বৃষ্টিতে পিচ দেখা হয়নি সাকিবের
তিন কাঠির খেলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উইকেট। উইকেটের চরিত্র বু্ঝে তবেই ঠিক করা হয় সেরা একাদশ। কখনো স্পিন নির্ভর, কখনো পেস নির্ভর। নেদারল্যান্ডসের পর জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে শামিল হওয়া বাংলাদেশ দল ভারতের বিপক্ষে কী রকম একাদশ নিয়ে মাঠে নামবে? এটা এক বিশাল প্রশ্ন।
কারণ, বাংলাদেশ দল যে পিচ দেখারই সুযোগ পায়নি। এই না দেখার কারণ ক্রিকেটেরই আজন্ম শত্রু বৃষ্টি। বৃষ্টি যেমন বাংলাদেশকে অনুশীলন করতে দেয়নি. তেমনি পিচও দেখার সুযোগ করে দেয়নি। আগামীকাল খেলা শুরুর পূর্বে পিচ দেখাটাই এখন একমাত্র সম্বল।
অ্যাডিলেড সোমবার সারাদিন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হলেও আজ মঙ্গলবার সারাদিন চলেছে রোদ-বৃষ্টির খেলা। বিজলি চমকানোর মতো এই বৃষ্টি, এই রোদ। এ রকম হয়েছে সারাদিনে বেশ কয়েক বার। এমনকি রাতেও এই ধারা বহমান ছিল। এরই মাঝে ভারতীয় দলের ৬ ক্রিকেটার অনুশীলন করলেও বাংলাদেশ দল সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিল অনুশীলন না করার বিষয়টি।
তারপরও সাকিব আল হাসান এসেছিলেন ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনের আগে-পরে তার সুযোগ ছিল উইকেট দেখার। কিন্তু বৃষ্টি সেখানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল বলে সাকিবের পক্ষে আর পিচ দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এই পিচ দেখা যে কতোটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝা যায় এবারের এশিয়া কাপে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত সেই আসরে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল শারজাহতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
কিন্তু বাংলাদেশ দল আরব আমিরাত গিয়ে শারজাহতে আর যায়নি। দুবাইতেই অনুশীলন করে । কিন্তু ম্যাচের আগের দিন বিকেলে পিচ দেখার জন্যঠিকই শারজাহ ছুটে গিয়েছিলেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরাম।
পিচ দেখতে না পারা নিয়ে সাকিব বলেন. ‘বৃষ্টি হচ্ছে। কেউ পিচ দেখেনি। তাই বলা মুশকিল পিচ কেমন। আর পিচ দেখলেই যে বলা যাবে কেমন কন্ডিশন, কেমন পিচ, তাও নয়। খুবই কঠিন এখানে। খেলা শুরুর আগে তাই এটা বলা কঠিন।’
বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার বিষয়টিও কঠিন হয়ে উঠেছে খে্রেলায়াড়দের জন্য। কিন্তু তারপরও মানিয়ে নিতে হবে। খেলতে নামতে হবে। সাকিব বলেন, ‘অবশ্যই এটি খুব কঠিন। শুধু বোলিং বা ফিল্ডিং না, ব্যাটিংয়ের জন্যও। তবে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়, তাদের ক্যারিয়ারের কোনো না কোনো অংশে এমন কন্ডিশন অথবা ভিন্ন কন্ডিশনে খেলেছে। তারা জানে কীভাবে এটি ম্যানেজ করতে হবে। আমরা অস্বীকার করতে পারব না যে এখানে খুব ঠাণ্ডা। তবে আমাদের ম্যানেজ করতে হবে। আমি মনে করি দুই দলই জানে কীভাবে ম্যানেজ করতে হয়।’
অথচ এই অ্যাডিলেডে বাংলাদেশ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খেলকে এসে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল।
বাংলাদেশ যেখানে একটি মাত্র ম্যাচ খেলেছে অ্যাডিলেডে, সেখানে ভারতের খেলার সংখ্যা অগণিত। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টেয়েন্টি মিলিয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছে। তাই এ রকম কন্ডিশন এখানে আবার এই সমস্যা সেই ভারতের। সাকিবও সেটি মনে করিয়ে দিলেন, ‘ভারতীয় দল এখানে কত টেস্ট ম্যাচ খেলেছে, কতবার ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। আমাদের প্রায় সবার জন্য নতুন, সম্ভবত আমি ও তাসকিন বাদে (সৌম্য সরকারও আছে)। তো স্বাভাবিকভাবেই একইরকম অনুভূতি না অবশ্যই। আমাদের যেটা চেষ্টা থাকবে মাঠে শতভাগ দেওয়া এবং দলের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসা।’
অ্যাডিলেডে শুধু ভারত বেশি ম্যাচ খেলার কারণেই নয়, দর্শক সমর্থনের দিক দিয়েও ভারত এগিয়ে থাকবে। ভারতের খেলা মানেই তাদের প্রবাসীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। বাংলাদেশের প্রবাসীরাও মাঠে আসেন পরিমাণে। অন্য কোনো দলের বিপক্ষে খেলা হলে তা বিশেষভাবে বোঝা গেলেও ভারতের বিপক্ষে খেলার দিন যেন তাদের উপস্থিতিও অনুবীক্ষন যন্ত্র দিয়ে দেখতে হয়। তবে সাকিব এটিকে কোনো সমস্যা বলে মনে করেন না।
তিনি বলেন, ‘ আমার মনে হয় না এটি কোনো সমস্যা হবে। মানসিকভাবে আমরা তৈরি আছি খেলার জন্য। আমার ধারণা অবশ্যই গ্যালারি ভরা থাকবে। কারণ, আমরা ভারতের বিপক্ষে খেলব। তারা অস্ট্রেলিয়ার যেখানেই খেলে, সব সময় অনেক দর্শক পায়।’
এমপি/এমএমএ/