ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চান সোহান
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান যেমন গর্জন করতে পারেন, তেমনি আবার ধীরস্থির শান্তশিষ্টও। তার চরিত্রের এই বৈশিষ্ট্য ২২ গজের পিচে। উইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে তিনি ৬৪ রান করেছিলেন টেস্ট মেজাজে খেলে ১৪৭ বলে।
আবার দ্বিতীয় টেস্টে তার ব্যাটে ছিল সাগরের গর্জন। ৫০ বলে খেলেন ৬০ রানের অপরাজিত। একই সফরে টি-টোয়েন্টিতে তিনি যেমন ১৬ বলে ২৫ রান করেছিলেন, তেমনি ১৩ বলে ছিল ৭ রানের ইনিংসই। তবে তার ব্যাটে গর্জনই বেশি শুনা যায়। বিশেষ করে লিমিটেড ওভারের ম্যাচে।
আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট থেকে দৃষ্টি ফেরানো যায় ঘরোয়া আসরে। ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে তার শেষ চারটি ইনিংস ছিল অগ্নিমূর্তির। এই চারটি ম্যাচের তিনটিতে জয়ী শেখ জামাল। যেখানে দুইটি নিশ্চিত হারা ম্যাচ তারা জিতে নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে ভর করে। আবাহনীর করা ৬ উইকেটে ২২৯ রানের জবাব দিতে গিয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৬৪ রানে হারিয়েছিল ৩ উইকেট ।
এরপর সোহান ক্রিজে এসে শুধু পতন ঠেকানইনি। শক্ত হাল ধরে আক্রমণাত্বক ব্যাটিংকরে দলকে জিতিয়ে তবেই ফেরেন ড্রেসিং রুমে। ২ ছক্কা আর ৮ চারে ৮১ বলে অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংস খেলে সোহানই সেদিন হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা।
শুধু এই ম্যাচে। একই অবস্থা হয়েছিল প্রাইম ব্যাংক ক্লাবের বিপক্ষেও। আগে ব্যাট করতে নেমে ৩০ রান হারিয়েছিল ৩ উইকেট। এবার ক্রিজে এসে সোহান খেলেন ১০৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস। অবশ্য এই ম্যাচ জিততে পরেনি সোহানের শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
আবার রূপগঞ্জ টাইগার্সের ৬ উইকেটে করা ২৪৭ রান পাড়ি দিতে নেমে একই অবস্থা হয়েছিল শেখ জামালের ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে। এবার নুরুল হাসান সোহানের ১১৮ বলে অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংস খেলকে দলকে জয়ী করিয়েছিলেন। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষেও তিনি ৬৪ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এবার অবশ্য দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে নামতে হয়নি তাকে। তার দল জিতেছিল ৭২ রানে।
টি-টোয়েন্টির নেৃতৃত্ব পাওয়া নুরল হাসান সোহান খেলতে চান ভয় ডরহীন ক্রিকেট। রবিবার (২৪ জুলাই) মিরপুরে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি সে রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
নুরুল হাসান সোহান বলেন, ‘ফিয়ারলেস (ভয়ডরহীন) ক্রিকেট খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই চেষ্টা করব যেন এটা করতে পারি।’ তবে এ জন্য তিনি আগে থেকে কোনো পরিকল্পনা করতে চান না। এতে করে প্রক্রিয়া ঠিক থাকে না বলেও জানান তিনি।
সোহান বলেন, ‘আগে থেকে ভেবে নিলে প্রক্রিয়া ঠিক থাকে না। এ জন্য প্রক্রিয়াটা গুরুত্বপূর্ণ, ফল নিয়ে চিন্তা করছি না। ফিয়ারলেস থাকলে ইতিবাচক জিনিসি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।’
জিম্বাবুয়ে সফর দিয়ে নিজের অধিনায়কত্ব শরু করতে যাওয়া নুরুল হাসান সোহান যার কাছ থেকে নেতৃত্ব পেয়েছেন সেই মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাটাকেই কাজে লাগাতে চান। একইসঙ্গে অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাও।
তিনি বলেন, ‘রিয়াদ ভাইয়ের অধীনে খেলে আমি অনেক কিছু শিখেছি। সবার কাছ থেকেই শিখেছি। সবাই আলাদা ব্যক্তিত্ব। সবার কাছ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করতে চাই।’
নুরুল হাসানের দলে পঞ্চপান্ডবের কেউ নেই। নুরুল হাসান সোহান তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটে আমাদের সিনিয়র যারা আছেন তাদের যে অবদান তাদের কথা একটা দুইটা কথায় শেষ করতে পারব না। একটা জিনিস, এখন সব কিছু প্রক্রিয়ার ভেতরে আছে। আমাদের জন্য এটা একটা সুযোগ সামনে এগিয়ে নেওয়ার। তারা বাংলাদেশ দলকে একটা জায়গায় নিয়ে এসেছে। আমরা যারা জুনিয়র আছি বা খেলছি তাদের দায়িত্ব পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া। এটা সবার জন্য সুযোগ। মূল বিষয় হচ্ছে আমাদের দলগতভাবে ভালো খেলতে হবে। সেটা করতে পারলে ভালো হবে।’
এমপি/এমএমএ/