বিসিএল ওয়ানডের প্রথম রাউন্ডে ব্যর্থ তারকা ক্রিকেটাররা
ঘরোয়া ওয়ানডে আসরে বাড়ানোর তাড়না থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম শ্রেণির ম্যাচের পাশাপাশি লিস্ট ‘এ’ আসরও শুরু করেছে বিসিবি।
রবিবার (৯ জানুয়ারি) সিলেটের দুইটি ভেন্যুতে খেলা গড়িয়েছে মাঠে। দুই ম্যাচেই ছিল লো-স্কোরিং। একটিতে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল মাত্র ১৭৭ রান করেও ম্যাচ জিতেছে ২২ রানে। প্রতিপক্ষ ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল অলআউট হয়ে যায় ১৫৫ রানে।
অপর ম্যাচ বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে ১৬২ রানে অলআউট করে বিসিবি উত্তরাঞ্চল ম্যাচ জিতেছে ৮ উইকেটে।
সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও একাডেমি মাঠে শুরু হয়েছে এই আসর। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বিসিবির পরিচালক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি এবং সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন চৌধুরী সেলিম।
বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণ নিয়ে অনেকের মাঝেই ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। এর কারণ ছিল জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ। সাকিব-মোস্তাফিজের মতো ক্রিকেটাররা রঙিন পোষাকে মাঠ মাতাতে নেমেছেন। তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহরও খেলার কথা ছিল কিন্তু তারা খেলেননি। দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে তাদের খেলার সম্ভাবনা আছে।
সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে মধ্যাঞ্চলের হয়ে সাকিব আল হাসান অংশ গ্রহণ করেন। ব্যাট হাতে ৩৫ রান করলেও তা ছিল ওয়ানডে মেজাজের ধারার বিরুদ্ধে। বল হাতে ১০ ওভার বোলিং করে ২৪ রানে নেন ২ উইকেট।
সিলেট একাডেমি মাঠে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে খেলেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ। কিন্তু তিনি কোনো ভূমিকাই রাখতে পারেননি। বল হাতে ৭ ওভারে ২১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থেকেছেন।
সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রিত হয়ে মোটেই সুবিধা করতে পরেনি মধ্যাঞ্চল। যদিও শুরুটা ছিল উড়ন্ত। সৌম্য সরকার ও মিজানুর ৩৬ রান এনে দেন ৬.৩ ওভারে। কিন্তু এই জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর রানের চাকাও মন্থর হয়ে পড়ে। রুবেল-রেজাউল-তানভীরের তোপে নিয়মিত পড়তে থাকে উইকেট। মোহাম্মদ মিঠুন ৩৭ বলে ৩৭, মিজানুর ৪০ বলে ৩৬, সাকিব একটু বেশি ৫৮ বল খেলে ৩৫ রান করে আউট হন। ৪৩.২ ওভারে ১৭৭ রানে অলআউট হন তারা।রেজাউর রহমান রেজা ২১ ও রুবেল হোসেন ৫১ রানে নেন ৩টি করে উইকেট। তানভীর ২ উইকেট নেন ২৯ রানে।
ছোট টার্গেটের পেছনে ছুটে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিল পূর্বাঞ্চল। এক পর্যায়ে তাদের রান ছিল ৬ উইকেটে ১৪৭। কিন্তু ৮ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে তারা ম্যাচ হাত ছাড়া করে। রনি তালুকদার ৩৮, ইরফান শুক্কুর ৩১, নাদিফ চৌধুরী ২৮, ইমরুল কায়েস ২৫ রান করেন। মধ্যাঞ্চলের হয়ে সৌম্য সরকার ৪ রানে, সাকিব ২৪, মুরাদ হাসান ২৮ রানে ২টি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা হন মোসাদ্দেক সৈকত।
একাডেমি মাঠে একইভাবে টস জেতা দল বোলিং বেছে নেয়। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উত্তরাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চলের বোলারদের আক্রমণের মুখে পড়ে ৪২.৪ ওভারে মাত্র ১৬২ রান করে অলআউট হয়। এক পর্যায়ে তারা পিনাক ঘোষ ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটে চড়ে বড় ইনিংস গড়ার পথেই ছিল। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর আর কেউই হাল ধরতে পারেনি। তারা শেষ ৬ উইকেট হারায় মাত্র ২২ রানে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন তৌহিদ হৃদয়। পিনাক ঘোষ করেন ৪৭ রান। উত্তরাঞ্চলের হয়ে শফিকুল ইসলাম ৩৯ ও সানজামুল ইসলাম ২৯ রানে ৩টি করে উইকেট। নাঈম ইসলাম ২৯ রানে নেন ২ উইকেট।
পাশের মাঠেই লো-স্কোরিং ম্যাচে টার্গেট অতিক্রম হয়নি। কিন্তু এই ম্যাচে আর তা হয়নি। ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও নাঈম ইসলামের জোড়া অর্ধশতকে উত্তরাঞ্চল ৩১ ওভারে, ৬ রানে তানজিদ হাসানকে হারানোর পর ইমন ও নাঈম ৯১ রানেরে জুটি গড়ে দলের বড় জয়ের ভিত গড়ে দেন। ইমন ৫৪ বলে ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৪ রান করে আউট হলেও নাঈম ফিরেন দলকে বিজয়ী করে। আরিফুল হককে নিয়ে তিনি বাকি কাজ সারেন। নাঈম ৮৪ বলে ৯ চারে ৬৬ রান করে অপরাজিত থাকেন আরিফুল অপরাজিত ছিলেন ৩২ রানে। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাঈম ইসলাম।
এমপি/এমএমএ/