অধরাই থেকে গেল ব্রাজিলের হেক্সা মিশন
বিশ্বকাপ ফুটবলে সবচেয়ে বেশি চ্যাম্পিয়ন দল ব্রাজিল। বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলা একমাত্র দল ব্রাজিল। বিশ্বকাপে টানা সবচয়ে বেশি ফাইনাল খেলা দলও ব্রাজিল। টানা তিনবার ফাইনাল খেলে। এ রকম কীর্তি আছে তাদের দুইবার। প্রথমে ১৯৭০ থেকে ১৯৭৮ এবং ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল তারা টানা তিনবার ফাইনাল খেলেছিল।
যেখানে তারা দুইবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়। এখানে অবশ্য জামার্নির নামও আসবে। তারাও টানা তিনবার ফাইনাল খেলেছে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল একবার।
সাম্বা নৃত্যের দেশ ব্রাজিলের ছন্দময় খেলার জন্য বিশ্বে তাদের অগণিত সমর্থক। বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরেই তারা ভক্তরা ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হবে, এই আশায় বুক বাঁধেন। কখনো সফল হয়, কখনো ব্যর্থ হয়। বিশ্বকাপের বাইশ আসরে ব্রাজিল ৭ বার ফাইনাল খেলেছে।
এরচেয়ে বেশি আটবার ফাইনাল খেলেছে জামার্নি। কিন্তু ৭ বার ফাইনাল খেলে ব্রাজিল হেরেছে মাত্র দুইবার। জামার্নি আটবার খেলে জয়-পরাজয় সমান সমান। এ ছাড়া, সেমি ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে চারবার। বাকি ১১ বারের মাঝে সবচেয়ে বেশি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে ছয়বার। দ্বিতীয় পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে দুইবার। বাকি তিনবার গ্রুপ পর্ব থেকে।
ব্রাজিল সর্বশেষ শিরোপা জিতেছে ২০০২ সালে। এটি ছিল তাদের পঞ্চম শিরোপা। এরপর থেকে শুরু হয়েছে তাদের হেক্সা মিশন। কিন্তু গত ৪টি আসরের মতো এবারও তারা সমর্থকদের হতাশ করেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরে যায়। ব্রাজিলের এমন বিদায় সমর্থকদের জন্য বেদনার। তাদের মেনে নিতে কষ্ট হয়। তারপরও তাদের মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে ব্রাজিল গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। পরের আসরেও তারা প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু ১৯৩৮ সালে তৃতীয় আসরে ব্রাজিল তৃতীয় হয়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ১৯৫০ সালে চতুর্থ আসরে ব্রাজিল ফাইনালে উঠে রানার্সআপ হয়েছিল। পরের আসরে আবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল।
পরের চার আসরের মাঝে ব্রাজিল তিনবার ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত অষ্টম আসরে ব্রাজিল আবার গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। ১৯৭৪ সালে চতুর্থ ও ১৯৭৮ সালে তৃতীয় হওয়ার পর ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনটি আসরে তারা সেমি ফাইনালে উঠতে পারেনি।
১৯৮২ সালে দ্বিতীয় পর্ব, ১৯৮৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল ও ১৯৯০ সালে শেষ ষোল থেকে বিদায় নিয়েছিল। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তিন আসরে তারা দ্বিতীয়বারের মতো টানা তিনবার খেলে ফাইনাল। ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের কাছে হেরে হয়েছিল রানার্সআপ। ২০০৬ সালে ফ্রান্সের কাছে, ২০১৪ সালে নিজেদের দেশে সেমি ফাইনালে নেদাল্যান্ডসের কাছে ২-১ গোলে এবং ২০১৮ সালে বেলজিয়ামের ২-১ গোলে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেছিল। এবারও তাই ঘটেছে।
এমপি/এমএমএ/