বৃথা গেল আরিফুলের সেঞ্চুরি
আরিফুল ইসলামের ১০০ রানের ইনিংস সত্ত্বেও বাংলাদেশ দল পেট মোটা করতে পারেনি। ৪৯.২ ওভারে মাত্র ১৭৫ রানে অলআউট হয়। একদিনের ক্রিকেটে এই রান কখনই নিরাপদ নয়। একমাত্র অসাধারণ ভালো বোলিং করলেই জেতা সম্ভব হয়। কিন্তু সেই কাজটি বোলারদের পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। অগত্যা পাকিস্তানের কাছে ৬ উইকেটে হার। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও এই হারে বাংলাদেশকে এখন সপ্তম/অষ্টম স্থানের জন্য লড়তে হবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। খেলা হবে ৩ ফেব্রুয়ারি।
এবারের যুবাদের বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে আগেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। এই বিদায় নেওয়ার মূলেই ছিল ব্যাটিং ব্যর্থতা। শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়েছে ব্যাটিং লাইন। গ্রুপ পর্বে ইংল্যাান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৯৭ রানে অলআউট হয়ে হার মেনেছিল ৭ উইকেটে। পরে ‘এ’ গ্রুপে রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল এই আসরের সর্বাধিক চ্যাম্পিয়ন ভারতকে। সেখানেও ব্যাাটিং ব্যর্থতা। ১১১ রানে অলআউট হয়ে হার মেনেছিল ৫ উইকেটে। সেমিফাইনালেল প্লে অফে পাকিস্তানের বিপক্ষেও ব্যাটিং ব্যর্থতার জাল ছিন্ন করে বের হয়ে আসতে পারেনি। এমনকি আরিফুলের সেঞ্চুরির পরও। এবারের হার ৬ উইকেটে।
অ্যান্টিগার কুলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমেই ২৩ রানে নেই ৩ উইকেট। এরপর ওপেনার ইফতেখারের সঙ্গে জুটি বেঁধে আরিফুল হাল ধরেন। সামাল দেন ধ্বসের। জুটিতে রান আসে ৫০। ২৫ রান করে ইফতেখার আউট হওয়ার পর আবার ধস। এক প্রান্তে শুধু আরিফুল প্রতিরোধ করে যান। অপরপ্রান্তে দেখতে থাকেন সঙ্গীদের আসা-যাওয়া! একমাত্র মেহরাব ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে সঙ্গ দিয়ে ৩৬ রান যোগ করেন। মেহরাব করেন ১৪ রান। সঙ্গীদের ব্যর্থতার মাঝেও আরিফুল ৮১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাদাকাতকে ছক্কা মেরে। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১১৮ বলে। মেহরাব আউট হওয়ার সময় দলের রান ছিল ১১৭। এরপর যে ৫৮ রান যোগ হয়েছে তার ৪৫ রানই ছিল আরিফুলের। সেঞ্চুরি করার পরের বলেই তিনি আওয়াইস আলীর বলে আহমেদ খানের হাতে ধরা পড়ে আউট হন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে। এই আওয়াইস আলীর এক ওভারে আরিফুল তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। তার ১১৯ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি ছক্কা ও ৫টি চার। আরিফুল আউট হওয়ার পর আর এক রান যোগ হতেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায়।
মজার বিষয় হলো এবারে আসরে এটিই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। কিন্তু এই সর্বোচ্চ সংগ্রহ করেও লড়াই করতে পারেনি। যতটা করতে পেরেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৭ ও ভারতের বিপক্ষে ১১১ রান করে শুরুতেই আঘাত হেনে। বাংলাদেশের বোলারদের সে রকম কোনো চাপ তৈরি করার সুযোগ দেননি পাকিস্তানের ওপেনার হাসিবউল্লাহ খান। ১০৭ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কা মেরে ৭৯ রান করে আউট হন রকিবুলের বলে ইফতেখারের হাতে ধরা পড়েন। মোহাম্মদ সেহজাদকে নিয়ে হাসিবউল্লাহ উদ্বোধনী জুটিতে ৭৬ রান এনে দেন। মোহাম্মদ সেহজাদ আউট হয়ে যান ৩৬ রান করে নাঈমুরের বলে মেহরাবের হাতে ধরা পড়ে। দলীয় ১৪০ রানে হাসিবউল্লাহ আউট হওয়ার পরপরই ইরফান খান ২৪ রানে করে রান আউট হন দলীয় ১৪৬ রানে। অধিনায়ক কাসিম আকরামও দ্রুত বিদায় নেন ১ রানে। এতে করে পাকিস্তান কোনো চাপে পড়েনি। বাংলাদেশ তাদের হারের ব্যবধানকে বড় হতে দেয়নি। আব্দুল ফাসিহ (২৪*) ও আব্বাস আলী (৫*) দলকে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করেন ৪৬.৩ ওভারে। রকিবুল হাসান ২৮ রানে নেন ২ উইকেট। নাঈমুর ১ উইকেট নিতে খরচ করেন ৩৩ রান।
এমপি/টিটি