কানাডাকে হারিয়ে বাংলাদেশের যুবাদের প্রথম জয়
নক আউট পর্বে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের যুবাদের জয়ের বিকল্প ছিল না। একই সঙ্গে নেট রান রেটের বিষয়টিও ছিল। দুইটি কাজই বাংলাদেশের যুবারা নিজেদের করে নিয়েছে কানাডাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে। কানাডার করা ১৩৬ রানের জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ দিয়েছে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০.১ ওভারে ১৪১ রান করে। জয় সূচক রান আসে আইচ মোল্লার ছক্কা থেকে। এই এক জয়েই বাংলাদেশ ‘এ’ গ্রুপের তলানিতে থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে আছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের সমান ২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই দুই দল ২২ জানুয়ারি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে পরস্পরের বিপক্ষে। সেই ম্যাচেই নির্ধারণ হবে এই গ্রুপ থেকে ইংল্যান্ডের সঙ্গী হবে কে?
প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে বাংলাদেশ নেট রান রেটেও বেশ পিছিয়ে পড়েছিল। তাই কানাডার বিপক্ষে সব সমীকরণ মেলানোর লক্ষ্যে সেরা একাদশে দুইটি পরিবর্তনও আনে। আব্দুল্লাহ আল মামুন ও নাঈমুর রহমানের পরিবর্তে ইফতেখার হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিবকে সেরা একাদশে নিয়ে আসা হয়। গতবারের চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য তানজিব হাসান সাকিব বল হাতে কোনো ভুমিকা রাখতে না পারলেও ব্যাট হাতে ইনিংসের ওপেন করতে নেমে ইফতেখারন হোসেন তার প্রতিদান দিয়েছেন ৬১ রানের অপরাজিত থেকে।
বাংলাদেশের জয়ের কাজটি সহজ করে দেন বোলাররা। মূলত তিনজন। রিপন মন্ডল ও এস এম মেহরবের সঙ্গে আশিকুর জামান। কানাডার ১০ উইকেট এই তিনজনই ভাগাভাগি করে নেন। রিপন ২৪ ও মেহরব ৩৭ রানে নেন ৪টি করে উইকটে। আশিকুর ২১ রানে নেন ২ উইকেট। এদের তোপের কারণে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিন্ধান্তকে যথার্ত করে তুলতে পারেনি কানাডারা ব্যাটসম্যানরা।
কানাডার শুরুটা কিন্তু বেশ ভালোই ছিল। উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে ৩৪। যেখানে জস শাহর অবদান ছিল মাত্র ৮। বাকি রান ছিল অনুপ চিমার। এই অনুপ চিমার কারণেই কানাডার রান ১৩৬ পর্যন্ত যেতেক পেরেছিল। কারণ তার একার অবদানই ছিল ৬৩। তিনি আউট হন অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে। অনুপ চিমার পর দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল অতিরিক্ত থেকে আসা ১৫। এরপর কিরাভ শর্মা ১৪, মোহিদ প্রসার ১২ ও মিহির প্যাটেল ১১ রান করেন। মূলত উদ্বোধনী জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর অনুপ চিমা ছাড়া আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। উদ্বোধনী জুটির ৩৪ রানই ছিল সেরা জুটি।
উদ্বোধনী জুটি যখন ধীরে ধীরে পেখম মেলা শুরু করেছে। আশিকুর-তানজিমের পর দলপতি রকিবুলও বল হাতে নিয়ে জুটি ভাঙ্গতে ব্যর্থ হওয়ার পর রিপন মন্ডল আক্রমণে আসার পর সফল হন। কিন্তু কানাডার মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেন আসলে মেহরব। তিনি মিডল অর্ডারে আঘাত হেনে একে একে ৪ উইকেট তুলে নেন। মেহরব মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেয়ার পর আবার আঘাত হানা শুরু করেন রিপন মন্ডল। তিনি ক্রিজে সুপার গ্লুর মতো লেগে থাকা ওপেনার অনুপ চিমাসহ আগে-পরে আরো ২ জনকে ফিরিয়ে দেন। মাঝে ২ উইকেট তুলে নেন আশিকুর জামান। অনুপ চিমা ১১৭ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৬৩ রান করে উইকেটের পেছনে মো. ফাহিমের হাতে ধরা পড়েন।
টার্গেট খুব বেশি নয়। তাই জয়ের লক্ষ্যে পৌছানোর পথে বাংলাদেশ নেট রান রেট বাড়িয়ে নেওয়ার দিকেও নজর দেয়। মফিজুল ও ইতেখারের উদ্বোধনী জুটি বেশি দূর যেতে পারেনি। ২৬ রানেই থেমে যায় মফিজুল ১২ রান করে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লে। এরপর ইফতেখার প্রান্তিক নওরোজ নাবিলকে নিয়ে বাংলাদেশের বড় জয়ের পাশাপাশি নেট রান রেটে বৃদ্ধির কাজটিও বেশ ভালোভাবে করে নেন জুটিতে ১৭.১ ওভারে ৭৮ রান যোগ করে। প্রান্তিক নওরোজ নাবিল ৫২ বরে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৩ রান করে গিবসনের বলে উইকেটের পেছনে অনুপ চিমার হাতে ধরা পড়েন। এরপর ওপেনার ইফতেখার বাকি কাজ সারেন আইচ মোল্লাকে নিয়ে। ইফতেখার ৭৪ বলে ফিফটি করেন। ইফতেখারের ৮৯ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত ইনিংসে ছিল ৭টি চার। জোহাল সিংয়ের ওভারে আইচ মোল্লা ছক্কা হাঁকিয়ে জয়সূচক রান করেন। এটি ছিল ম্যাচের একমাত্র ছক্কা। আইচ মোল্লা অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে ২০ রান করে। তার ইনিংসে আর কোনো বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি ছিল না।
এমপি/এএস