নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার হারের পাল্লাই ভারী
মেসি ভক্তরা বুঁদ হয়ে আছেন ফুটবলের এই রাজপুত্রের হাতে উঠবে এবারের বিশ্বকাপ। এটাই যে তার শেষ বিশ্বকাপ। এবার যদি তিনি না পারেন তাহলে এই অপূর্ণতা নিয়েই কিন্তু মেসিকে বিদায় নিতে হবে। কিন্তু এমনটি চান না মেসি ভক্তরা। তাদের সেই চাওয়ার পথে মেসি একে একে ৪টি বিশ্বকাপে হতাশ করেছেন। এবার তার শেষ বিশ্বকাপে তিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন। গ্রুপপর্বের পর শেষ ষোলো। এই দুই ধাপ পার হয়ে তিনি পৌঁছে গেছেন তৃতীয় ধাপ কোয়ার্টার ফাইনালে। যেখানে আর্জেন্টাইন ভক্তদের সামনে বাধার পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নেদারল্যান্ডস।
আগামীকাল (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে মেসি স্বপ্ন যাত্রার পথে আরেকটি বাধা অতিক্রম করতে নামবে আর্জেন্টিনা।
ডাচদের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার অতীত রেকর্ড যে সুখকর নয়। ৯ বারের মোকাবিলায় ডাচদের জয় ৪ বার। আর্জেন্টিনা জিতেছে ৩ বার। বাকি ৩ বার ড্র হয়েছে। আগামীকাল আর্জেন্টিনা জিতলে জয়-পরাজয়-ড্র সব সমান হয়ে যাবে। স্বপ্ন যাত্রা পূরণের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবেন মেসি। বিপরীত ফলাফল হলে থেমে যাবে মেসির স্বপ্নপূরণের যাত্রা। কিন্তু মেসি ভক্তদের প্রত্যাশা এবার আর তাদের হতাশার চাদরে ঢাকা পড়তে হবে না।
৯ বারের মোকাবিলায় দুই দল বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছে ৫ বার। দুই দলরই জয় দুটি করে। একবার হয়েছিল ড্র। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু হয়েছিল ডাচদের যাত্রা। ১৯৭৪ সালে টোটাল ফুটবলের জনক ডাচরা তার নান্দনিক প্রদশর্নী করে আর্জন্টিনাকে বিধ্বস্ত করেছিল ৪-১ গোলে। একমাস পর বিশ্বকাপ ফুটবলে আবার তারা জয়ী হয়েছিল ৪-০ গোলে। ডাচ ফুটবলের অন্যতম সেরা ফুটবলার জোয়ান ক্রুয়েফ করেছিলেন ২ গোল। অপর দুটি গোল ছিল জনি রেপ ও রুড ক্রোলের। কিন্তু পরের আসরেই আর্জেন্টিনা নিয়েছিল প্রতিশোধ। যে প্রতিশোধের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আর্জেন্টিনার মধুর স্মৃতি। ১৯৭৮ সালে ঘরে মাঠে ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনা জিতেছিল প্রথম বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের পরের জয় ছিল ১৯৯৮ সালে ২-১ গোল। আর্জেন্টিনা জিতেছিল ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে। নির্ধারিত সময় গোলশূন্য ড্র থাকার পর টাইব্রেকারে জিতেছিল ৪-২ গোলে। ২০০৬ সালে দুই দলের গ্রুপপর্বের ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। পরে দুই দলই গ্রুপপর্ব অতিক্রম করতে পেরেছিল।
ফিফা প্রদশর্নী ম্যাচে ডাচদের জয়ের পাল্লা ভারী। ৪ ম্যাচের দুটিতে জয় তাদের। দুটি হয়েছে ড্র। ১৯৭৪ সালে প্রথম ম্যাচে ৪-১ গোলে জয় ছাড়া ডাচরা আবার জিতেছিল ২০০৩ সালে ১-০ গোলে। ১৯৮৯ সালে গোলশূন্য ও ১৯৯৯ সালে ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।
এবারের আসরে শেষ আটে আসতে আর্জেন্টিনাকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। গ্রপপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে আর্জেন্টিনা শেষ ষোলোতে উঠা কঠিন করে তুলেছিল। পরের দুই ম্যাচে প্রথমে মেক্সিকোকে ২-০ ও পরে পোল্যান্ডকেও ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই উঠে শেষ ষোলোতে। শেষ ষোলোতে তারা অস্ট্রেলিয়াকে হার মানায় ২-১ গোলে।
নেদারল্যান্ডস শেষ ষোলো নিশ্চিত করে সবার আগে। ‘এ’ গ্রুপে তারা ৭ পয়েন্ট নিয়ে অপরাজিত থেকে টিকিট পেয়েছিল। প্রথম ম্যাচে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে ড্র করেছিল ১-১ গোলে। শেষ ম্যাচে আবার কাতারকে পরাজিত করেছিল ২-০ গোলে। শেষ ষোলোতে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। জয়ী হয়েছিল ৩-১ গোলে।
এমপি/এসজি