বায়ার্ন-রাজত্বের অবসান, জার্মানির নতুন চ্যাম্পিয়ন লেভারকুসেন
লেভারকুসেনের শিরোপা উৎসব। ছবি: সংগৃহীত
বায়ার্নের টানা ১১ বছরের শ্রেষ্ঠত্ব ধুলোয় মিশিয়ে দিল লেভারকুসেন। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার বুন্দেসলিগা জয়ের আনন্দ তাই হলো বাঁধনহারা। শুধু শিরোপা খরা যে কাটিয়েছে তা নয়, মৌসুমের শুরু থেকে সবচেয়ে লম্বা সময় অজেয় থাকার রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে ক্লাবটি।
রোববার (১৪ এপ্রিল) রাতে ঘরের মাঠে বে অ্যারেনাতে ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে হারিয়ে আগেভাগেই শিরোপা উৎসবে মেতেছে জাবি আলোনসোর দল। সেই সঙ্গে চলতি মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে একমাত্র দল হিসেবে ৪৩ ম্যাচে অপরাজিত রইল তারা। ২৯ ম্যাচ শেষে ২৫ জয়ে ৭৯ পয়েন্ট লেভারকুসেনের। বায়ার্নের পয়েন্ট ৬৩।
চলতি মৌসুম জুড়ে অনেকবার প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে হারা ম্যাচ জিতেছে লেভারকুসেন, কখনও করেছে ড্র। তবে হার মানেনি একবারও। অদম্য ফুটবলের প্রতীক হয়ে ৯০ মিনিট প্রাণপণ লড়ে গেছেন আলোনোর যোদ্ধারা। তবে এই ম্যাচে তেমন কিছু প্রয়োজন হয়নি তাদের। ২৫তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লিড এনে ভিক্টর বোনিফেস।
বিরতির ১৫ মিনিট পর ব্যবধান বাড়ান গ্রানিত গ্রানিত জাকা। ম্যাচে যাও একটু রোমাঞ্চের সম্ভাবনা ছিল, সেটাও শেষ করে ৬৮তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করেন ফ্লোরিয়ান উইর্টজ। বাকি সময়টা জুড়ে খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বে অ্যারেনায় উপস্থিত সব লেভারকুসেন ভক্তদের একটাই অপেক্ষা, কখন বাজবে ম্যাচ শেষের বাঁশি। এমন একটা দিনের অপেক্ষায় যে বছরের পর বছর কেটে গেছে ক্লাবটির সবার।
এরই মাঝে আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে ৮৩তম মিনিটে আবারও গোলের দেখা পান উইর্টজ। ক্লাবের ইতিহাস গড়ার রাতটিকে আরও স্পেশাল বানিয়ে সাত মিনিট বাদে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তিনি। অবশেষে রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই গর্জনে ফেটে পড়ল পুরো স্টেডিয়াম। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই মাঠের ভেতর ও বাইরে চলা উৎসবের রেনু যেন ছড়িয়ে পড়ল ছোট লেভারকুসেন শহরের আনাচে কানাচে।
এদিকে এই ম্যাচের আগে আলোনসো বলেছিলেন, আগাম উৎসব না করে প্রতিপক্ষকে সম্মান দেখাতে চান তারা। তবে টেবিলের ১২ নম্বর দল ব্রেমেনের বিপক্ষে লেভারকুসেনের জয়ের ব্যাপারে বাজি ধরার লোকের সংখ্যাটাই ছিল বেশি। অবিশ্বাস্য এক মৌসুমে এই দলটিকে কেউই থামাতে পারেনি। আর শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই।
এর মধ্য দিয়ে এক দীর্ঘ আফসোসের অবসান ঘটল লেভারকুসেনের। বুন্দেসলিগায় শিরোপা না জিতে রেকর্ড পাঁচবার রানার্সআপ হওয়ার পর অবশেষে তাদের হাতে ধরা দিল লিগ শিরোপা। অবশ্য যেই লেভেলের ফুটবল দলটি খেলছে, তাতে এমনটা না হলে সেটাই বরং হত বিস্ময়কর।