লেভারকুসেনকে হারিয়ে ৬১ বছর পর শিরোপা জিতল আতালান্তা
ছবি: সংগৃহীত
ডাবলিনের আভিভা স্টেডিয়ামে জমজমাট ইউরোপা লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলো স্বপ্নবাজ দুই দল বায়ার লেভারকুসেন ও আটালান্টা। চলতি মৌসুমে কোনো ম্যাচেই হারেনি প্রতিপক্ষ বায়ার লেভারকুসেন। পাশাপাশি পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখে প্রথমবার বুন্দেসলিগা জয়ের রেকর্ড নিয়ে ট্রেবল জয়ের মিশনে এদিন খেলতে নামে লেভারকুসেন। ম্যাচের আগে তাই অনেকের কাছেই জার্মান ক্লাবটি ছিল ফেভারিট।
কিন্তু আদেমোলা লুকম্যান আর জিয়ান পিয়েরে গাস্পারেনির পরিকল্পনা ছিল অন্যরকম। নাইজেরিয়ান এই উইঙ্গার করলেন হ্যাটট্রিক। আর গাস্পারেনি ফুটবল দুনিয়াকে দেখালেন কোচ জাবি আলোনসোর বিপক্ষে কীভাবে খেলতে হয়। ৬৬ বছরের বয়েসী এই অভিজ্ঞ কোচের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে বাধ্য হলেন জাবি আলোনসো। ৩-০ গোলের জয়ে ৬১ বছরের শিরোপাখরা ঘুচালো আতালান্তা। ক্লাবের ইতিহাসে এটিই প্রথম ইউরোপিয়ান শিরোপা।
জাবি ম্যাচের শুরুতেই খানিক বাজি ধরেছিলেন। দুই সেরা তারকা প্যাট্রিক শিক ও ভিক্টর বোনিফেসকে রাখেননি শুরুর একাদশে। আকস্মিক বদল দিয়ে প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেয়াই লক্ষ্য ছিল কোচ জাবির। পুরো মৌসুমে বল পায়ে প্রেসিং করে গিয়েছে বায়ার লেভারকুসেন। ব্যতিক্রমী এই কৌশলের বিপরীতে গাস্পারেনি বেছে নিলেন গ্রেগেনপ্রেসিং ঘরানার ফুটবল। কিছুটা শারীরিক ফুটবল উপহার দিলেও লেভারকুসেনের স্বাভাবিক খেলাটা নষ্ট করেছে পুরোদমে।
আর এটার সুফল পেতে সময় লেগেছে ১১ মিনিট। ডাভিড জাপাকোস্তার দুর্দান্ত পাস থেকে লেভারকুসেনের জালে বল জড়ান লুকম্যান। পুরোটা সময় আনমার্কড থাকা লুকম্যানের এই গোলের জন্য তৈরি ছিল না কেউই। গোল খেয়েই নিজেদের খেলা গোছানোর দিকে মন দেয় লেভারকুসেন। পজিশন ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু গাস্পারেনির দল বাকি সময়টা খেলেছে ম্যান মার্কিংয়ে। একের পর এক ইন্টারসেপশনে লেভারকুসেনের স্বাভাবিক খেলা বন্ধ করে দিতে সফল হয় আতালান্তা।
ম্যাচের ২৬ মিনিটে আবারও গোলের দেখা পায় ইতালিয়ান ক্লাবটি। ২৬ মিনিটে দারুণ প্রেসিংয়ে লেভারকুসেনের বক্সের কাছাকাছি বল পান লুকম্যান। এরপর প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শটে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন নাইজেরিয়ান এ উইঙ্গার।
তবে এরপরেও জাবির দলের ওপর ভরসা ছিল ভক্তদের। চলতি মৌসুমে কম কামব্যাক তো করেনি দলটি। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ফিরে এসেছে চারবার। ইউরোপা লিগের সেমিতেও ছিল এমন কিছু। বিরতির পর জোসেফ স্টানিসিকের বদলে বোনিফেসকে মাঠে নামান আলোনসো। এবার খেলায় কিছুটা গতি এলেও আতালান্তার কৌশল আবারও ফাটল ধরায় লেভারকুসেনের পরিকল্পনায়।
একের পর এক আক্রমণে জার্মান ক্লাবটির ম্যাচে ফেরার পথ বন্ধ করে দেন। এরপর ম্যাচের ৭৫ মিনিটে আরেকটি দারুণ গোলে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লুকম্যান। তাতেই লেখা হয়ে যায় ম্যাচের ভাগ্য। অপরাজিত মৌসুম শেষ করার বিরলতম রেকর্ডের খুব কাছ থেকেই ফিরতে হয়েছে লেভারকুসেনকে। বিপরীতে ৬১ বছর পর কোনো শিরোপা নিয়ে উল্লাস করে আতালান্তা।