অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ অষ্টম
আবারো বৃথা গেল আরিফুলের সেঞ্চুরি

ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে পারেনি। ব্যাটিং ব্যর্থতা ছিল সেমি ফাইনালের প্লে অফ ম্যাচেও। সব কিছু হারিয়ে ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সপ্তম/অষ্টম স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। আরিফুল ইসলামের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ২৯৩ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের যুবাদের। ডিওয়াল্ড ব্রেভিসের পাল্টা সেঞ্চুরিতে ৭ বল হাতে রেখেই ২ উইকটে ম্যাচ জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪৮ ওভার ৫ বলে ৮ উইকেটে করে ২৯৮ রান। জয় সূচক রান আসে রকিবুল হাসানের বলে লিয়াম অ্যাল্ডারের ছক্কায়। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ আট নম্বর হয়ে দেশে ফিরবে। ইংল্যান্ড ও ভারেতর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া। এ ছাড়া পাকিস্তান পঞ্চম ও শ্রীলঙ্কা ষষ্ঠ হয়েছে।
এ ম্যাচে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে ইফতেখার ছিলেন না। তাকে সেরা একাদশেই রাখা হয়নি। মফিজুলের সঙ্গে ওয়ান ডাউন থেকে প্রমোশন দিয়ে ইনিংসের উদ্বোধন করতে পাঠানো হয় প্রান্তিক নওরোজ নাবিলকে। ইফতেখারের পরিবর্তে সুযোগ দেওয়া হয় তাহজিবুল ইসলামকে। তানজিম হাসান সাকিবের পরিবর্তে সুযোগ পান মুশফিক হাসান।
আসরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ভালো একটা সূচনা পান। মফিজুল-নাবিলের উদ্বোধনী জুটিতে ৫৭ রান আসে। মফিজুল ২৯ রানে করে আউট হওয়ার পর শতরানের আগে হাারয় আরও দুই উইকেট। নাবিল ৩৮ ও আইচ মোল্লা ১ রান করে আউট হয়ে যান। ৮৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আরিফুল ইসলাম জ্বলে উঠেন। আগের ম্যাচে করেছিলেন ১০০ রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল সব উইকেট হারিয়ে ১৭৫। এবার আরিফুল করেন ১০২ রান। বাংলাদেশ কিন্তু এবার আর অলআউট হয়নি। ৮ উইকেটে করে ২৯৩ রান। আরিফুল সেঞ্চুরি করার পথে মো. ফাহিম ও এসএম মেহরবের সহায়তা পেয়েছিলেন বেশি। দুই জনেই ৩৬ রান করে করেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ফাহিমকে নিয়ে যোগ করেন ৫৫ রান। তবে বড় জুটি হয় পঞ্চম উইকেট। এ জুটিতে মেহরবের সঙ্গে ১৬ ওভার ৩ বলে যোগ হয় ১১৪ রান। মূলত এ রানই দলের সংগ্রহকে বিশাল করতে বড় ভূমিকা রাখে। আরিফুল মাফাকার বলে চার মেরে ১০১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও তিনি সেঞ্চুরি করার পরপরই আউট হয়ে যান। ১০৩ বলে ১০২ রান করে আরিফুল বোস্টের বলে বেন হারডিনের হাতে ধরা পড়েন। তার ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কা ও ৯টি চার। দক্ষিণ আফ্রিকার মাফাকা ৫৫ রানে নেন ৩ উইকেট। লিয়াম অ্যাল্ডার ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ৪৬ রান।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ডিওয়াল্ড ব্রেভিসের ব্যাট ভর করে এগুতে থাকে। দলীয় ২৪ রানে ওপেনার স্মিথের (১০) উইকেট হারালেও রোনান হারমান ও ব্রেভিস মিলে দলীয় শতরান পার হয়ে যায়। জুটিতে ৮৬ রান আসে। রোনান হারমান ৪৬ রান করে রিপন মণ্ডলের শিকার হন। এ জুটি ভেঙে যাওয়ার মেহরবের জোড়া আঘাতে দ্রুতই দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১২৭। এরপর ব্রেভিস সোলোমন (১৫), ম্যাথিউ বোস্টকে ( ৪১) নিয়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান ব্রেভিস। ১১১ বলে সেঞ্চুরি করার পর তিনি আউট হন রিপন মণ্ডলের বলে অধিনায়ক রকিবুলের হাতে ধরা পড়ে ১৩৮ রানে। তখন দলের রান ৭ উইকেটে ২৬৩। দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৬ বলে ৩১ রানের। পরে আর এক উইকেট হারিয়ে ৭ বল হাতে রেখেই তারা জয়ের নাগাল পেয়ে যায়। মেহরাব ৪৮, মুশফিক হাসান ৫২ ও রিপন মণ্ডল ৬২ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
এমপি/এসএন
