বাংলাদেশের ব্যর্থতার হারে সিরিজ নিশ্চিত করলো পাকিস্তান
১০৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের কাছে ধরাশায়ী হয় বাংলাদেশ
টানা তিন সিরিজ জিতে হারলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা দুই টি-টোয়েন্টি জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ সুরক্ষিত করলো পাকিস্তান।
১০৮ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই হবে না, এটা জানা থাকলেও পাকিস্তানি ব্যাটাররা ঝুঁকি নিতে চাননি। তাই ধীরে-সুস্থে, দেখে-শুনে ব্যাটিং করার দিকেই তারা বেশি মনযোগী ছিলেন। ফলাফল হিসাবে ১০৯ রানের লক্ষ্য ১১ বল হাতে রেখেই উতরে গেলো পাকিস্তান। বাংলাদেশকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিলো বাবর আজমের দল। শেষ ম্যাচটি এখন পরিণত হয়েছে কেবলই আনুষ্ঠানিকতায়।
শনিবার (২০ নভেম্বর) টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। বিব্রতকর, হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৮ রান করে বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান। অপরাজিত ছিলেন ফখর জামান ৫৭ ও হায়দার আলী ৬ রান করে।
শুরুতে বাবর আজমকে ফেরালেও এরপর বল হাতে কার্যত আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে এত কম রান নিয়ে বোলারদের জন্যও লড়াই করা দুষ্কর। মোস্তাফিজুর রহমান-তাসকিনরাও পারেননি। বাবর ফেরার পর ফখর-মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটিতে জয়ের ভিত পেয়ে যায় পাকিস্তান। অবশ্য আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে ২৬ রানের সময় সাইফ হাসানের হাতে জীবন পেয়েছিলেন ফখর। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৮৫ রান। রয়ে-সয়ে খেলে রিজওয়ান থামেন ৪৫ বলে ৩৯ রান করে। ৩৯ রানের সময় রিজওয়ানেরও ক্যাচ মিস হয়েছিল, এবার হাত ফসকেছে তাসকিন আহমেদের। ২৬ রানে জীবন পাওয়া ফখর অপরাজিত ছিলেন ৫১ বলে ৫৭ রান করে। ইনিংসটি সাজানো ছিল ২টি চার ও ৩টি ছয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটি তার সপ্তম অর্ধশতক। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মোস্তাফিজ ও বিপ্লব।
ইনিংসে তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বল করতে আসেন মোস্তাফিজ। তার লেন্থ বলটিকে খেলতে যান বাবর আজম। কিন্তু ভেতরের কানায় লাগিয়ে বলটিকে টেনে নেন স্ট্যাম্পে। বোল্ড হযে গেলেন তিনি মাত্র ১ রানে। বল খেলেছেন তিনি ৫টি।
আগের ম্যাচেও একইভাবে বোল্ড হয়েছিলেন বাবর আজম। ওই ম্যাচে তাসকিন আহমেদের একই ধরনের একটি বল খেলতে গিয়ে নিজের স্ট্যাম্পে টেনে আনেন বাবর।
দলীয় ৯৭ রানরে মাথায় লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে সাইফ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪৫ বল খেলে ৩৯ রান করেন তিনি। ৪টি মারেন বাউন্ডারির মার।
ফাখর জামান ছিলেন দুর্বোধ্য। ৫১ বল খেলে তিনি করেন ৫৭ রান। মূলতঃ মোহাম্মদ রিজওয়ান আর ফাখর জামানের ব্যাটিং দেখলেই বোঝা যায়, কতটা রয়েসয়ে ব্যাটিং করে গেছেন তারা। ৮৫ রানের জুটি গড়েছেন তারা ৭৮ বলে। টি-টোয়েন্টিতে রীতিমত অবিশ্বাস্য স্লো ব্যাটিং।
কিন্তু ১০৯ রান তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা অহেতুক তাড়াহুড়ো করেননি এবং উইকেট হারাননি। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ উইকেটের পতন ঘটাতে ব্যবহার করেন ৮জন বোলার। আগের ম্যাচে অধিনায়ক বোলিং করাননি লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দিয়ে। যার কারণে তুমুল সমালোচনার শিকার হন তিনি।
ফলে, আজ মেহেদী হাসান আর তাসকিন আহমেদের পর আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দিয়েই পূর্ণ ৪ ওভার বোলিং করালেন। বিপ্লব রান দিয়েছেন ৩০টি। সবচেয়ে বেশি ইকনোমি রেটে (৭.৫০)। উইকেট নিয়েছেন ১টি।
আফিফ হোসেন ধ্রুব, নাজমুল হোসেন শান্ত এমনকি সাইফ হাসানকে দিয়েও বোলিং করালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে মোস্তাফিজক একজন সমর্থক এসে জড়িয়ে ধরার কারণে ১৪তম ওভারের একটি বল করে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। যে কারণে অসম্পূর্ণ ওভারের বাকি ৫ বল করেন শরিফুল ইসলাস।
সাইফ হাসান ১৯তম ওভারে বল করতে আসেন এবং একটি বল করার পরই পাকিস্তান জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। মাহমুদউল্লাহ নিজে বোলিং করলে, বোলার হয়ে যেতো ৯ জন।
/এএস