সাকিবের ছুটি মঞ্জুর, যাচ্ছেন না নিউ জিল্যান্ড
ছবি : সংগৃহীত
পারিবারিক কারণ দেখিয়ে নিউ জিল্যান্ড সফরে না যেতে ছুটি চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার সে ছুটি মঞ্জুর করার কথা করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে দেখা করতে এসে এ তথ্য জানান তিনি। প্রথমবারের মতো মেয়েদের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে সুযোগ করে নেওয়া বাংলাদেশ দল দেশে এসে হোটেল সোনারগাঁওয়ে কোয়ারেনটিনে আছে।
বিসিবি সভাপতি জানান, সাকিবের ছুটি মঞ্জুর হয়েছে। তাই ৯ ডিসেম্বর দলের সঙ্গে নিউ জিল্যান্ড যাচ্ছেন না সাকিব। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সাকিব নিউ জিল্যান্ড সফরে যাবেন না। এ বছরের মার্চে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে দলের সঙ্গে তিনি যাননি। ২০১৮ সালে টেস্ট দলের অধিনায়ক থাকার পরও সাকিব ছুটি নিয়েছিলেন। তার আগের বছর ২০১৭ সালে নিউ জিল্যান্ড সফরেই তিনি খেলেছিলেন ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের সেরা ২১৭ রানের ইনিংস।
শনিবার ১৮ সদস্যের দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। সে দলেও ছিলেন সাকিব। তার এ দলে থাকা নিয়ে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কারণ তিনি যে নিউ জিল্যান্ড যাবেন না, এ রকম গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই। এরপর প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু সাকিব আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। তাকে আনুষ্ঠানকিভাবে আবেদন করার কথা বলা হয়েছিল। এরপর বিসিবি বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এমন বার্তা পাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সাকিব ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। সোমবার তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ রকম ঘটনা বিসিবির জন্য বিব্রতকর কি না- জানতে চাওয়া হলে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘বিব্রতকর হওয়ার কিছু নেই। আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতাম। আগে সব কিছু অনানুষ্ঠানিক হয়ে আসছে। তাতে করে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এটা যেন তৈরি না হয়,তা ট্রান্সপারেন্ট করতে জোর দিয়ে একটা কথা বলা হচ্ছে, তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে।’
টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি সাকিবের অনাগ্রহ নতুন কিছু নয়। খেলতে না চেয়ে ছুটি চাওয়াও নতুন বিষয় নয়। কখনো পারিবারিক, কখনো সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে, কখনো বিশ্রাম, কখনো নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য টেস্ট না খেলে আইপিএল খেলা, এভাবে কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে সাকিব টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। আবার আইসিসিরি নিষেধাজ্ঞার কারণেও তার খেলা হয়নি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি সাকিবের এ রকম অনাগ্রহ শুরু হয় ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে। সে ধারা এখনও অব্যাহত!
সাকিব যে নিউ জিল্যান্ড সফরে যাবেন না ,তা তিনি প্রথমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাননি। যে কারণে তাকে প্রথমে দলে রেখেছিলেন নির্বাচকরা। পরে আনুষ্ঠানকিভাবে তিনি ছুটি চেয়ে আবেদন করেন।
এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘অবশ্যই সে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমরা আগে থেকেই বলে আসছি যে কেউ যদি ছুটি চায় বা খেলতে না চায়, ব্রেক চায়- আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এটা অফিসিয়ালি হতে হবে। যে ব্যাপারটার ওপর জোর দিচ্ছি তা হলো আমরা আগাম জানতে চাই। হঠাৎ করে একটা সিরিজের আগে জানলে আমাদের জন্য সমস্যা। আমরা জানুয়ারি থেকে যেটা করতে চাচ্ছি- কারও যদি বিশ্রাম বা ছুটির প্রয়োজন হয়, আমাদের আগে জানাতে হবে।’
এভাবে সফরের আগে দলের কজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ছুটি চাইলেই তা মঞ্জুর করা প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘যার বিশ্রাম দরকার, তাকে তো দিতে হবে। সে এখন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হোক বা না হোক। এখানে সাকিবের ইস্যুটা ভিন্ন। ও তো ইনজুরিতে না বা বিশ্রামও চায়নি। পারিবারিক কারণে সে ছুটি চেয়েছে।’
নিউ জিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দল প্রথম টেস্ট খেলবে ১ জানুয়ারি। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ৯ জানুয়ারি। আগে এক সপ্তাহের কোয়ারেনটিন শেষে খেলবে দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচ।
এমপি/টিটি/এসএন