প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শীর্ষে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা মিলে আয়োজিত ২০২৬ ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের এখনো তিন বছর বাকি থাকলেও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব শুরু হয়ে গেছে। রাউন্ড রবিন সিস্টেমের বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডের খেলায় মাঠে নেমেছিল ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা। ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের মাথায় নিকোলাস ওতামেন্দির গোলে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দলটি।
চোট কাটিয়ে ফেরা লিওনেল মেসি ছিলেন না শুরুর একাদশে। তাতে অবশ্য খুব একটা সমস্যা হয়নি আর্জেন্টিনার। এরপর আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ধার কমলেও পয়েন্টে ভাগ বসাতে পারেনি প্যারাগুয়ে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বুয়েন্স আয়ার্সের এস্তাদিও মাস মনুমেন্তালে বাংলাদেশ সময় ভোর পাঁচটায় প্যারাগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন নিকোলাস ওতামেন্দি। এদিন শুরুর একাদশে না থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেছিলেন লিওনেল মেসি। তবে গোলবারের বাধায় দারুণ দুটি গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এ তারকা।
এই ম্যাচে প্রতিপক্ষের ওপর দাপট দেখিয়ে খেলেছে আর্জেন্টিনা। ৭৫ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল আকাশী-নীলরা। প্রতিপক্ষের লক্ষ্য বরাবর ছিল ৪টি শট। অন্যদিকে ২৫ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল প্যারাগুয়ে। আর্জেন্টিনার লক্ষ্য বরাবর তাদের শট ছিল ১ টি। দাপট দেখিয়ে খেললেও আর্জেন্টিনা দিতে পেরেছে ১ গোল। তাতে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ৩ ম্যাচের ৩ টিতে জিতে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে এখন ২০২২ বিশ্বকাপজয়ী দল।
ম্যাচ শুরুর তৃতীয় মিনিটেই গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। কর্নার থেকে রদ্রিগো ডি পলের ক্রস ডি-বক্সে দখলে নেন ওতামেন্দি। প্যারাগুয়ের ডিফেন্ডাররা তাকে বাধা দেয়ার আগেই জোরালো শটে তিনি বল জালে জড়ান। কোনো সুযোগই পাননি প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক কার্লোস।
বিরতিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত একের পর এক আক্রমণ শাণিয়েছে স্ক্যালোনির শিষ্যরা। ২৬ তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন লাওতারো মার্টিনেজ। বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়লেও প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বাধায় শটে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। গতি কম থাকায় বল সহজের গ্লাভসবন্দি করে নেন কার্লোস।
দুই মিনিট পর লাওতারো আরও একটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন। এবার জোরালো শট নিলেও সেটা এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। বাকি সময়টায় একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে প্যারাগুয়ের জাল অক্ষত রাখেন কার্লোস। বিরতির আগে দলের লিড দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন নিকোলাস গঞ্জালেজ। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। ডি-বক্সের ডান প্রান্ত থেকে নেয়া তার নিচু শটটি বাম প্রান্তের বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যেতে হয় আলবিসেলেস্তেদের।
বিরতির পর জুলিয়ান আলভারেজের বদলি হয়ে মাঠে নামেন মেসি। তাতে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা। তবে মেসি কিংবা লাওতারো মার্টিনেজকে খুব একটা সুযোগ দেয়নি প্যারাগুয়ের রক্ষণভাগ। তবে মেসিকে কি তাতে আটকে রাখা যায়! ৭২ মিনিটে দুর্দান্ত এক কর্নারে একাই গোল দিয়ে দিচ্ছিলেন তবে বারপোস্টের কল্যাণে প্যারাগুয়ে রক্ষা পায়। যোগ করা সময়ে প্রায় মাঝমাঠ থেকে একাই বল টেনে প্রতিপক্ষের রক্ষণ দুর্গে ঢোকার চেষ্টা করেন মেসি। তবে ডি-বক্সে ঢোকার আগেই প্যারাগুয়ের ডিফেন্ডাররা তাকে ফাউল করে বসে। প্রায় ২০ মিটার দূরত্ব থেকে ফ্রি-কিক নেন মেসি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার শটটি সাইড বারে লেগে বেরিয়ে যায়।
শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধে পাওয়া সে ১-০ গোলের লিড নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আর্জেন্টিনাকে। এর আগে ইকুয়েডর ও বলিভিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তাতে কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে টানা ৩ জয়ের তাদের পয়েন্ট এখন ৯।
