টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
ছবি: সংগৃহীত
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে টাইব্রেকারে ইকুয়েডরকে হারিয়ে কোপার সেমিফাইনালে উঠেছে মেসির আর্জেন্টিনা। ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ ১-১ সমতায় শেষ হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে মেসি পেনাল্টি মিস করলেও বাকি সকলেই জালের দেখা পান। আর ইকুয়েডরের প্রথম দুই ফুটবলার পেনাল্টি মিস করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকার আসরে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট না থাকায় ম্যাচ সরাসরি টাইব্রেকারে গড়ায়। সেখানে প্রথম শটই মিস করেন লিওনেল মেসি। পরের দুই শটই ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মেসির ভুল সামলে নেন তিনি। জমে যাওয়া টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত ৪-২ ব্যবধানে জিতে কোপার সেমিফাইনালে উঠে গেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের প্রথম সেরা সুযোগ পায় ইকুয়েডর। অষ্টম মিনিটে মোয়াসেস কাইসেডো বল নিয়ে আর্জেন্টাইন বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তার শট সোজাসুজি মার্টিনেজের হাতে ধরা পড়ে।
১৫তম মিনিটে আরেকবার আক্রমণে যায় ইকুয়েডর। সারমিয়েন্তোর শট মার্টিনেজ ফিরিয়ে দিলেও বল পড়ে পায়েজের সামনে। তার শট লক্ষ্যে থাকেনি।
ইকুয়েডরের গোল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কিপার। অন্যদিকে আর্জেন্টাইন আক্রমণ গোলকিপারের কাছে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করতে থাকে ইকুয়েডরিয়ান রক্ষণভাগ। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি।
৩৫ মিনিটে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা গোল পায়। মেসির কর্নার থেকে ম্যাক অ্যালিস্টার বল ফ্লিক করে দূরের পোস্টে পাঠান। লিসান্দ্রো মার্টিনেজ হেড করে জাল কাঁপান। ইকুয়েডর কিপার ডোমিঙ্গেজ বল পাঞ্চ করলেও ততক্ষণে গোললাইন পেরিয়ে যায়। আর্জেন্টিনার জার্সিতে লিসান্দ্রোর এটি ছিল প্রথম গোল।
৪১ মিনিটে এঞ্জো ফের্নান্দেজ আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। দূরের পোস্টে নেওয়া তার কোনাকুনি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতি থেকে ফিরে ৫৬ মিনিটে ইকুয়েডরের বক্সের মধ্যে লাউতারো বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নেন। কিন্তু তার দুর্বল শট লক্ষ্যে ছিল না।
পরের মিনিটে ইকুয়েডর পরপর দুটি কর্নার পেরেও কাজে লাগাতে পারেনি। ৫৯ মিনিটে কাইসেডো বক্সের মধ্যে সারমিয়েন্তোকে খুঁজে পেয়ে বল তুলে দেন তার কাছে। কিন্তু লিসান্দ্রো সময়মতো হেড করে বল বিপদমুক্ত করেন।
পরের মিনিটে রদ্রিগো ডি পলের ভুলে পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বক্সের মধ্যে তার হাতে লাগে। ভিএআর চেক করেও একই সিদ্ধান্ত জানান রেফারি।
সহজ সুযোগ পেয়েও ইকুয়েডর সমতা ফেরাতে পারেনি। ৬২ মিনিটে এনার ভ্যালেন্সিয়ার পেনাল্টি শট মার্টিনেজকে ভুল দিকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু বল বাঁ পাশের পোস্টে আঘাত করে তাকে হতাশায় ভাসায়। যদিও কিছুক্ষণের জন্য ইকুয়েডর আশার আলো দেখে, রেফারি ভিএআর চেক করে দেখতে চেয়েছিলেন ভ্যালেন্সিয়া শট নেওয়ার সময় মার্টিনেজের দুটো পা লাইনে ছিল কি না।
বড় বাঁচা বেঁচে গেলেও আর্জেন্টিনা মাত্র এক গোলের লিড নিয়ে বাকি সময় অস্বস্তিতে ছিল। শেষ দিকে ইকুয়েডর চাপ দিয়ে খেলতে থাকে। তাতে ছন্দ হারিয়ে এই টুর্নামেন্টে প্রথম গোল হজম করে আর্জেন্টিনা। ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে ইয়েবোয়াহর চমৎকার ক্রসে রদ্রিগেজের হেডে জালে জড়ায় বল। গোল নিয়ে সংশয় থাকায় রেফারি বেশ সময় নিয়ে ভিএআর চেক করেন। তবে গোল বহাল থাকে।
একেবারে শেষ মুহূর্তে ইকুয়েডরের আরেকটি প্রচেষ্টা ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। বাঁ দিক থেকে রদ্রিগেজের ক্রসে কাইসেডো হেড করলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
নির্ধারিত সময়ে স্কোর ১-১ এ থাকায় ম্যাচ সরাসরি টাইব্রেকারে গড়ায়। প্রথম শটেই মেসি ক্রসবারে আঘাত করেন। অ্যাঞ্জেল মিনার শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে মার্টিনেজ দারুণ সেভ করে আর্জেন্টিনার আশা জাগান। জুলিয়ান আলভারেজের শক্তিশালী শট থামানোর কোনও সুযোগ পাননি ইকুয়েডর কিপার ডোমিঙ্গেজ। আর্জেন্টিনা কিপার ইকুয়েডরের অ্যালেন মিন্দার দ্বিতীয় শটও রুখে দেন ডানদিকে ডাইভ দিয়ে। ম্যাক অ্যালিস্টার ডানপোস্টের ভেতর দিয়ে জাল কাঁপান। তৃতীয় শটে ইয়েবোহার কিকে ইকুয়েডর প্রথমবার লক্ষ্যভেদ করে। গঞ্জালো মন্তিয়েল জাল কাঁপিয়ে আর্জেন্টিনাকে স্বস্তিতে রাখেন।