টি-টোয়েন্টিতে তামিমের অনুপস্থিতি ২৮ মাস!
তামিম ইকবাল আগামী ৬ মাস টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট না খেলার সিন্ধান্ত নিয়েছেন। এ সময় তিনি টেস্ট ও ওয়ানডে ম্যাচ নিয়ে ভাববেন। তিনি আবার ওয়ান ডে ক্রিকেটের অধিনায়কও। তামিম ইকবাল এমন এক সময় এই সিন্ধান্ত নিয়েছেন, যখন এ বছরই অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
যদিও তিনি গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেট থেকে নিজেকে স্বেচ্ছায় সরিয়ে নিয়েছিলেন। তামিম ইকবাল যে ছয় মাস টি-টোয়েন্টি ম্যাচ না খেলার সিন্ধান্ত নিয়েছেন, তা কিন্তু ছয় মাসেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। কারণ এটি বেড়ে গিয়ে হবে ২৮ মাস। তামিমের কথার পরিপ্রেক্ষিতেই ছয় মাস যদি ফেব্রুয়ারি থেকে ধরা হয়, তা হলে জুলাই পর্যন্ত তিনি খেলবেন না। কিন্তু তিনি জাতীয়ে দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছেন না ২০২০ সালের ৯ মার্চের পর থেকে। সে দিনই মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরেজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে করেছিলেন ৩৩ বলে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৪১ রান। এরপর থেকে তিনি টি-টোয়েন্টির ময়দানে অনুপস্থিত। এ সময় বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে ২৮টি। জয় পেয়েছে ১২টিতে। যার সাতটিই ছিল ঘরের মাঠে কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়া জয়।
নিজের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে এভাবে ‘বিরতি’ দেয়া নিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘ অনেক ক্রিকেটারই টি-টোয়েন্টি আগে ছেড়েছেন। বড় বড় ক্রিকেটাররাও করেছেন। ওয়ানডে আমাদের সবচেয়ে প্রিয় ফরম্যাট। আমিও খুব উপভোগ করি। টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা ফরম্যাট, যখন থেকে ক্রিকেটের ব্যাট ধরা শুর করেছি, তখন দুইটা ইচ্ছে ছিল। এক হচ্ছে বাংলাদেশের হয়ে খেলবো এবং টেস্ট খেলবো। হয়তো এই ফরম্যাটে আমরা খুব শক্তিশালী দল না। কিন্তু এখানে একটা সেঞ্চুরি বা ফিফটি করা, এটার ভেল্যু অন্যরকম। টেস্ট আমি যতদিন সম্ভব খেলে যেতে চাই। আমার বয়স ৩৩। ৩৪/৩৫ এ অনেকের অভিষেক হয়। তারা আরও পাঁচ বছর খেলে। আমার এখনও চার-পাঁচ বছর আছে ভালো ক্রিকেট খেলার। আমার পারফরম্যান্স ও ফিটনেস ঠিক থাকলে আরও চার পাঁচ বছর খেলবো।’
তামিম আরো কয়েক বছর আর্ন্তজাতিক অঙ্গণে বিচরন করার কথা জানালেও তিনি চান নতুনদের সুযোগ করে দিতে। তাদের উঠে আসার রাস্তা মসৃন করে রাখতে। তিনি বলেন, ‘ শেষ সিরিজেও তরুণদের সুযোগ দেয়া হয়েছে। ওদেরও যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া দরকার। এক/দুই সিরিজে আস্থা হারালে সেটা ভুল। ছয় মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত আমার আর দরকার হবে না। তারপরও বললাম বিশ্বকাপের আগে বোর্ড বা আমি মনে করলে ফিরব। তবে এই মুহূর্তে এটা নিয়ে ভাবছি না।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার খেলার ধরন নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে তামিম ইকবাল বলেন, ‘ সত্যি কথা মাঠের বাইরে কী আলোচনা হচ্ছে, এটা নিয়ে ভাবলে খেলাটা কঠিন হয়ে যাবে। আমি কী করেছি, কী করি নাই এটা নতুন কিছু না। আমি খোলা বইয়ের মতো। আমি এত কিছু ভাবি না। আমার কাছে যেটা বললাম সবচেয়ে প্রায়োরেটি টেস্ট ও ওয়ানডে। ওখানেই পুরো ফোকসটা দিতে চাই।’
জাতীয় দলের হয়ে তামিম ইকবাল এখন পর্যন্ত ৭৮টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ১৭৫৮ । সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৩ রান। করেছিলেন ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রাথমিক রাউন্ডে ভারতের ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে। হাফ সেঞ্চুরি ৭টি। তার গড় ২৪.০৪, স্ট্রাইক রেট ১১৬.৯৬। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সংখ্যা ২৩৩টি। রান করেছেন ৬৫৪৮। সেঞ্চুরি আছে ৩টি। হাফ সেঞ্চুরি ৪২টি।
এমপি/