তামিমের সেঞ্চুরিতে হাসলো ঢাকা
সেঞ্চুরির জবাবে সেঞ্চুরি। লিন্ডলে সিমন্সের সেঞ্চুরির জবাবে তামিম ইকবালের পাল্টা সেঞ্চুরি। সিমন্সের ১১৬ রানের জবাবে তামিমের অপরাজিত ১১১ রান। কিন্তু ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হেসেছে তামিম ইকবালের দল মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। টস হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট সানরাইজার্সের করা ৫ উইকেটে ১৭৫ রান ঢাকা টপকে যায় ১৭ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান করে। পাঁচ ম্যাচে ঢাকার দ্বিতীয় জয় আর তিন ম্যাচে সিলেটের দ্বিতীয় পরাজয়।একই সঙ্গে ঢাকারও প্রতিশোধও নেয়া হলো। ঢাকা পর্বে ঢাকাতে সিলেটের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে এবার ৯ উইকেটে জিতে প্রতিশোধ নিল।
চট্ট্রগাম পর্বের শুরুর দিনই চমৎকার একটি রান বন্যার ম্যাচ উপভোগ করেছেন সবাই। সঙ্গেহ বোনাস হিসেবে ছিল দুই দলের দুই ওপেনরেরর সেঞ্চুরি। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ যে এমন প্রাচুর্য্য ভরা হয়ে উঠবে তা কিন্তু দিনের প্রথম ম্যাচের আলোকে অনুমান করা যায়নি। প্রথম ম্যাচ ছিল যথারীতি রান খরা। যেমনটি ছিল ঢাকার দিনের প্রথম ম্যাচগুলো। ঢাকার দ্বিতীয় ম্যাচ ছিল আবার রানে ভরপুর। এবার চট্টগ্রামেও পেলো যেন তার পূর্ণতা।
ঢাকা জয়ী হয়েছে ৯ উইকেটে। আসলে এই জয় ১০ উইকেেটই হওয়ার কথা ছিল। সিলেটের টস হেরে ব্যাট করতে নেমে করা ৫ উইকেটে ১৭৫ রান ঢাকা তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ শাহজাদের ব্যাটিং তান্ডবে জয়ের কাছাকাছি পৌছেই গিয়েছিল। কিন্তু জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে দলীয়ং ১৭৩ রানে শাহজাদ আউট হয়ে যান আলাউদ্দিন বাবুর একমাত্র শিকারে পরিণত হয়ে সানজামুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। যে উচ্চবিলাসী শট খেলে তিনি আউট হয়েছেন সময়ের দাবীতে তার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। ৩৯ বলে ১ ছক্কা ও ৭ চারে শেষ হয় তার ৫৩ রানের ইনিংস। তিনি আউট হওয়ার আগে ১৭৫ রান তাড়া করতে হলে যেমনটি সূচনা করার প্রয়োজন ছিল দুই জনে মিলে সে রকমটিই করেছিলেন। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই রান চলে আসে ৭৪। বেশি আ্গ্রাসী ছিলেন তামিম ইকবাল। যেখানে তামিমেরই একার অবদান ছিল ৫৪ রানের। হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ২৮ বলে। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে বাউণ্ডারি মেরে তিনি তুলে নেন টি-টোয়ন্টি ক্যারিয়ারে ৪৩তম হাফ সেঞ্চুরি।
দলীয় শতরান আসে ৮.৫ ওভারে। তামিমের অবদান ৬৬ রানের। শাহজাদের ছিল ২৬ । দুই ব্যাটসম্যানের তান্ডবে দলনেতা মোসাদ্দেকের সব প্লান ওলট-পালট হয়ে যায়। বোলারের পর বোলার পরিবর্তন করেও কোনো কাজ হয়নি। যে বোলারই আক্রমণে এসেছেন, তাদের উপরই চড়াও হয়েছেন দুই ব্যাটসম্যান। যে স্পিন আক্রমণ ছিল সিলেটের ভরসা। আগের দুই ম্যাচে লড়াই করে একটিতে জয়ী হয়েছিল। এই ম্যাচে সব ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। একে সাত জন বোলারের সবাই ব্যর্থ হন। তাদের ব্যর্থ করে দিয়ে চলে তামিম-শাহজাদের ব্যাটিং তান্ডব।
দলীয় শতরানের পরও চলে একইভাবে চলে রান সংগ্রহের গতি। দ্রæত কমে আসতে থাকে জয়ের দূরত্ব। তবে সপ্তম বোলার হিসেবে মোক্তার আলীকে আক্রমণে নিয়ে আসার পর সিলেট সফলতার মুখ দেখতে পারতো। কিন্তু তার একই ওভারে প্রথমে এনামুল হক বিজয়, পরে আলাহউদ্দিন বাবু ক্যাচ ফেলে দিলে তামিম ইকবাল জীবন পান। দুইর্বাই তার রান ছিল ৭১। জীবন পেয়ে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তামিম ইকবালকে। খুব দ্রুত পৌছে যান সেঞ্চুরিতে। আলাহউদ্দিন বাবুর নো বল থেকে বাউণ্ডারি মেরে তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে চতুর্থ শতক তুলে নেন। বিপিএলে এটি র্ছিল তার দ্বিতীয় সেঞ্চুুির। সেই ওভারেই চার মেরে তিনি খেলাও শেষ করে দেন। একই ওভারে আউট হন শাহজাদও। এর আগে শাহজাদ সোহাগ গাজীর বলে এক রান নিয়ে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৩৪ বলে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেটও রানের পাহাড় গড়েছিল লিন্ডলে সিমন্সের সেঞ্চুরিতে ভর করে।মোটা ১২০ বলের মাঝে তিনি একাই খেলেন ৬৫ বল। দলের মোট ১৭৫ রানের অর্ধেকেরও বেশি ছিল তার ১১৬। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের ১৮। সিমন্স ৩৪ বলে ফিফটি, ৫৯ বলে বিপিএলের প্রথম ও ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন। তার ৬৫ বলের ১১৬ রানের ইনিংসে ছিল ল ৫টি মনমুগ্ধকর ছক্কার সঙ্গে ১৪টি বাহারি বাউন্ডারি। আউট হন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আন্দ্রে রাসেলের বলে তামিম ইকবালের হাতে ধরা পড়ে লং অনে।
এমপি/