আইরিশদের প্রশ্ন ‘কমন’ পড়েনি
উপমহাদেশে কোনো দেশ খেলতে আসা মানেই স্পিনের মায়াজালে আটকা পড়া। যদি তাদের হাতেও স্পিনের মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র থাকে তবে ভালোভাবে মোকাবিলা করা যায়। যে কারণে উপমহাদেশে খেলতে আসার আগে সবাই স্পিন মোকাবিলা করার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসেন। এবার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসার আগে আইরিশদের প্রস্তুতিও ছিল সে রকম। কিন্তু তাদের সেই প্রস্তুতিতে পূর্ণতা আসেনি। কারণ এখানে আসার পর তারা আর স্পিনে ঘায়েল হয়নি। বাংলাদেশের পেসারদের যাতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। এ যেন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কমন না পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে আইরিশদের।
বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের ৮ ওভারের ম্যাচে তাদের যে ৫ উইকটের পতন হয় তার সবকটিই ছিল বাংলাদেশের পেসারদের দখলে। তাসকিন একাই নেন ৪টি। হাসান মাহমুদ নেন ১টি। এর আগে শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ১০ উইকেটই নেন বাংলাদেশের ৩ পেসার তাসকিন-হাসান-মোস্তাফিজ। হাসান ৫টি, তাসকিন ৩টি ও মোস্তাফিজ ২টি উইকেট নেন। দ্বিতীয় ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেসে যায়। প্রথম ম্যাচে আবার আইরিশদের ১০ উইকেটের ৬টি ছিল পেসারদের। এবাদত ৪টি, তাসকিন ২টি নেন। বাকি ৪টির ৩টি নেন নাসুম, ১টি সাকিব।
অথচ এর আগে আইরিশরা বাংলাদেশের বিপক্ষে যে ৫টি (১টি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত) ম্যাচ খেলেছে সেখানে তারা স্পিনার দ্বারাই ঘাযেল হয়েছিল। পেসারদের দাপট ছিল কমই।
২০০৯ সালে দুই দলের প্রথম মুখোমুখিতে আয়ারল্যান্ড জিতেছিল ৬ উইকেটে। তাদের পতন হওয়া ৪ উইকেটের ২টি নিয়েছিলেন মাশরাফি। বাকি ২টি ভাগাভাগি করে নেন সাকিব ও আব্দুর রাজ্জাক। এরপর দুই দল মিলিত হয় আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে ৩ ম্যাচের সিরিজে। বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে।
প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ ৭১ রানের বড় ব্যবধানে জয়ী হলেও পরের ২ ম্যাচ জিতেছিল শেষ বলে যথাক্রমে ১ রানে ও ২ উইকেটে। প্রথম ম্যাচে আইরিশদের ৮ উইকেট তুলে নিয়ে রান করতে দিয়েছিল মাত্র ১১৯। ৭টি উইকেট নেন স্পিনাররা। অপরটি ছিল রানআউট। ৭ উইকেটের ৫টিই নেন ইলিয়াস সানি। ২টি নেন আব্দুর রাজ্জাক।
দ্বিতীয় ম্যাচ আইরিশরা ৬ উইকেটে করেছিল ১৪৫ রান। এবারও পেসাররা কোনো উইকেট নিতে পারেননি। ইলিয়াস সানি ও মাহমুদউল্লাহ নেন ২টি করে উইকেট। আব্দুর রাজ্জাক নেন একটি। অপর উইকেট ছিল রানআউট।
তৃতীয় ম্যাচে আইরিশদের ৮ উইকেট বাংলাদেশের পেসার ও স্পিনাররা সমান ৪টি করে ভাগাভাগি করে নেন। মাশরাফি একাই নেন ৪টি। আব্দুর রাজ্জাক নেন ২টি। ১টি করে নেন ইলিয়াস সানি ও সাকিব। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিল।
সিরিজে এখনো বাকি ৩টি ম্যাচ। ২টি টি-টোয়েন্টি ও ১টি টেস্ট। পেসারদের গতি সামলানোর জন্য মঙ্গলবার আইরিশরা অনুশীলন করেছে টেনিস বল দিয়ে। দেখার বিষয় তাৎক্ষণিক এই প্রস্তুতিতে তারা কতটা সফল হতে পারে। আজ দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই তার পরীক্ষা হয়ে যাবে।
এমপি/আরএ/