টর্নেডো গতিতে খুলনার জয়
ঢাকায় ফিরে বিপিএলে প্রথম ম্যাচে সেই রান খরায়ই পড়েছে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেট সানরাইজার্স ৫ উইকেটে করে মাত্র ১৪২ রান। তবে পরে এই রান খরার ম্যাচে আবার সবাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন। কারণ, খুলনা টাইগার্সের ঝড়ো ব্যাটিং। সিলেটের ওভার প্রতি ৭.১০ করে সংগৃহিত রান খুলনা অতিক্রম করেছে ওভার প্রতি ১০.০৪ করে। মাত্র ১৪.২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে ৯ উইকেটে। সময় নেয় মাত্র ৬৯ মিনিট।
এই জয়ে খুলনা ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পেছনে ফেলে চারে উঠে এসেছে। সিলেটের ছিল টানা তৃতীয় হার। ৫ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ২। অবস্থান সবার নিচে।
প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে রান খরা পড়া দলটি কিন্তু সহজেই হার মানে না। কখনো কখনো জয়ও পায়। যদিও সেই জয়ের সংখ্যা খুবই নগন্য। মাত্র দুইটি। এই দুটিই ছিল চট্টগ্রামে। ঢাকায় কোনো দল এত কম রান করে জিততে পারেনি। তবে হারলেও খুলনার মতো টনের্ডো গতিতে ম্যাচ জিততে পারেনি। নাজমুল ইসলাম অপুর বলে থিসারা পেরেরা পর পর দুই বলে চার ও ছক্কা মেরে দলকে এনে দেওয়া জয়ে ইনিংসে চার ও ছয়ের ব্যবহার ছিল খুব বেশি। এখান থেকেই এসেছে খুলনার ১৪৪ রানের মাঝে ৯৮ রান। ৭ ছক্কার সঙ্গে ১৪ বাউ-ারি। ৮৬ বল খেলে জয় পাওয়া ইনিংসে আবার ৩১ ছিল আবার ডট। অর্থাৎ ৫৫ বল থেকে এসেছে ১৪৪ রান।
৯ উইকেটে জয়। তার মানে ক্রিজে যারাই গিয়েছেন তারাই রানের দেখা পেয়েছেন। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর এই ম্যাচে রানের দেখা পেয়েছেন সৌম্য সরকার। ৩১ বলে ১ ছক্কা ও ৬ চারে তিনি ৪৩ রান করে নাজমুল ইসলাম অপুর বলে জুবায়ের হোসেনের হাতে ধরা পড়েন। সৌম্যর রানের সঙ্গে বলের ব্যবহার দেখে কিন্তু বুঝার উপায় নেই দলের ইনিংস টনের্ডো ছিল? তা’হলে কে খেলছে টনের্ডো ইনিংস? তিনি ছিলেন আন্দ্রে ফ্লেচার। ৫টি করে চার-ছক্কা মেরে তিনি মাত্র ৪৭ বলে অপরাজিত ৭১ রান করেন। সৌম্য সরকারের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ১০.৫ ওভারে আসে ৯৯ রান। ব্যাাটিং পাওয়ার প্লেতে আসে ৬৫ রান। সৌম্য আউট হওয়ার থিসারা পেরেরা এসে যেন সেই টনের্ডোতে আরও গতি বাড়িয়ে দেন।
মাত্র ৯ বলে ১ ছক্কা ও ৩ চারে অপরাজিত ২২ রান করেন। আন্দ্রে ফ্লেচারের সঙ্গে তিনি দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মাত্র ৩.৩ ওভারে যোগ করেন ৪৫ রান। অধিনায়ক মোসাদ্দেক খুলনার রানের চাকা আটকানোর জন্য নিজেসহ ৬ জন বোলার আক্রমণে এনেও ব্যর্থ হন। এদিন সিলেটের মেইন বোলার তাসকিন আহমেদ ব্যাক পেইনের কারণে খেলতে পারেননি।
দুই দল মাঠে নামার আগে সিেেলটের শক্তি ছিল ব্যাটিং আর খুলনার ছিল বোলিং। সেখানে সফল হয়েছে খুলনার বোলিং। দলপতি মুশফিক টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দেওয়ার পর তার প্রতিদান পান তাদের কাছ থেকে। সিলেটের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং পাওয়ার প্লে কাজেই লাগাতে দেননি খুলনার বোলাররা। ১ উইকেটে সংগ্রহ হয় মাত্র ২৪। এতেই সিলেটের শক্তিশালী ব্যটিং লাইন থাকার পরও বড় সংগ্রহের পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। সে পথ আরও কঠিন হয়ে উঠে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে। ওভার তখন ৮.১। একে একে আউট হয়েছেন লিন্ডলে সিমন্স (৬), এনামুল হক বিজয় (৪), কলিন ইনগ্রাম (২)। অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে দলপতি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত হাল ধরেন। অনেকটা সফলও হন তারা। ৮.২ ওভারে যোগ হয় ৬৮ রান। মোসাদ্দেক রান বাড়ানোর তাড়না থেকে খালেদ আহমেদকে মেরে খেলতে গিয়ে জাকের আলীর হাতে ধরা পড়লে শেষ হয় তার ৩০ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৪ রানের ইনিংস। ওভার বাকি তখনো ৩.৩টি। এ সময় মোহাম্মদ মিঠুন ঝড়ে রান যোগ হয় ৪০। মোাসদ্দেক আউট হওয়ান সময় মিঠুনের রান ছিল ৩৭ বলে ৪৪। সেখানে শেষ ২১ বলের মাঝে ১৪ বল খেলে যোগ করেন ৩৫ রান। ২ ছক্কার সঙ্গে ছিল ৩ চার। ৫০ করেন ৪১ বলে। আউট হন এক বল বাকি থাকতে সৌম্য সরকারের বলে মেহেদী হাসানের হাতে ধরা পড়ে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আন্দ্রে ফ্লেচার
এমপি/এমএমএ/