স্যামসন-তিলকের জোড়া সেঞ্চুরিতে সিরিজ জিতল ভারত
ছবি: সংগৃহীত
ওয়ানডে ও টেস্টে সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না ভারতের। তবে টি-টোয়েন্টিতে রীতিমতো উড়ছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। শেষ ম্যাচ যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই যেন আবার শুরু করলেন তিলাক ভার্মা। খুনে ব্যাটিংয়ে তিনি করলেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। পরপর দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফেরার পর সিরিজে আরেকটি শতকের দেখা পেলেন স্যাঞ্জু স্যামসন।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) চতুর্থ ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১৩৫ রানের জয়ে চার ম্যাচের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে জিতল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এই সংস্করণে রানের হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভারতের সবচেয়ে বড় জয় এটি। ২০২৩ সালে জোহানেসবার্গে তাদের ১০৬ রানের জয় ছিল আগের রেকর্ড।
জোহানেসবার্গে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান সংগ্রহ করে ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২০ রান করেছেন তিলক। তাছাড়া সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্যামসনও। জবাবে খেলতে নেমে ১৮ ওভার ২ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রানের বেশি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এমন শুরুর পর আর ফিরতে পারেনি তারা। চাপেই যেন শেষ হয়ে গেছে প্রোটিয়ারা। ইনিংসের প্রথম তিন ওভারে ১০ রান তুলতেই সাজঘরে ফেরেন টপ অর্ডারের চার ব্যাটার।
এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে ট্রিস্টিয়ান স্টাবস ও ডেভিড মিলার মিলে ৮৬ রান যোগ করে মান রক্ষা করতে পেরেছেন। তবে কতটা পেরেছেন সেটা নিয়ে তর্ক হতে পারে! স্টাবসের ৪৩ আর মিলারের ৩৬ রানের সুবাদে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে দলীয় রান। তবে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানের হার এড়াতে পারেনি প্রোটিয়ারা। এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন ভারতের দুই ওপেনার। ১৮ বলে ৩৬ রান করে আভিষেক শর্মা ফিরে গেলে ভাঙে ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি।
ইনিংসে এরপরের গল্পটা শুধুই স্যামসন-তিলক জুটির। জোহানেসবার্গের চেনা ২২ গজে এদিন প্রোটিয়া বোলাররা বল ফেলার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। দুই প্রান্তেই সমানতালে ব্যাট চালিয়েছেন এই দুই ব্যাটার। দুজনেই পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। ৫১ বলে সেঞ্চুরি করেছেন স্যামসন, একই মাইলফলক ছুঁতে তিলক খেলেছেন মাত্র ৪১ বল।
দুজনের জুটিতেও হয়েছে রেকর্ড। দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২১০ রানের জুটি টি–টোয়েন্টিতে যেকোনো উইকেটে ভারতের সর্বোচ্চ এবং আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ।
২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার আর্শদিপ। এই ম্যাচে দুটিসহ সিরিজে ভারুনের শিকার ১২ উইকেট। গত মাসে দেশের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে প্রায় তিন বছর পর এই সংস্করণে ফেরার পর ৭ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিলেন ৩৩ বছর বয়সী ভারুন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ২৮৩/১ (স্যামসন ১০৯*, আভিশেক ৩৬, তিলাক ১২০*; ইয়ানসেন ৪-০-৪২-০, কুটসিয়া ৩-০-৪৩-০, সিপামলা ৪-০-৫৮-১, সিমেলানে ৩-০-৪৭-০, মহারাজ ৩-০-৪২-০, মার্করাম ২-০-৩০-০, স্টাবস ১-০-২১-০)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৮.২ ওভারে ১৪৮ (রিকেলটন ১, হেনড্রিকস ০, মার্করাম ৮, স্টাবস ৪৩, ক্লসেন ০, মিলার ৩৬, ইয়ানসেন ২৯*, সিমেলানে ২, কুটসিয়া ১২, মহারাজ ৬, সিপামলা ৩; আর্শদিপ ৩-০-২০-৩, পান্ডিয়া ৩-১-৮-১, রামানদিপ ৩.২-০-৪২-১, ভারুন ৪-০-৪২-২, বিষ্ণই ৩-০-২৮-১, আকসার ২-০-৬-২)।
ফল: ভারত ১৩৫ রানে জয়ী
সিরিজ: ৪ ম্যাচের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে জয়ী ভারত
ম্যান অব দা ম্যাচ: তিলাক ভার্মা
ম্যান অব দা সিরিজ: তিলাক ভার্মা