সিমন্সের বিস্ফোরক সেঞ্চুরি
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি করলেন সিলেট সানরাইজার্সের উইন্ডিজের ব্যাটসম্যান লিন্ডলে সিমন্স। তার মারকুটে ৬৫ বলে ১১৬ রানের ইনিংসে ছিল ৫টি মনমুগ্ধকর ছক্কার সঙ্গে ১৪টি বাহারি বাউন্ডারি। বলের হিসেবে সিমন্স অর্ধেকের সামান্য ( ১২০ বলেল মাঝে ৬৫ বল) বেশি খেলে রানও করেছেন অর্ধেকের বেশি। ১৭৫ রানের মাঝে তারই রান ১১৬। শতকরা হিসেবে ৬৬.২৮৫ ভাগ।
বিপিএল মানেই কিন্তু চার-ছক্কার ফুলঝরি নয়। মাঝে মাঝে তা দেখা যায় বিজলি চমকানোর মতো। এবার যেমন করে দেখালেন সিমন্স। এবারের বিপিএলও কিন্তু দর্শকদের রানের উৎসব উপহার দিতে পারেনি। প্রথম ম্যাচতো ভয়াবহ রান খরা চলছে। সেই রান খরা ঢাকার পর চট্টগ্রামেও বহমান ছিল। প্রথম ম্যাচে রান উঠেছে ঢাকার তুলনায় সামান্য কিছু বেশি ১৪৩। ঢাকায় দ্বিতীয় ম্যাচে আবার তুলনামূলক রান হয়েছে। চট্টগ্রামেও সেই স্রোত ছিল। যেখানে নতুন করে ঢেউ তুলেন সিমন্স সেঞ্চুরি করে। বিপিএলে এবারের আসরে যেমন এটি ছিল প্রথম সেঞ্চুরি, তেমনি সিমন্সেরও ছিল বিপিএলে প্রথম। আর তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় আগের সেঞ্চুরি ছিল আইপিএলে অপরাজিত ১০০ রান। আবার বিপিএলে সেঞ্চুরির তালিকায় ২২তম।
বিপিএলে সিমন্স এবার সিলেটের পক্ষে খেলার আগে তিনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, খুলনা টাইটানসের হয়ে খেলেছেন। এবার সিলেট তাকে সরাসরি নিয়েছিল। তাদের পছন্দ যে যথার্থ ছিল সিমন্স তার প্রমাণ দিলেন এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে। দলে কিন্তু দেশি-বিদেশি যাই বলা হোক না কেন, তারকা ক্রিকেটারদের ঘাটতি খুব প্রবল ছিল। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে তারকা বলতে একমাত্র তাসকিন আহমেদই। এবারের আসরে সিলেটকে বলা হয়েছিল সবচেয়ে দুর্বল দল। কিন্তু মাঠের খেলায় তারা নিজেদের অন্য রকম শক্তি হিসেবে প্রমাণ করে চলেছে। প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে মাত্র ৯৬ রান করেও তারা লড়াই করে ম্যাচ হেরেছিল মাত্র ২ উইকেটে। পরের ম্যাচে তারকায় ঠাসা শক্তিশালী ঢাকাকে মাত্র ১০০ রানে অলআউট করে হারিয়েছিল ৭ উইকেটে। এই ম্যাচেতো সিমন্সের সেঞ্চুরিতে জেতার মতো স্কোর নামের পাশে জমা করেছে।
সিমন্স ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করার পর সেঞ্চুরি করতে বল খেলেন ৫৯টি। চারটি ছক্কার সঙ্গে ছিল ১২টি চারের মার। আন্দ্রে রাসেলের এক ওভারে পরপর দুই চারে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে পরের বলে আবার ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরে আবার সেই রাসেলকেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অফে তামিম ইকবালের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে।
সিমন্সের বিপিএলে এটি প্রথম সেঞ্চুরি হলেও মোট ২২ সেঞ্চুরির মাঝে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইল একাই করেছেন ৫টি। তিনি দুইটি করে করেন এক মৌসুমে। ২০১২ সালে বরিশালের হয়ে ১১৬ ও অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলার পর ২০১৩ সালে ঢাকার হয়ে খেলে করেন ১১৪ রান। এরপর ২০১৭ সালে খেলেন রংপুর রাইডার্সের হয়ে। ফাইনালে অপরাজিত ১৪৬ রানের ইনিংস খেলার আগে লিগ পর্বে খেলেছিলেন আরেকটি অপরাজিত ১২৬ রানের ইনিংস। এ ছাড়া দুইটি সেঞ্চুরি আছে আরেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এভিন লুইসের। তিনি ২০১৫ সালে বরিশাল বুলসের হয়ে অপরাজিত ১০১ রান করেন। এরপর ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম কিংসের হয়ে খেলেন আরেকটি অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংস। এ ছাড়া আর কারোই দুইটি সেঞ্চুরি নেই। একটি করে সেঞ্চুরি আছে আহমেদ শাহজাদ (১১৩*), শাহরিয়ার নাফিস (১০২*), মোহাম্মদ আশরাফুল (১০৩*), সাব্বির রহমান (১২২), জনসন চার্লস ( ১২৬*), জন ইভান্স (১০৪*), আলেকজান্ডার হলস (১০০), রাইলি রোসো (১০০*), ডি ভিলিয়ার্স ( ১০০*), তামিম ইকবাল (১৪১*), আন্দ্রে ফ্লেচার (১০৩*), ডেভিড মালান (১০০), নাজমুল হোসেন শান্ত (১১৫)।
এমপি/এসআইএইচ