প্রয়োজনে খেলতে না চাইলে রিয়াল ছাড়তে বললেন গুতি
হোসে মারিয়া গুতিরেজ হার্নান্দেজ নামের চেয়ে গুতি নামেই বেশি পরিচিত রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই মিডফিল্ডার। এবার চটেছেন এ ফুটবলার।
রবিবার রাতে ‘এল ক্লাসিকো’য় ঘরের মাঠে বার্সেলোনার কাছে ৪-০ গোলে হেরেছে রিয়াল। এই হারে কিছু খেলোয়াড়ের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রিয়ালের হয়ে তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ও পাঁচবার লা লিগাজয়ী গুতি।
রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির প্রতি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী সাবেক এই মিডফিল্ডার। রিয়ালের হয়ে যেসব খেলোয়াড় অবদান রাখতে অনিচ্ছুক, প্রয়োজনের মুহূর্তে যেসব খেলোয়াড়কে পাওয়া যায় না, তাদের ছেড়ে দেওয়া হোক। এতে রিয়াল সব প্রতিযোগিতায় ভালোভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে বলে মনে করেন গুতি।
স্প্যানিশ টিভি অনুষ্ঠান ‘এল চিরিনগুইতো’তে গুতি বলেছেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদ ১২ থেকে ১৩ জন খেলোয়াড় নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে না। ইউরোপিয়ান কাপ (চ্যাম্পিয়নস লিগ), লা লিগা ও কোপা দেল রে টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা একটি বড় দল ১৪ জন নিয়ে খেলতে পারে না। হচ্ছেটা কী এখানে? যে খেলতে চায় না, তার রিয়ালে থাকা অনুচিত। বিষয়টি এতটাই সরল। কিন্তু এখন! তাকে (আনচেলত্তি) এটা বলতে দিন।’
গুতি এরপর পরিষ্কার করে বলেছেন, 'ক্লাব অথবা আনচেলত্তিকে খেলোয়াড়দের বলতে হবে 'সংবাদ সম্মেলন ডেকে বলো আমি রিয়ালের হয়ে খেলতে চাই না।' রিয়াল মাদ্রিদ বেতন দিচ্ছে। কীভাবে খেলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে?'
বার্সেলোনার বিপক্ষে হারের এই ম্যাচে ইসকো, এদেন হ্যাজার্ড, লুকা ইয়োভিচ কিংবা গ্যারেথ বেলের মধ্যে কাউকে বেঞ্চ থেকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।
গুতি এ নিয়েই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, ‘ধরুন আমি আনচেলত্তি, বেঞ্চে আমার হাতে ইসকো, বেল, হ্যাজার্ড ও ইয়োভিচ আছে। কিন্তু আমি কাউকে মাঠে নামাতে পারছি না। তাহলে হচ্ছেটা কী? আমার তো এখানেই হেরে যাওয়ার কথা! বার্সার বিপক্ষে ম্যাচটা আমি দেখেছি। রিয়াল মাদ্রিদের বেঞ্চও দেখেছি, দ্বিতীয়ার্ধে দেখলাম প্রথম বদলি হিসেবে মারিয়ানোকে নামানো হয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? মারিয়ানোর জায়গায় কেন বেল কিংবা হ্যাজার্ড নামল না? সে (মারিয়ানো) এ মৌসুমে বেশি সময় খেলেনি। কিছু একটা ঘটছে, এমন কিছু, যা ক্লাব কোনোভাবেই হতে দিতে পারে না।’
বিরতির পর দানি কারবাহলের জায়গায় মারিয়ানো এবং টনি ক্রুসের জায়গায় এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে মাঠে নামান আনচেলত্তি। মার্কো আসেনসিও ও লুকাস ভাসকেজ নেমেছেন ৬০ মিনিটের পর। প্রথমার্ধ শেষেই ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল রিয়াল। গুতির যুক্তি, প্রথমার্ধ শেষে দুই গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা দলকে সাহায্য করতে হ্যাজার্ড, ইয়োভিচ কিংবা বেলকে কেন মাঠে দেখা গেল না?
ওয়েলশ তারকা বেলের সঙ্গে রিয়ালের সম্পর্ক বেশ আগে থেকেই খারাপ। এ মৌসুম শেষেই তার সঙ্গে রিয়ালের চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে। গত আগস্টের পর থেকে রিয়ালের হয়ে মাত্র দুই ম্যাচ খেলা বেলের সব ভাবনাজুড়ে এখন জাতীয় দল।
ক্লাসিকোর দিন সকালে শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে রিয়াল স্কোয়াড থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন বেল। এমনকি ম্যাচ দেখতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতেও যাননি! এদিকে ওয়েলশের হয়ে ঠিকই অনুশীলন করছেন বেল।
চোটের পর চোটে আক্রান্ত হ্যাজার্ড নিজের খেলার ছন্দ হারিয়ে ফেলেছেন। আনচেলত্তি তাকে পছন্দ করলেও চেলসির হ্যাজার্ডের সঙ্গে এই হ্যাজার্ডের আকাশ-পাতাল ফারাক থাকায় বেলজিয়ান উইঙ্গারকে খেলাচ্ছেন না। অন্যদিকে, সার্বিয়ান স্ট্রাইকার লুকা ইয়োভিচের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে রিয়াল। গত জানুয়ারিতেই তাকে ক্লাব ছাড়তে বলা হয়েছিল। ঠিকমতো অনুশীলন না করার দুর্নাম আছে ইয়োভিচের বিপক্ষে।
পরিস্থিতি যখন এমন তখন গুতির দাবি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আরলিং হরলান্ডকে দলে টানুক রিয়াল। এর পাশাপাশি আরও কয়েকজন খেলোয়াড় কেনা উচিত বলে মনে করেন গুতি, ‘এমন পরিস্থিতির মধ্যে আমরা সন্দেহ করছি রিয়াল হরলান্ডকে কিনবে কি না? হরলান্ড ও এমবাপ্পে ছাড়াও আরও চার থেকে পাঁচজনকে সই করাতে হবে, যারা রিয়ালের হয়ে খেলতে চায়।’
টিটি/