোরজি থেকে বহুগুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীর রোবটিক সার্জারি করা যাবে। ড্রাইভারবিহীন গাড়ি চালানো যাবে, স্মার্ট ফ্যাক্টরি স্থাপনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যাবে।
এ ব্যপারে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, অনেক উন্নত দেশও আমাদের আগে ফাইভ-জি চালু করতে পারেনি। ২০২০ সালে বিশ্বের ৬/৭টি দেশ ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করতে সক্ষম হয়। মালয়েশিয়া আগামী মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছে। আমাদের জন্য অহংকারের বিষয় হচ্ছে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এখনও ফাইভ-জি যুগে যেতে পারেনি, আমরা যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, টেলিকমিউনিকেশনে ফাইভ–জি হলো ব্রডব্যান্ড সেলুলার নেটওয়ার্কগুলোর জন্য পঞ্চম প্রজন্মের প্রযুক্তির মান, যেটি সেলুলার ফোন কোম্পানিগুলো ২০১৯ সালে বিশ্বব্যাপী স্থাপন করা শুরু হয়েছিল এবং ফোর–জি নেটওয়ার্কগুলোর পরিকল্পিত উত্তরসূরি, যা বেশির ভাগ বর্তমান মুঠোফোনগুলোতে সংযোগ প্রদান করে। জিএসএম অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ফাইভ–জি নেটওয়ার্কের ১ দশমিক ৭ বিলিয়নের বেশি গ্রাহক থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
/এএস