বিসিএল ওয়ানডেতেও চ্যাম্পিয়ন ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল
বিসিএল চার দিনের আসরের মতো একদিনের আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মধ্যাঞ্চল ৬ উইকেটে হারিয়েছে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে।
আগে ব্যাট করে দক্ষিণাঞ্চল ৪৮.৫ ওভারে মাত্র ১৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাবে মধ্যাঞ্চল ৪২.৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। চার দিনের আসরেও মধ্যাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চেলকে ৪ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
টস জিতে মধ্যাঞ্চলের দলপতি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বোলিং নেওয়ার সিদ্ধান্তকে যথাযথ প্রমাণ করে তুলেন দলের বোলাররা। তাদের তোপে পড়ে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাটসমানরা মোটেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। তবে এই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারাটা ছিল শুরুর ধারার বিরুদ্ধে। উদ্বোধনী জুটিতে পিনাক ঘোষ ও এনামুল হক বিজয় ৫১ রান এনে দেয়ার পরও ১৬৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মূলে ছিল মধ্যাঞ্চলের পাঁচ বোরার সৌম্য সরকার, মুত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী, নাজমুল ইসলাম অপু, হাসান মুরাদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সবাই দুইয়ের নামতা পড়ান দক্ষিণাঞ্চলের ব্যাটসম্যানদের। সবাই দুইটি করে উইকেট নেন।
ওপেনার এনামুল হক বিজয়কে ব্যক্তিগত ২০ রানে নাজমুল ইসলাম অপু এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে আউট করার পর শুরু হয় দক্ষিণাঞ্চলের পিছু হাঁটা। অপুর দেখিয়ে দেয়া পথে পরে একে একে এসে শামিল হন বাকি চারজন। আরেক ওপেনার পিনাক ঘোষকে ৩৫ রানে ফিরিয়ে দেন সৌম্য সরকার। উইকেটের পেছনে তার ক্যাচ ধরেন মোহাম্মদ মিঠুন। আসরের সফল ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়কে কোনো রানই করার সুযোগ না দিয়ে ফিরিয়ে দেন নাজমুল হোসেন অপু। দলীয় শতরানের আগেই এক অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আরেক অধিনায়ক জাকির হাসানকে (১৪) বোল্ড আউট করে চাপ বাড়িয়ে দেন। মোসাদ্দেক এরপর অমিত হাসানকেও (২৯) ফিরিয়ে দেন তখন দলীয় রান মাত্র ১০৬। এরপর উইকেট পড়েছে নিয়মিত। হয়নি কোনো বড় জুটি। নাহিদুল ইসলাম দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রান করলেও অপর প্রান্তে সবাই ছিলেন আশা-যাওয়াতে শামিল। ফলে ১৬৩ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস।
টার্গেট বড় নয়। তারপরও দুই ওপেনার মিজানুর রহমানও সৌম্য সরকার দারুণ সূচনা এনে দেন জুটিতে ৬৫ রান এনে। কিন্তু এই জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর তাদের অবস্থা দক্ষিণাঞ্চলের চেযেও বাজে হয়ে পড়ে। নাসুম আহমেদের তোপে পড়ে ৭৬ রানেই হারায় ৪ উইকেট। দক্ষিণাঞ্চল ৪ উইকেট হারিয়েছল ৯৯ রানে।
দুই ওপেনার মিজানুর ও সৌম্য ফিরে যান মাত্র ১ রানের ব্যবধানে। মিজানুরকে নাসুম ব্যক্তিগত ৩৯ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর মেহেদী হাসান ২১ রানে সৌম্য সরকারকে ফিরিয়ে দেন। তার ক্যাচ ধরেন পিনাক ঘোষ। এরপর নাসুম আহমেদ জোড়া আঘাত হানেন আব্দুল মজিদ (১) ও মোহাম্মদ মিঠুনকে (৪) ফিরিয়ে দিয়ে। এ সময় খেলা দারুণভাবে জমে উঠে। অনেকটা চার দিনের ম্যাচের ফাইনালের মতো। পাল্লা ভারি ছিল দক্ষিণাঞ্চলের। কিন্তু চারদিনের ম্যাচে যেমন এরচেয়েও বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে থাকারপরও দক্ষিণাঞ্চলের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছিলেন মধ্যাঞ্চলের দলপতি শুভাগত হোম তিন অংকের ইনিংস খেলে। এবার সেই কাজটি করেন ওয়ানেডে দলপতি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তিনি আল আমিনকে নিয়ে তিনি শক্ত হাতে হাল ধরে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান। দুই জনে আর কোনো উইকেটই পড়তে দেননি। এখানে মূল কাজটি করেন অবশ্য আল আমিন। তিনি খেলেন ৬৯ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ধীরে খেলে ৮৫ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। চার ছিল ২টি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা ২৪.২ ওভারে ৮৮ রান যোগ করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল: ১৬৩/১০, ওভার ৪৮.৫ ( পিনাক ঘোষ ৩৫,নাহিদুল ইসরাম ৩১, অমিত হাসান ২৯, এনামুল গক বিজয় ২০, জাকির হাসান ১৪, কামরুল ইসলাম রাব্বি ১২, সৌম্য সরকার ২/১৯, মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তি ২/২৬, নাজমুল ইসলাম অপু ২/২৮, হাসান মুরাদ ২/২৯, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২/৪৫)।
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল: ১৬৪/৪, ওভার ৪২.৩ ( আল আমিন ৫৩* ,মিজানুর রহমান ৩৯, মোসাদ্দেক হোসেন ৩৩* , সৌম্য সরকার ২১, নাসুম আহমেদ ৩/ ৩২, মেহেদী হাসান ১/৩২)
এমপি/এমএমএ/