বাংলাদেশের নিজেরাই যখন নিজেদের প্রতিপক্ষ!
যখন অভাব থাকে, তখন সেই অভাব দূর করার জন্য পরিবারের সবার চেষ্টা থাকে। সবার চেষ্টায় অভাব কেটে গেলে আসে সুখ। তখন দেখা দেয় আরেক সমস্যা। এ সমস্যা নিজেদের। থাকে মতানক্য। সৃষ্টি হয় অন্তঃদ্বন্দ্ব। উইন্ডিজ সফরে একদিনের সিরিজে বাংলাদেশের অবস্থা অনেকটা সে রকমই। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের চরম ব্যর্থতার পর একদিনের সিরিজ জিতে সেখানে কিছুটা আলোর দেখা মিলেছে। আজ শেষ ম্যাচ। জিতলেই হোয়াইওয়াশ। কিন্তু সেখানেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। অধিনায়ক তামিম ইকবাল চান সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়াতে আজকের ম্যাচে যারা খেলেননি তাদের খেলার সুযোগ করে দিয়ে পরখ করে নিতে। যেহেতু সিরিজের ম্যাচগুলো আইসিসির ওয়ানেড বিশ্বকাপ ক্রিকেটের সুপার লিগের অংশ নয়। তিনি এ কথা বলেছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার পর। কিন্তু আজকের ম্যাচের আগের দিন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর কথার সুর আবার ভিন্ন। তার চিন্তা আর অধিনায়কের চিন্তা বিপরীত। ডোমিঙ্গো শক্তি পরীক্ষায় খুব একটা আগ্রহী নন। পরিবর্তন হলেও সেখানে তিনি ব্যাপক পরিবর্তনে বিশ্বাসী নন। তাই আজকের ম্যাচের আগে সেরা একাদশ নির্বাচন করতে গিয়ে কোচ ও অধিনায়কের মাঝে যদি মত বিরোধ দেখা দেয় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উইন্ডিজ নয়, তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ! এ রকম অবস্থায় যদি আজকের ম্যাচ ফসকেও যেতে পারে?
যেহেতু মতানক্য দেখা দিয়েছে তাই ধরেই নেওয়া যায় আজকের ম্যাচে ব্যাপক পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম। ১৫ সদস্যের একদিনের দলে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ খেলেননি তিনজন ক্রিকেটার। তারা হলেন- এনামুল হক বিজয়, এবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। এ ছাড়া একটি করে ম্যাচ খেলেছেন তাসকিন আহমেদ (প্রথম ম্যাচ) ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (দ্বিতীয় ম্যাচ)। আজকের ম্যাচে খুব সম্ভবত তাসকিন আহমেদ ফিরতে পারেন। তার সঙ্গে খেলার সুযোগ পেতে পারেন এনামুল হক বিজয়। সে ক্ষেত্রে একাদশের বাইরে যেতে পারেন মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের যে কোনো একজন। সম্ভাবনা বেশি মোস্তাফিজের। আর এনামুলকে জায়গা করে দিতে সরে দাঁড়াতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু কোচ ডোমিঙ্গোর কথার সারমর্ম খুঁজলে দেখা যায় এনামুলের খেলার সম্ভাবনা শূন্যের কোটায়। এর কারণ তিনি ডান হাতি ব্যাটসম্যান। ডোমিঙ্গোর প্রয়োজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘বিষয়টা আসলে যতটা সহজে ভাবা হচ্ছে, ততটা নয়। শ্রীলঙ্কার যে বোলিং লাইনআপ তাতে করে আমার প্রয়োজন যত বেশি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, কিন্তু সে (এনামুল) ডান হাতি। আবার সে এখনো ৫০ ওভারের সিরিজে কোনো ম্যাচ খেলেনি। তাই পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম।’
সেরা একাদশ নিয়ে যদি এ রকম মতানৈক্য দেখা না দিতো, তাহলে আজকের ম্যাচের প্রতিপাদ্য বিষয় থাকতো উইকেট নিয়ে, যেখানে সেরা একাদশে দ্বিতীয় ম্যাচের মতোই স্পিনার বেশি খেলানো হবে, না প্রথম ম্যাচের মতো তিন পেসারে ফিরে যাওয়া হবে। আলোচনায় থাকতো টসের বিষয়টিও। প্রথম দুই ম্যাচেই টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ। যার ফায়দাও তুলেছিল প্রতিপক্ষে ১৪৯/৯ ও ১০৮ রানে আটকে রেখে। পরে ম্যাচ জিতেছিল ৬ ও ৯ উইকেটে। আজও টস জিতলে অবধারিতভাবে ফিল্ডিংই বেছে নেওয়া হবে। এই সিন্ধান্তে পক্ষে আরও শক্ত যুক্তি হয়ে দাঁড়াবে কন্ডিশন। কারণ বৃষ্টির জন্য শুক্রবার বাংলাদেশ দল কোনো অনুশীলনই করতে পারেনি। এ রকম কন্ডিশনে টস জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। ক্রিকেটের ভাষায় টস জেতা মানে ম্যাচ জেতার অর্ধেক কাজ করে রাখা।
এমপি/এসএন