রান খরায় দিনের প্রথম ম্যাচ!
অদ্ভুত আচরণ এবারের বিপিএলে। প্রথম ম্যাচে রান খরা, দ্বিতীয় ম্যাচে রান উৎসব। পিচের এই রকম দ্বৈত্য আচরণে অনেকেই অবাক। এই নিয়ে বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন দলের ক্রিকেটার, অধিনায়ক, কোচ পর্যন্ত কেউ আঙ্গুল তুলেছেন পিচের দিকে, কেউবা বলছেন না ঠিক আছে, ব্যাটসম্যানরাই ভালো করতে পারছেন না।
তা কেমন প্রথম ম্যাচের পিচ? মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ছিল বিপিএলের চতুর্থ দিন। চারদিনই শুধু প্রথম ম্যাচেই রান খরা হয়নি। আরো বেশ কয়েকটি সাদৃশ্য পাওয়া গেছে। প্রতিটি ম্যাচেই পরে ব্যাট করা দল জয়ী হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই টস জেতা দল ফিল্ডিং বেছে নিয়ে সফল হয়েছে। মঙ্গলবারে ম্যাচ ব্যতীরেকে বাকি দিন ম্যাচেই হয়েছে তুমুল লড়াই। দুইবার আগে ব্যাট করা দল অলআউট হয়েছে। অপর দুই ম্যাচে উইকেট পড়েছিল ৮টি করে। আবার পরে ব্যাট করা দলের উইকেট পড়েছিল প্রথম ও তৃতীয় ম্যাচে ৬টি করে উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে ৮টি। মঙ্গলবারের ম্যাচে উইকেট পড়ে সবেচয়ে কম ৩টি।
বিপিএলের উদ্বোধনী দিনে মুখোমুখি হয়েছিল বরিশাল ফরচুন ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সকিবের বরিশাল টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে চট্টগ্রামকে ৮ উইকেটে ১২৫ রানে আটকে রেখেছিল। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে বরিশালকে খেলতে হয়েছিল ১৮.৪ ওভার। দ্বিতীয় দিন ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস টস জিতে যথারীতি ফিল্ডিং নিয়ে সিলেট সানরাইজার্সকে মাত্র ৯৬ রানে অলআউট করে দেয়। সেই রান তাড়া করতে গিয়ে কুমিল্লার ব্যাটসম্যানদের গলদগর্ম অবস্থা। টানটান উত্তেজনার ম্যাচে শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা জয়ী হয়েছিল ১৮.৪ ওভারে ২ উইকেটে। প্রথম দিনের ম্যাচে রান কম উঠাতে অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। দ্বিতীয় দিন শতরানের নিচে সংগ্রহ হওয়াতে আরো বেশি করে তীর্যক বাক্য শুরু হয়। অনেকেই ধারণা করেছিলেন তৃতীয় ম্যাচে গিয়ে হয়তো দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসবে। মাঝে একদিন বিরতিও ছিল। কিন্তু সেখানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এবার মুখোমুখি হয়েছিল ফরচুন বরিশাল ও মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টস জিতে সাকিবকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সাকিবের দল ৮ উইকেটে ১২৯ রান করে ম্যাচ হেরেছিল ৪ উইকেটে। এরপর আসে মঙ্গলবারের ম্যাচ। সেই একই দৃশ্য। সিলেটের দলপতি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত টস জিতে মাহমুদউল্লাহকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু তারা চরমভাবে ব্যর্থ হন। মাত্র ১০০ রানে অলআউট। সিলেট সেই রান অতিক্রম করে বিনা বাঁধায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান করে।
প্রথম ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের জন্য বধ্যভুমি হলেও সেখানে কিন্তু পেসাররা তা করতে পারেননি। স্পিনারদের রাজত্ব ছিল বেশি। অর্ধেকেরও ২০ উইকেট তাদের দখলে। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন স্পিনাররা। প্রথম ম্যাচে হেরে গিয়েও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ উইকেট নিয়ে, দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লার নাহিদুল ইসলাম ২০ রানে ২ উইকেট ও ১৬ রান করে, তৃতীয় ম্যাচে ৪৭ রান ও বল হাতে ১ উইকেট নিয়ে এবং মঙ্গলবারের ম্যাচে সিলেটের নাজমুল ইসলাম অপু ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
মঙ্গলবারের ম্যাচ শেষে পরাজিত দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ পিচকে দোষারূপ করেননি। তার তর্জনি ছিল ব্যাটসম্যানদের দিকে। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘উইকেট খুব ভালো ছিল। উইকেট নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। আরো ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল। যেভাবে আমরা ব্যাটিং করেছি তা হতাশাজনক ছিল।’
এমপি/এসআইএইচ