রুদ্বশ্বাস ম্যাচ জিতে টিকে থাকল চট্টগ্রাম

উত্তেজনা, নাটকীয়তা, জয়-পরাজয়ের দোদুল্যমনতা সবই এসে ভর করেছিল সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ম্যাচে। শেষ ওভারে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার প্রয়োজন ৯ রানের। ক্রিজে আছেন তামিম ইকবাল। তার রান ৫৫ বলে ৭৩ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলেই কায়েস আহমেদ আউট হয়ে গেলে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আসেন জাতীয় দলের ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। বোলার চলতি আসেরর একমাত্র হ্যাটট্রিক ম্যান মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। শেষ ৫ বলে প্রয়োজন সেই ৯ রানেরই। একদিকে জাতীয় দলের দুই ওপেনার, আবার একটি করে ওয়াইড ও নো বল ছিল শেষ ৫ বলে। তারপরও প্রয়োজনীয় ৯ রান করতে পারেনি ঢাকা। সংগ্রহ করে ৫ রান। হার মানে মাত্র ৩ রানে। এই জয়ে প্লে অফ রাউন্ডে যাওয়ার সম্বাবনা বাঁচিয়ে রাখল চট্টগ্রাম।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামের ৬ উইকেটে করা ১৪৮ রানের জবাব দিতে নেমে মাত্র ৩ রানের জন্য ম্যাচ জিততে না পারাটা ছিল মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার জন্য দু:খজনক। কারণ ক্রিজে যখন তামিম ইকবালের মতো সেট ব্যাটসম্যান ছিল, উইকেটও হাতে ছিল ৫টি তারপরও সেই ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে খেলা শেষ করতে হয় তাদের। যদিও তামিম ইকবাল শেষ ওভারে মাত্র একটি বল খেলার সুযোগ পেয়ে ১ রান করেন। সর্বনাশ করেন জাতীয় দলের ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। মৃত্যুঞ্জয় প্রথম বলেই কায়েস আহমদক বোল্ড করার পর নাঈম খেলতে এসে শেষ ৫ বলের মাঝে একটি ওয়াইড ও একটি নো বল পান। ৫ বলে খেলে মাত্র ২ রান করেন নাঈম। তিনি প্রথম ২ বলে কোনো রানই করতে পারেননি। তৃতীয় বল ছিল ওয়াইড। ওভারে আসে প্রথম রান। চতুর্থ বলে নেন ১ রান। ২ রান নেওয়া যেতো। কিন্তু তামিম ইকবাল নিজেই স্ট্রাইক ধরে রাখেন। ২ বলে প্রয়োজন ৭ রানের। তামিম ইকবাল যখন আছেন, তখন কাজটি খুব কঠিন নয়। দুইটি বাউন্ডারি কিংবা একটি ছক্কাই যথেষ্ট। কিন্তু তামিম ইকবাল পারেননি। আসলে তাকে করতে দেননি। মৃত্যুঞ্জয়ের দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে পরাস্ত হন তামিম। তারপরও এক রান আসে লেগবাই থেকে। ফলে শেষ বলে প্রয়োজন পড়ে ৬ রানের। স্ট্রাইকে নাঈম। মৃত্যুঞ্জয়ের ফুল টস বলটি নাঈম পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে দেন। কিন্তু আম্পায়ার তার আগেই ডাকেন নো বল। জয়ের ব্যবধান নেমে আসে ৫ রানে। শেষ বল ফ্রি হিট। একমাত্র রান আউট হওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই আউট হওয়ার। বাউন্ডারি হলে খেলা টাই। ম্যাচ গড়াবে সুপার ওভারে। ছক্কা হলে ঢাকার জয় ৪ উইকেটে। তবে নাঈম এমন সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি।
এবারও মৃত্যুঞ্জয় দিয়েছিলেন লো ফুল টস। নাঈম ব্যাট-বলে সংযোগ ঘটালেও সীমানা পার করতে পারেননি। আসে ১ রান। শেষ হয় রুদ্ধশ্বাসে ভরা টানটান উত্তেজনার ম্যাচ। ম্লান হয়ে যায় তামিম ইকবালের ৫৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে করা অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস। প্রথম পর্বের ম্যাচেও চট্টগ্রাম জিতেছিল ৩০ রানে। তাদের ৩, ৪ জয়ের দুইটিই ঢাকার বিপক্ষে।
৪ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মৃতুঞ্জয়। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয়বার ম্যাচ সেরা হওয়া। আর শরিফুল ২৮ রানে নেন ২ উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম শামীম হাসান ( ৩৭ বলে ৫২) আফিফ হোসেন ( ২৭), উইল জ্যাকস (২৬) ও বেনি হাওয়েলের ( ২৪*) ব্যাটে ভর করে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে। এই ম্যাচে চট্টগ্রাম আবারো তাদের অধিনায়ক পরিবর্তন করে। নাঈম ইসলাম সেরা একাদশে জায়গা হারালে দায়িত্ব পালন করেন আফিফ হোসেন। নাঈম ইসলামের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি। সেখানে আফিফ প্রথম দায়িত্ব পেয়েই দলকে জয় এনে দিয়েছেন।
এই জয়ে চট্টগ্রামের পয়েন্ট ৯ খেলায় ৮। আর ঢাকার পয়েন্ট ৮ ম্যাচে ৭। ৪ ম্যাচ পর তারা আবার পেল হারের স্বাদ। তাদের পরের দুই মাচের একটি আগামীকাল বুধবার খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। ঢাকায় ফিরে শেষ ম্যাচ খেলবে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে।
এমপি/এসআইএইচ
