ভারত বধের লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট জয়ের পর বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন ক্রিকেটাররা। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তরফে ক্রিকেটারদের বোনাসও দেওয়া হয়েছে। অবশ্য পাকিস্তান সিরিজের পর আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ভারতের বিপক্ষে দুটি টেস্ট ম্যাচ এবং তিন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে আজ রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দেশ ছাড়লেন ক্রিকেটাররা।
দুপুর ১টা ৫ মিনিটের ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন ক্রিকেটাররা। দলের সঙ্গে এদিন ১৫ ক্রিকেটার গিয়েছেন। এ ছাড়া ইংল্যান্ড থেকে ভারতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের।
দেশ ছাড়ার আগে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন শান্ত। এ সময় নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো দল হিসেবে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করবো, যাতে ভালো ক্রিকেট খেলা যায়। বাংলাদেশ দল জিতুক এটাই পরিকল্পনা। সেই লক্ষ্যেই আমরা মাঠে নামব। আর আমি নিজেও ভালো প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো দলের হয়ে অবদান রাখার।
ভারত সিরিজ চ্যালেঞ্জিং হবে মন্তব্য করে টাইগার অধিনায়ক আরও বলেন, এই সিরিজটা আমাদের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ তারা আমাদের থেকে র্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচদিন ভালো ক্রিকেট খেলা। কারণ বেশিরভাগ ম্যাচে শেষ দিনে গিয়ে ফলাফল হয়। তাই শেষদিন পর্যন্ত খেলা নিতে পারলে আমাদের হয়তো একটা সুযোগ থাকবে। কী ধরনের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন, সেটাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কোচের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে আমাদের যেহেতু অনুশীলন সেশন রয়েছে, তাই আশা করছি ভালো কিছুই হবে।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বারম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ১৯ সেপ্টেম্বরে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে ২৬ সেপ্টেম্বরে কানপুরে। দুটি টেস্ট ম্যাচই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। টেস্ট শেষে মাঠে গড়াবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ডাম্পট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে পেকুয়া এবিসি আঞ্চলিক মহাসড়কের ধনিয়াকাটা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- অটোরিকশাচালক পেকুয়ার ধনিয়াকাটার ছৈয়দ আলমের ছেলে মনিরুল মান্নান, চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকার ফিরোজ ও তার স্ত্রী শারমিন এবং তাদের শিশু সন্তান। নিহত অপরজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সকাল ৭টার দিকে পেকুয়া এবিসি এলাকায় মিনি ট্রাক (ডাম্প ট্রাক) ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৫ জন নিহত হয়। আরও দুইজন আহত হন। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুইটি জব্দ করা হয়েছে।
দেশের শোবিজ অঙ্গনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নাট্যাভিনেত্রী ও মডেল মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগে আলোচনার কেন্দ্রে। অভিযোগের তালিকায় রয়েছে সাফা কবির (আনাতোনি কেলি সাফা) ও মুমতাহিনা চৌধুরী টয়ার নাম, যাদের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লেষের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এছাড়া, নাট্য জগতের আরেক পরিচিত মুখ তানজিন তিশা এবং সংগীতশিল্পী সুনিধি নায়েকের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লেষের বিষয়ে বিশেষ অনুসন্ধান চালাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (নারকোটিক্স)। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে, যা শোবিজে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- সূত্রে জানা গেছে, মাদকসহ গ্রেফতার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে তথ্য-প্রমাণসহ সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধির নাম বেরিয়ে আসে। একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা নিয়মিত মাদক সংগ্রহ করে আসছিলেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী অরিন্দম রায় দীপকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারকোটিক্সের সহকারী পরিচালক রাহুল সেন গণমাধ্যমকে বলেন, দীপকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে আমরা কয়েকজন প্রথম সারির অভিনেত্রী ও মডেলের মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নারকোটিক্স বলছে, মাদক সম্পৃক্ততার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক