রান ফোয়ারার ম্যাচে হ্যাটট্রিক ও জয় চট্টগ্রামের
বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্বেও সেই একই দৃশ্য। প্রথম ম্যাচে রান খরা, দ্বিতীয় ম্যাচে রান ফোয়ারা। শনিবার (২৯ জানুয়ারি) রান ফোয়ারা যেন আরো বেশি ছিল। সঙ্গে ছিল হ্যাটট্রিকও। স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চলতি আসরে প্রথমবারের মতো দুইশোর্ধ রান সংগ্রহ করে। ৫ উইকেটে করে তারা ২০২ রান। জবাব দিতে নেমে সিলেট সানরাইজার্সও কম যায়নি। তারা ৬ উইকেটে ১৮৬ রান করে হার মানে ১৬ রানে।
চট্টগ্রামের বড় ইনিংসের কারিগর দুই বিদেশি ওপেনার উইল জ্যাকস ও মিডল অর্ডারে বেনি হাওয়েল। সঙ্গে ছিল দুই দেশী আফিফ হোসেন ও সাব্বির রহমানের ছোট ছোট অবদান। জ্যাকস মাত্র ১৯ বলে করেন ৫২ রান। বেনি হাওয়েলের অবদান ছিল ২১ বলে অপরাজিত ৪১ রান। আফিফ ৩৮ ও সাব্বির ৩১ রান করেন। হ্যাটট্রিক করেন চট্টগ্রামের মৃত্যঞ্জয় চৌধুরী। তিনি পরপর তিন বলে এনামুল হক বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রবি বোপারাকে আউট করেন।
চট্টগ্রামের উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে মাত্র ৪.৪ ওভারে ৬২। এখানে বেশি আগ্রাসী ছিলেন উইল জ্যাকস। তিনি কী পরিমাণ আগ্রাসী ছিলেন তা ধারণা করার জন্য জুটিতে ৬২ রানের মাঝে তার অবদানের দিকে চোখ ফেরালেই ধারণা পাওয়া যাবে। জুটি ভাঙ্গে তিনি আউট হলে। তখন তার রান ৫২। ১৮ বলে ফিফটি করার পরই তিনি আউট হয়ে যান তাসকিনের বলে শর্ট ফাইন লেগে লিন্ডলে সিমন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে। তার ইনিংসে ছিল ৩টি ছয় ও ৭টি চার। আউট হওয়ার আগে প্রতি ওভারে তিনি রান সংগ্রহ করেন যথাক্রমে ৬, ১২, ১৫ ও ১৯। যে ওভারে আউট হন সেই ওভারেও তিন বলে খেলে তিনি ১০ রান নিয়েছিলেন। তিনি আউট হওয়ার সময় কেনার লুইসের রান ছিল ৯ বলে মাত্র ৪। উইল জ্যাকস আউট হওয়ার পরপরই লুইসও আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৮ রানে সোহাগ গাজীর বলে সানজামুল ইসলামের হাতে ধরা পড়ে। দুই ওপেনার বিদায় নেয়ার পর বিশেষ করে উইল জ্যাকস আউট হওয়ার পর রানের সেই ফাল্গু ধারা না থাকলেও আফিফ ও সাব্বির তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৮ রান যোগ করেন ৭.৩ ওভারে। সাব্বির ২৯ বলে ৩১ ও আফিফ ২৮ বলে ৩৮ রান করে ফিরে যাওয়ার পর আবার ঝড় উঠে ইনিংসে। এবার ঝড় তুলেন বেনি হাওয়েল। তার ঝড়ে শেষ ৫ ওভারে রান আসে ৭১। হাওয়েলের ২১ বলে ইনিংসে ছিল ৩ ছক্কা ও ২ চার। এই ম্যাচ থেকে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া নাঈম ইসলাম ৮ রান করে আউট হওয়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ বল খেলে ২ ছক্কায় ১২ রান করে অপরাজিত থাকেন। সিলেটের হয়ে তাসিকন, সোহাগ গাজী, রবি বোপারা, মুক্তার আলী ও সানজামুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে সিলেটের শুরুটা ভালো হয়নি। আগের দিন মিনিষ্টার গ্রুপ ঢাকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানো লিন্ডলে সিমন্স ব্যক্তিগত ও দলগত ৯ রানে ফিরে গেলেও সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠে সিলেট ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও কলিন ইনগ্রামের ব্যাটে ভর করে।
দুজনের ব্যাটে ভর করে সিলেট ম্যাচ জেতার স্বপ্নে ছিল। জুটিতে ১১২ রান যোগ আসে ১২.৩ ওভারে। কলিন ইনগ্রাম ৩৭ বলে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৫০ রান করে আউট হলেও এনামুল ছিলেন তখনো। আলাউদ্দিন বাবুকে প্রমোশন দিয়ে কিছু রান বাড়ানোর জন্য চারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি কিছুই করতে পারেননি ১ রানে আউট হয়ে। এরপর রবি বোপারাকে নিয়ে এনামুল চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। জুটিতে ৩.২ ওভারে রান আসে ৪৪। কিন্তু তখনই ঘটে বজ্রপাত। এই বজ্রপাতের নাম মৃত্যঞ্জয়। পরপর তিন বলে প্রথমে এনামুল, পরে মোসাদ্দেক, অতপর রবি বোপারাকে আউট করে হ্যাটট্রিক করেন। ম্যাচের সব আকষর্ণ শেষ হয়ে যায় সেখানেই। এনামুল ৪৭ বলে ৩ ছক্কা ও ৯ চারে ৭৮ রান করেন। মৃত্যুঞ্জয় ৩৩ রানে ৩টি, নাসুম আহমেদ ১৮ রানে নেন ২ উইকেট।
এমপি/এমআইএইচ