বিসিবির ক্লাব কোটায় নির্বাচনে সবার সমান অধিকার
বাংলাদেশর ঘরোয়া ক্রিকেটে সবচেয়ে জমজমাট, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং ভীত মজবুত করা আসর হলো প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে কাউন্সিলারশি নিশ্চিত করতে পছন্দের ক্লাবগুলোকে এর আওতায় রাখতে মাঠের খেলায় প্রভাব বিস্তার করা হতো। কারণ প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ লিগ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ লিগে সব দলের কাউন্সিলারশিপ ছিল না।
দ্বিতীয় বিভাগে ১২টি ও তৃতীয় বিভাগে ৮টি শীর্ষে থাকা ক্লাবের কাউন্সিলারশিপ ছিল। এই কাউন্সিলারশিপ নিশ্চিত করতে চলতো পাতানো খেলা। সেখানে প্রতিপক্ষ রাজি না হলে আম্পায়ার দিয়ে ম্যাচের ফলাফল নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসা হতো। এটি ছিল ওপেন সিক্রেট। অবশেষে এর দায় থেকে ক্লাবগুলোকে মুক্তি দিয়েছে বিসিবি।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বিসিবির এজিএম এই চার বিভাগের সবগুলো ক্লাবের একটি করে কাউন্সিলারশিপ দেওয়ার সিন্ধান্ত অনুমোদন করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রিমিয়ার বিভাগ সুপার লিগের ছয়টি ক্লাবের একটি করে কাউন্সিলারশিপও কমানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায় বিসিবির এই সিন্ধান্ত ছিল প্রশংসনীয়।
আগে বিসিবির ক্লাব কোটায় কাউন্সিলার ছিলেন ৫৮ জন। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছেন ৭৮। আগে প্রিমিয়ার বিভাগে ১৮ জন, প্রথম বিভাগে ২০ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ১২ জন ও তৃতীয় বিভাগে ৮ জন কাউন্সিরার ছিলেন। বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রিমিয়ার বিভাগে ১২, প্রথম বিভাগে ২০, দ্বিতীয় বিভাগে ২৪ ও তৃতীয় বিভাগে ২০ জন।
বিসিবি সবগুলো ক্লাবকে একটি করে কাউন্সিলারশিপ দেয়ার মাধ্যমে যেমন প্রশংসনীয় কাজ করেছে, তেমনি নিজেদের একটি সমালোচনা থেকেও মুক্ত করেছে। বিসিবির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ২০১২ সালের ১৭ অক্টেবার প্রথমবার দায়িত্ব নেওয়ার পর নির্বাচনের আগে প্রিমিয়ার বিভাগ সুপার লিগের ছয়টি ক্লাবকে দুইটি করে কাউন্সিলারশিপ দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে গঠনতন্ত্র অনুমোদন করে নিয়েছিল। সে সময় এ নিয়ে অনেক বিতর্ক আর সমালোচনাও হয়েছিল। কিন্তু বিসিবি সভাপতি ছিলেন অনড়। অবশেষে ১০ বছর পর তিনি সেই সিন্ধান্তের পরিবর্তন আনলেন। আগের সিন্ধান্তকে ভুল হিসেবে মানতে নারাজ বিসিবি সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটি ভুল সিন্ধান্ত ছিল না। এর মাধ্যমে লিগে প্রতিদ্বন্ধিতা বেড়েছে। আমাদের মূল চাওয়া ছিল আরও বেশি ক্লাব যেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়াই করে দল বানায়। সেজন্য ইনসেনটিভ হিসেবে এটা (দুটি করে কাউন্সিলারশিপ) দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন শুধু আবাহনী মোহামেডান নয়, অনেক ক্লাব এই চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইট দেওয়ার জন্য লড়াই করে। দল গঠন করে। যে কেউ যে কোনোবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। এখন অনেক ক্লাব শক্তিশালী দল গঠন করছে ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে।’
প্রিমিয়ার লিগ আবাহনী ও মোহমেডান এক সময় শুধু চ্যাম্পিয়ন হতো উল্লেখ করে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘দীর্ঘ বহু বছর ধরে আমি ক্রিকেটে সম্পৃক্ত। আবাহনী ক্লাবে আগে জড়িত ছিলাম। তখন থেকেই দেখেছি প্রিমিয়ার লিগে দুটি ক্লাব- আবাহনী ও মোহামেডান। ক্লাব অনেক ছিল, কিন্তু আবাহনী মোহামেডানই চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য লড়াই করতো। শক্তিশালী দল গঠন করতে চাইতো যেন তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে।’
এমপি/এমএমএ/