ছাত্র দীপের ওপর বিশেষ নজরদারি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তার গতিবিধি অনুসরণের ধারাবাহিকতায় ১৭ অক্টোবর ঢাকা বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন দীপ। এ সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সিসা, এমডিএমএ, এলএসডি ও কুসসহ বেশ কিছু মাদক উদ্ধার করা হয়। পরে নারকোটিক্সের একটি বিশেষায়িত টিম দীপকে ২ দিনের রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়ে মৌখিক স্বীকারোক্তির একপর্যায়ে দীপের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং পরীক্ষা করা হয়। এতে জনপ্রিয় কয়েকজন অভিনেত্রীর মাদক সম্পৃক্ততার তথ্য মেলে। এমনকি তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া মাদকের অর্ডারসংক্রান্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিং রেকর্ডও পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, দীপের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সাফা, টয়া, তিশা এবং সুনিধি নায়েকের নামে সেভ করা কয়েকটি নম্বর থেকে নিয়মিত মাদকের অর্ডার দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নম্বরগুলো যাচাইয়ের জন্য ফোন নম্বরের রেজিস্ট্রেশন রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট নম্বরগুলো সাফা কবির এবং টয়ার নামেই রেজিস্ট্রেশনকৃত। তবে তানজিন তিশার নম্বরটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে তার মা উম্মে সালমার নামে।
গণমাধ্যমের হাতে আসা কয়েকটি চ্যাটিং রেকর্ডে দেখা যায়, ২৩ এপ্রিল সাফা কবির তার মোবাইল নম্বর থেকে ৩টি এমডিএমএ অর্ডার দেন। এজন্য দীপের হোয়াটসঅ্যাপে তিনি সংক্ষেপে লেখেন ‘ই’ দিতে পারবা আমাকে ৩টা।’ পালটা বার্তায় দীপ লেখেন দাঁড়াও বলি। সাফা লেখেন ‘ওকে’। এরপর দীপ লেখেন কিভাবে নিবা? যাওয়ার পথে? সাফা লেখেন ‘আমি চেষ্টা করব।’
এছাড়া ৫ সেপ্টেম্বর আরেক চ্যাটিংয়ে মাদকের অর্ডার দেন অভিনেত্রী টয়া। তিনিও সাংকেতিক ভাষায় লেখেন ‘ই’ লাগবে ৫টা। ফিরতি বার্তায় দীপ লেখেন ‘ফর বাংলা ফ্রুট?’ (সম্প্রতি কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত প্রাইভেট পার্টি)। এরপর টয়া লেখেন ‘ইয়াপ (ইয়েস)।’
মাদক বিক্রির এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আরও কয়েকজন অভিনেত্রী ও সংগীত শিল্পীর চ্যাটিং পাওয়া যায়। এদের অন্যতম হলেন অভিনেত্রী তানজিন তিশা এবং সংগীত শিল্পী সুনিধি নায়েক। চ্যাটিংয়ে সুনিধি নায়েক কয়েকটি ব্র্যান্ডের এমডিএমের প্যাকেট শেয়ার করে অর্ডার দেন।
নারকোটিক্স বলছে, ভারতীয় নাগরিক সুনিধি নায়েক দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। বাংলাদেশের নামকরা সংগীত শিল্পী এবং কোক স্টুডিওর অন্যতম উদ্যোক্তা শায়ান চৌধুরী ওরফে অর্ণবকে বিয়ে করে তিনি ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তবে সম্প্রতি অর্ণবের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে এমন কথা বিভিন্ন মিডিয়ায় শোনা যায়।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, দীপ গ্রেফতারের পরপরই সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ তাদের মোবাইল ফোন থেকে গোপন চ্যাটিং রেকর্ড মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে তারা পুরোপুরি সফল হননি। গ্রেফতারের পর তাৎক্ষণিকভাবে দীপের মোবাইল ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এতে মাদক কেনাবেচাসংক্রান্ত চ্যাটিং রেকর্ড মুছে ফেলা সম্ভব হয়নি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজধানীর গুলশান এবং বনানীকেন্দ্রিক ধণাঢ্য পরিবারের সন্তানদের অনেকেই এমডিএম, এলএসডি এবং কুশ নামের উচ্চ আসক্তি সম্পন্ন মাদকের দিকে ঝুঁকছে। চোরাইপথে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং থাইল্যান্ডসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ থেকে এসব মাদকের চালান আসছে। স্ল্যাপচ্যাট, মেসেঞ্জার বা হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপে এগুলো বিক্রি করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গোপনীয়তার জন্য বিভিন্ন সাংকেতিক নামে এসব মাদক বিক্রি করা হয়ে থাকে। যেমন এমডিএম ‘ই’ নামে, এলএসডি ‘এসিড’ এবং এক ধরনের তরল গাঁজা টিএসসি নামে কেনাবেচা হয়। ইলেকট্রিক সিগারেটের মতো ভেপ আকারে তরল গাঁজা সেবন করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা গণমাধ্যমকে জানান, এমডিএমএ পরীক্ষাগারে তৈরি এক ধরনের কৃত্রিম ওষুধ। এটি অনেক দেশে এস্টাসি বা সুখানুভূতির মাদক হিসাবে পরিচিত। এটি ইয়াবার উপকরণ মেথাএমফিটামিনের মতোই অতি উত্তেজক মাদক। এটি মানবদেহে এমন একটি শক্তিশালী প্রভাব তৈরি করে যাতে সময় এবং উপলব্ধি জ্ঞানের বিচ্যুতি ঘটে। তবে অনেক সময় এটি শান্তি, আনন্দ, সহানুভূতি এবং এক ধরনের আত্মবিশ্বাসের বর্ধিত অনুভূতি তৈরি করে।