২য় ইনিংসে ভরাডুবি, কিউইদের ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ
কিউইদের ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত
মিরপুর টেস্টের ভাগ্যটা তেমন ভালো না। প্রথম দিন নির্বিঘ্নে খেলা হলেও দ্বিতীয় দিনের পুরোটা ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। তৃতীয় দিন খেলা হলেও নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা ৭ মিনিট আগে আলোস্বল্পতায় খেলা বন্ধ করে দেন মাঠের দুই আম্পায়ার পল রেইফের ও রড টাকার।
তৃতীয় দিন শেষে ৩০ রানে এগিয়ে গেছে টাইগাররা। তবে আজ চতুর্থ দিন শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ব্যাটারদের উপর রীতিমত ছড়ি ঘুরিয়েছেন দুই নিউজিল্যান্ডের স্পিনার এজাজ প্যাটেল এবং মিচেল স্যান্টনার। মিরপুরের পিচ, দুই কিউই পেসারের দক্ষতা আর সেইসঙ্গে বাংলাদেশি ব্যাটারদের ক্রমাগত ভুল, তিনে মিলে ২য় ইনিংসে বলতে গেলে ভরাডুবিই হয়েছে বাংলাদেশের।
সবকটি উইকেট হারিয়ে করেছে ১৪৪ রান। ঢাকা টেস্ট জিততে কিউইদের লক্ষ্য ১৩৭। পিচের অবস্থা আর টাইগার স্পিনারদের সুবাদে এতে খানিক আশা নিশ্চিতভাবেই দেখতে চাইবেন টাইগার ভক্তরা। অবশ্য এরপরেও কিছুটা আক্ষেপ থাকা মোটেই অস্বাভাবিক না।
৪র্থ দিনে ধীরগতির শুরুতে আশার আলোটা উজ্জ্বল করেছিলে মুমিনুল হক আর জাকির হাসান। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৩৩ রান। সেটাই বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় সকালে।
এদিকে দিনের প্রথম আঘাত হানেন এজাজ প্যাটেল। তার বলেই লেগ বিফোর হয়ে মুমিনুল আউট হয়েছেন ১০ রান করে। এজাজের বলে পুল করতে চেয়েছিলেন কিনা নিশ্চিত ছিলেন না মুমিনুল নিজেও। ভাল একটা পার্টনারশিপ মুমিনুল বিসর্জন দিয়েছেন লেগবিফোর হয়ে। ৭১ রানে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট।
মুশফিকুর রহিম আউট হয়েছেন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন কিনা নিজেই হয়ত সন্দিহান। স্যান্টনারের ভেতরের দিকে ঢোকা বলটা বুঝে ওঠা হয়নি তার। বলের বাড়তি বাউন্সটা বুঝতে তালগোল পাকিয়েছেন। ছাড়বেন কি খেলবেন বুঝতেই সময় পার করেছেন। স্লিপে ক্যাচ নিতে সমস্যাই হয়নি ড্যারিল মিচেলের।
এদিকে নবীন শাহাদাত দিপু লাইন বুঝতে ভুল করেছেন কিছুটা। ব্যাটে বলে হয়নি তার। লেগবিফোরে কাঁটা পড়েছেন এই ব্যাটার। স্কোরবোর্ডে ৮৮ রানে ৫ উইকেট।
মেহেদি হাসান মিরাজ কেন চাপের সময়ে অমন শট খেলতে চেয়েছেন, সেটাও প্রশ্ন করা যেতেই পারে। টপ এজড হয়ে মিচেল স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। অথচ, দলের এমন বিপর্যয়ে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের কাছ থেকে প্রত্যাশা ছিল, আরও খানিকটা বড় ইনিংস। তবে, মিরাজ ব্যর্থ হয়েছেন, দলেরও বিপদ বাড়িয়েছেন।
নুরুল হাসান সোহান খেলতে চেয়েছেন টি-টোয়েন্টি মেজাজে। ফ্রন্টফুট অনেকটা সামনে নিয়ে পেছনে খেলার ভাবনা ছিল তার। পুরো প্ল্যানটাই ছিল অহেতুক। আর ফলাফলও দিয়েছেন হাতেনাতে। ৩ বল খেলে ডাক মেরে ফিরেছেন ক্রিজে।
আর আসা-যাওয়ার এই পুরো মিছিল অপরপাশ থেকে ধৈর্য্য নিয়ে দেখেছেন ওপেনার জাকির হাসান। এমন সময়েও মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন অনেকটা সময়। করেছেন ফিফটিও। এরপরেই বড় শট খেলতে চেয়েছেন। তবে সেটা খুব বেশি কাজে দেয়নি। ৮৬ বলে ৫৯ রান করে শেষ হয় তার কার্যকরী ইনিংসটি।
মাঝে ১৯ বলে ৯ রান করা নাইম বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে লিড ১০০ পার করতে। আর তাইজুল-শরীফুলরা সেটাকে টেনে নিয়েছেন ১৩৬ পর্যন্ত। দলীয় ১৪৪ রানে শরীফুল আউট হলে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোরার ৫৯ করা জাকির। আর কিউইদের মধ্যে বল হাতে এজাজ প্যাটেল একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট। ৩ উইকেট গিয়েছে স্যান্টনারের ভাগ্যে। আর টিম সাউদি তুলে নিয়েছেন একটি উইকেট।