মাশরাফি খেললেও সিলেটের সঙ্গে পারেনি ঢাকা
প্রথম ম্যাচে সেই লো-স্কোরিং। তবে এবার আর কঠিন লড়াই হয়নি। সিলেট সানরাইজার্স ৭ উইকেটে সহজ জয় পেয়েছে। মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার করা ১০০ রান সিলেট সানরাইজার্স অতিক্রম করে ১৭ ওভারে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে। চার ম্যাচে ঢাকার তৃতীয় পরাজয়। বিপরীতে সিলেটের দুই ম্যাচে ছিল প্রথম জয়।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চতুর্থ দিনের প্রথম ম্যাচও যথারীতি বিতর্ক এড়াতে পারেনি। রান খরা থেকেই গেছে। এবারও আগে ব্যাট করা দল অল্পতেই অলআউট হয়ে গেছে। জয়ী হয়েছে পরে ব্যাট করা দল। চারদিনই জয়ী হয়েছে পরে ব্যাট করা দল। আগের জয়গুলো ছিল কঠিন লড়াইয়ের পর। যে কারনে জয়ের ব্যবধানও ছিল কম। যথাক্রমে ৪ উইকেটে, ২ উইকেটে ও ৪ উইকেটে।
মঙ্গলবারের ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়াতে সিেেলটর জয় এসেছে বড় ব্যবধানে, ৭ উইকেটে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রিত হয়ে তারকা সমৃদ্ধ ঢাকার ব্যাটসম্যানরা নিজেদের মেলেই ধরতে পারেননি। সিলেটের স্পিন আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। প্রথম ওভার সরাসরি সাইনিং করে নেয়া পেসার তাসকিন আহমেদ করেছিলেন। তিনি ৯ রান দেয়াতে পরে আর তাকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন দলপতি মোসাদ্দেক। এরপর শুরু হয় স্পিন ভেল্কি। সোহাগ গাজী অপরপ্রান্ত থেকে আক্রমণ শুরু করলেও তাসকিনের চেঞ্জিং বোলার হিসেবে বল হাতে তুলে নেন দলপতি নিজেই। ব্যস এতেই কাবু হয়ে পড়ে ঢাকা। উইকেট পড়তে থাকে। রান সংগ্রহে নেমে আসে স্থবিরতা। দুই জনে টানা ৮ ওভার বোলিং করে নিজেদের স্পেল শেষ করে দেন।
উইকেট পড়ে তিনটি। রান উঠে ৯ ওভার শেষে মাত্র ৩৯। যেখানে আবার তাসকিনের প্রথম ওভারে ছিল ৯ রান। এই ৯ রান বাদ দিলে মোসাদ্দেক-সোহাগ গাজীর ৮ ওভারে রান সংগ্রহ হয় মাত্র ৩০ রান। সোহাগ গাজী মোহাম্মদ শাহজাদ (৫) ও জহুরুল ইসলামকে (৪) এবং মোসাদ্দেক তামিম ইকবালকে (৩) ফিরিয়ে দেন । প্রথম দুই ম্যাচে টানা ফিফটি করার পর তামিম ইকবাল টানা দুই ম্যাচে রান করতে ব্যর্থ হলেন। স্পিন সফল হওয়ার পর দলপতি মোসাদ্দেক পরবর্তীতে আক্রমণে নিয়ে আসেন নাজমুল ইসলাম অপু ও অলোক কাপালির পরিবর্তে খেলার সুযোগ পাওয়া সানজামুল ইসলামকে। সানজামুল বেগ দিতে না পারলেও নাজমুল ছিলেন আরও ভয়ংকর। তিনি ৪ ওভার বোলিং করে ১৮ রানে গুড়িয়ে দেন মিডল অর্ডার। তুলে নেন ৪ উইকেট। হন ম্যাচ সেরা। তার শিকারও ছিল বেশ বড় বড়। মোহাম্মদ নাঈম (১৫), মাহমুদউল্রাহ ( ৩৩), আন্দ্রে রাসেলের (০) মতো ভযংকর ব্যাটসম্যান ও শুভাগত হোম (২১)।
