কমনওয়েলথ গেমস ক্রিকেটের টিকিট পায়নি বাংলাদেশের মেয়েরা
শেষ পর্যন্ত পারল না বাংলাদেশের মেয়েরা। কমওয়েলথ গেমস ক্রিকেটের টিকিট কনফার্ম করতে পারেনি। বাছাইপর্ব থেকে শীর্ষে থাকা এক দলই খেলার সুযোগ ছিল। শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গেছে ২২ রানে। টার্গেট খুব বেশি ছিল না, ১৩৭। কিন্তু সেই রান তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা থেমে যায় ৫ উইকেটে ১১৪ রানে। ৫ দলের বাছাইপর্বে সবকটি ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে কমনওয়েলথ গেমসের ক্রিকেটে এখন পদকের জন্য শ্রীলঙ্কা শামিল হলো র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থেকে সরাসরি খেলার সুযোগ পাওয়া ৭ দল ভারত,পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, উইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে। আগামী জুলাইয়ের ২৮ তারিখ থেকে আগস্টের ৮ তারিখ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে বসবে কমনওয়েলথ গেমসের বাইশতম আসর।
২০ ওভারে বা ১২০ বলে ১৩৭ রান। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বড় টার্গেট নয়। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক বড়ই! কারণ চলতি আসরে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়ার আগে যে তিন ম্যাচ জিতেছিল তার দুইটিতে আগে ব্যাট করেছিল। কেনিয়ার বিপক্ষে একটি মাত্র ম্যাচে আগে ব্যাট করে রান করেছিল ৬ উইকেটে মাত্র ১২৫। আবার যে দুইটি ম্যাচে পরে ব্যাট করে জয়ী হয়েছিল, সে সব ম্যাচগুলোতেও রান সংগ্রহের গতি ছিল মন্থর। দলগুলো ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বলও মালয়েশিয়া, স্কটল্যান্ড। সে তুলনায় শ্রীলঙ্কা অনেক শক্তিশালী। তারা সেই শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে কাবু করে বাংলাদেশকে।
আসরে বাংলাদেশের বোলিং ছিল বেশি শক্তিশালী। আবার শ্রীলঙ্কার শক্তির জায়গা ছিল তাদের ব্যাটিং। সেখানে বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়ে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা লঙ্কানদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনকে খুব বেশি দূর যেতে দেয়নি। ৬ উইকেটে ১৩৬। চামান আতাপাত্তু ২৮ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৪৮ রান করেন। এ ছাড়া নিলাকাশি ডি সিলভা ১টি করে চার ও ছয় মেরে ২৫ বলে ২৮ ও আনুষ্কা সানজিবানি ১৬ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে নাহিদা আক্তার ৪ ওভারে ৩৪ রানে ২ উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন সালমা, সুরাইয়া ও রুমানা।
আসরে ব্যাটিংয়ে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের মেয়েরা নিজেদের সেই বেড়াজাল ছিন্ন করতে পারেননি। কেউই আক্রমণাত্বক হতে পারেননি। যারা উইকেটে এসে দ্রুত আউট হয়ে গেছেন, তেমনি আবার যারা টিকে গিয়েছিলেন তারাও। এই যেমন আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান মুর্শিদা খাতুন। তিনি শামিমা সুলতানাকে নিয়ে ইনিংসের গোড়া পত্তন করতে এসেছিলেন। শামীমা শুরুতেই আউট হয়ে যান ৯ বরে ৬ রান করে। যদিও জুটিতে ১৪ বলে এসেছিল ১৮ রান। কিন্তু মুর্শিদা। তিনি ৩৬ বল খেলে ৩৬ রান করে আউট হন। এমন কি ফারজানা হক পিংকিকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫০ রান যোগ করে দলের ভীত মজবুত করলেও সেখানে দুই জনের কেউই আক্রমণাত্বক হতে পারেননি। বল খেলেন ৫৪টি। ফারজানা ৩৯ বলে করেন ৩৩ রান। মুর্শিদা আউট হওয়ার পর অধিনায়ক নিগার সুলতানা এসেও আক্রমণাত্বক হয়ে উঠতে পারেননি। তিনিও মন্থর ব্যটিং করতে থাকেন। যে কারণে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আস্কিং রান রেট বাড়তে থাকে। ফারজানা-নিগার সুলতানা জুটি ২৫ রান যোগ করেন ২৫ বলে।
২১ বলে ২০ রান করে নিগার সুলতানা যখন আউট হয়ে ফিরে যান, তখন দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৭ বলে ৪৪ রানের। হাতে ৭ উইকেট। একটু চেষ্টা করলে খুব বড় টার্গেট নয়। ক্রিজে তখনো ফারজানা আছেন। তার সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান সুবহানা মুশতারি। এই জুটিও পারেনি আক্রমণাত্মক হতে। জুটিতে ১৮ রান আসে ২৩ বলে। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে অসম্ভব এক টার্গেট ২৭ রানের। সেখানে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে মাত্র ৪ রান। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশের ইনিংসে কোনো বাউণ্ডারি হয়নি। ব্যাট হাতে চামান আতাপাত্তু ঝড় তুলে ২৮ বলে ৪৮ রান করার পর বল হাতে বাংলাদেশের ইনিংসে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচ সেরা। ।
এমপি/এসএ/