শেষ তিন ব্যাটসম্যান ছিলেন ঢাকার আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক। নাজমুল ও সানজামুল আক্রমণে আসার আগে মোসাদ্দেক পেসার মোক্তার আলীকে আক্রমণে এনেছিলেন। তিনি ২ ওভারে ১২ রান দেয়ার পর তাকে দিয়ে পরে আর বোালিং করানো হয়নি। প্রথম ওভারে তাসকিন সুবিধা করতে না পারলেও পরে আবার আক্রমণে এসে ঢাকার লেজ কেটে দেন শেষ ৩ উইকেট নিয়ে। তার প্রথম শিকার ছিলেন আবার ক্রিকেটে ফেরা মাশরাফি (২), রুবেল হোসেন (১২) ও হাসান মুরাদ (০)। ফলে ঢাকা ২০ ওভারও খেলতে পারেনি। ১৮.৪ ওভারে দলীয় রান সেঞ্চুরি হওয়ার পরই অলআউট হয়ে যায়। তাসিকন ২২ রানে নেন ৩ উইকটে। সোহাগ গাজী ২ উইকেট নিতে খরচ করেন ১৭ রান। মোসাদ্দেক ১২ রানে নেন ১ উইকেট। নাজমুল-মোসাদ্দেক-সোহাগ তিন ৪ ওভারে কোটা পূরণ করে ১২ ওভারে রান দেন সর্বমোট ৪৭। উইকেট নেন ৭টি। তিনজনে মিলে ডট বল দেন ৪৩টি। এই তিন বোলার মিলেই কিন্তু কুমিল্লার বিপক্ষে ৯৬ রানের পুঁজি নিয়েও ম্যাচকে জমিয়ে তুলেছিলেন।
জিততে হলে করতে হবে ১০১ রান। আগের ম্যাচে সিলেটের ব্যাটিং ব্যর্থতা থাকায় এবং দিনের প্রথম ম্যাচ হওয়াতে লড়াইয়ের আভাস ছিল। কিন্তু সেই লড়াইয়ের আভাস বাতাসে ভাসিয়ে দেন সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। প্রথমবারের মতো খেলতে নামা লিন্ডলে সিমন্স ও এনামুল হক বিজয় মজবুত সূচনার চেষ্টা করেন। দলীয় ২১ রানে জুটি বিদায় নেয়ার সময় সিমন্সের রানই ছিল ১৬। তাকে ফিরিয়ে দেন আবার ২২ গজে ফেরা নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফি।
এরপর বিজয় ও মোহাম্মদ মিঠুন মিলে দলকে বড় জয়ের পথ দেখিয়ে দেন জুটিতে ৩৮ রান যোগ করে। মিঠুন ১৫ বলে ১৭ রান করে ফিরে যান। তাকে আউট করেন হাসান মুৃরাদ। মিঠুন ফিরে যাওয়ার পর বিজয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধেন কলিন ইনগ্রাম। আগের ম্যচে তিনি ওপেন করেছিলেন। সিমন্স আসাতে জায়গা ছেড়ে দিয়ে চারে নেমে আসেন। বিজয়ের সঙ্গে জুটিতে তিনি যোগ করেন ৪০ রান। দল যখন বিজয়েরর দ্বারপ্রান্তে, তখনই আউট হয়ে যান ম্যাচের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী বিজয়। তিনি ৪৫ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৫ রান করে আউট হন মাশরাফির বলে। জয় সূচক রান আসে রবি বোপারার ব্যাট থেকে। কলিন ইনগ্রাম ১৯ বলে ১টি ক রে চার ও ছয় মেরে ২১ ও বোপাার ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
এমপি/এমএমএ/